শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

হবিগঞ্জে বাপার মানববন্ধন ও পথসভা

হবিগঞ্জে বাপার মানববন্ধন ও পথসভা

হবিগঞ্জ, ১৪ এপ্রিল, এবিনিউজ: আজ সকাল ১০টায় বাংলা নতুন বছর ১৪২৫কে স্বাগত জানিয়ে হবিগঞ্জের শিরিষতলায় মানববন্ধন ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। “নববর্ষে বাজে নতুন দিনের গান, নদী বয়ে যাক অবিরত, বাংলাদেশের প্রাণ” স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার আয়োজিত ‘হবিগঞ্জের ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়া সকল নদী খনন ও পুনরুদ্ধার’ এর দাবিতে কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাপা হবিগঞ্জের সভাপতি অধ্যাপক মো. ইকরামুল ওয়াদুদ।

এতে বক্তারা বলেন বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। সারাদেশে জালের মতো বিস্তৃত ছিল অসংখ্য নদনদী। আজ থেকে ৫০/৬০ বছর আগেও প্রায় ১২শ ৫০টি নদী ছিল এই দেশে। দিনে দিনে তা কমে এসে প্রায় ৩শ টিতে দাঁড়িয়েছে। সময়ের ধারাবাহিকতায় হারিয়ে গেছে অনেক নদী। আরও অনেক নদী বিলিন প্রায়। নদীর এ ক্রমবিলুপ্তির কারণ প্রকৃতির উপর মানুষের অযাচিত হস্তক্ষেপ। একসময় হবিগঞ্জের উপর দিয়েও প্রবাহিত হত প্রায় ৫০টি নদনদী। এখন এর অর্ধেকও খুঁজে পাওয়া যায়না। মানুষের অদূরদর্শিতার কারণে দিন দিন মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছে অনেক নদনদী।

তাই সময় এসেছে দেশের প্রাণপ্রবাহরূপী এসব নদনদীকে রক্ষায় আন্দোলন গড়ে তোলার। মূল বক্তব্য রাখেন খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার ও বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল। এসময় উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক জাহান আরা খাতুন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর সহযোগী অধ্যাপক জহিরুল হক শাকিল, বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক ডাঃ জমির আলী, চিত্রশিল্পি আলাউদ্দিন আহমেদ, বাপা হবিগঞ্জের সহ-সভাপতি তাহমিনা বেগম গিনি, ক্রীড়া সংগঠক হুমায়ূন খান, সাংবাদিক ফেরদৌস করিম আকঞ্জী, রোটারী ডিস্টিক্ট এর ডেপুটি গর্ভনর ডাঃ এস এস আল-আমিন সুমন,

রোটারী ক্লাব অব হবিগঞ্জ খোয়াই এর প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আব্দুল বাকি মোঃ ইকবাল, সাংবাদিক প্রদীপ দাস, শাকিল চৌধুরী, রোটারিয়ান দিবাকর পাল, সাংস্কৃতিক সংগঠক ওসমান গনি রুমি, এম রাকিবুল ইসলাম, পরিবেশ কর্মী আমিনুল ইসলাম, সংস্কৃতিকর্মী সীমান্ত দেব তুর্য, ইফতেকার ফাগুণ, জারিন তাসলিম, অপু চৌধুরীসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সংগঠক ও কর্মীবৃন্দ।

খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল বলেন, উজানে ভারত সরকার কর্তৃক পানি সীমিতকরণ, দেশের অভ্যন্তরে নদী দখল, নদী দূষণ, পলি পতন, নদী-ভাঙ্গনে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। রাষ্ট্রীয়, প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে দখল-ভরাট, স্থাপনা নির্মাণ এর ফলে নদীর নাব্যতা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে, অনেকগুলো নদী শুকিয়ে মৃতপ্রায় এবং অনেক নদী হারিয়ে গেছে। নদী দখল-দূষণ এবং হারিয়ে যাওয়ার ফলে নদী তীরবর্তী জন-মানুষের জীবন-জীবিকায় টানাপোড়ন, ব্যাপক খাদ্য-পানীয় সমস্যা, পানিবাহিত নানাবিধ রোগসহ, জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা চলমান। এসবের দীর্ঘ মেয়াদী ফল ভোগ করবে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উভয় প্রজন্ম।

তিনি আরও বলেন, দখল-দূষণে সকল নদীই আজ বিপর্যস্ত, সৌন্দর্যহীন, অর্ধমৃত বা প্রায় মৃত হয়ে পড়েছে। নদীর উপর ক্রমাগত অসংযত আচরণ ও অত্যাচারের মহোৎসবে কিছু মানুষ লাভবান হলেও স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে যাচ্ছে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী। তাই পরিবেশ-প্রতিবেশ এর প্রতি লক্ষ্য রেখে ভয়াট ও দখল-দূষণ হয়ে যাওয়া সকল নদী পুনরুদ্ধার করে খনন, সচল এবং স্বাভাবিক গতিতে প্রবাহিত করতে হবে। আর তা নাহলে নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদী বিপর্যয় অবধারিতভাবেই সার্বিক পরিবেশ-প্রতিবেশ,স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সূত্রপাত করবে।

এর আগে ব্যানার উল্লেখিত হবিগঞ্জ জেলায় একসময় প্রবাহিত হওয়া প্রায় অর্ধশতাধিক নদীর নাম দেখে কর্মসুচীর প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করে অনেকেই অংশগ্রহণ করেন।

এবিএন/নুরুজ্জামান ভূইয়া/জসিম/তোহা

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত