![বগুড়ার শেরপুরে চড়ক উৎসব অনুষ্ঠিত:হাজারও ভক্তের সমাগম](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/15/abnews-24_135260.jpg)
শেরপুর (বগুড়া), ১৫ এপ্রিল, এবিনিউজ: বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনা ও আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হলো হিন্দু ধর্মাবম্বলীদের চৈত্র সংক্রান্তির অন্যতম চড়ক উৎসব গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বগুড়ার শেরপুরের কয়েকটি স্থানে আয়োজন করা হয়। যুগ যুগ ধরে এ উৎসবটি পালিত হয়ে আসছে।
এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। জীর্ণশীর্ণ পুরাতন বছরকে বিদায় জানাতে গত শনিবার বগুড়ার শেরপুর পৌরশহরের গোসাইকাচারি, টাউন বারোয়ারী সান্যালবাড়ী মাঠ ও পৌর শিশু পার্ক প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছিলো এই চড়ক উৎসবের। তবে উৎসবটি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হওয়ায় হাজার হাজার উৎসুক জনগন মেলা প্রাঙ্গনগুলোতে উপস্থিত হয়েছিল।
চড়ক পূজায় যেভাবে এই ভয়ঙ্কর এ খেলায় মেতে ওঠে চড়ক সন্যাসীরা। চৈত্র সংক্রান্তির শেষ বিকেল বেশ বড় আকারের গর্ত খোড়া হয় মাঠের মাঝখানে। তার মধ্যে খোঁড়া হয় আরেকটি গর্ত। সেটা চড়ক গাছের গোড়ার মাপে করা হয়। তারমধ্যে প্রায় ২৫ ফুটের উচ্চতার গাছটি পুতে ওপর দিক বরাবর খাঁড়া করা হয়। মাটিতে পুতে নেয়ার আগে গাছটিকে দুধে ধুয়ে নেওয়া হয়। মাখানো হয় প্রয়োজন মত ঘি ও পাকা কলা। পাশাপাশি চলতে থাকে তন্ত্রমন্ত্র। সঙ্গে সেই লম্বা আকৃতির গাছের ওপর বসানো হয় আরেকটি কাঠ। যা গ্রামীন কেকড়ি নামে পরিচিত।
সেই কেকড়ির ও বাশের সাথে মাথায় লম্বা দড়ি লাগিয়ে দেয়া হয়। তারপর চড়ক পূজা উৎসবের মূল পর্বে জ্যান্ত মানুষের পিঠের চামড়ায় দুটো বড় মাপের বড়শি ফুটিয়ে দিয়ে ওই গাছের উপরে লাগানো দড়িতে ঝুলিয়ে দিয়ে অন্য প্রান্তের কয়েকজন মানুষ টেনে নিয়ে ঘুরাতে থাকেন। আর বড়শি বিঁধানো সন্যাসী শুন্যের উপরে কখনও হাততালি, কখন বাতাসা ছিটায় আবার কেউ কেউ ঢাঁক বাজিয়ে উপস্থিত দর্শনার্থীদের আনন্দ দিয়ে থাকে। এরপর বড়শীতে বিঁধা সন্ন্যাসীরা মাটিতে নেমে উপস্থিত দর্শক ভক্তদের কাছ থেকে অনুদান আদায় করে থাকে।
তবে এই চড়ক খেলাটি ভয়ংকর হলেও প্রতি বছর চড়ক সন্যাসীরা চৈত্রে শেষ সপ্তাহে এ অনুষ্ঠান কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে নানারকম রং ঢং, সং তামাশা ও কৌতুক করেও আনন্দ দিয়ে থাকেন এবং এ পূজার সমাপ্তি ঘটায়। এ প্রসঙ্গে টাউন বারোয়ারী চড়ক পূজার সন্যাসী কানু দাশ, বিরেন দাস, নান্নু দাস বৃন্দাবনপাড়ার মন্টু মোহন্ত, চেতন রাজবংশী বলেন, চৈত্র সংক্রান্তি উদযাপনের লক্ষে হাজার বছর ধরে এ সংস্কৃতি উৎসব বাঙালীরা করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় এবারও এ পুজার আয়োজন করে উৎসব পালন ও নববর্ষকে বরণ করছি।
এবিএন/শহিদুল ইসলাম শাওন/জসিম/তোহা