চট্টগ্রাম, ১৭ এপ্রিল, এবিনিউজ : চট্টগ্রামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ভুয়া প্রশ্নপত্র ও ফল পরিবর্তনের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রতারক গ্রুপ।
র্যাবের কাছে অভিযোগ রয়েছে সংঘবদ্ধ চক্রটি প্রতি বছরই এসএসসি, এইচএসসি, সরকারী-বেসরকারী চাকুরীতে নিয়োগ, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সুকৌশলে ফাঁস করে চাকুরী প্রার্থী ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে শর্তসাপেক্ষে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়। এই সংঘবদ্ধ চক্রটিকে আইনের আওতায় আনয়নের লক্ষ্যে র্যাব-৭ এর একটি বিশেষ টিম গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে।
গতকাল সোমবার দিনগত রাতে গোপন তথ্যে বিশেষ নজরদারির পর এ গ্রুপের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব। এসময় তাদের কাছ থেকে চলমান এইচএসসি পরীক্ষা-২০১৮ এর প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজে ব্যবহৃত ০৬ টি মোবাইল সেট এবং ১২ টি সীম কার্ড উদ্ধার করা হয়। চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার থানাধীন মেহেদী বাগস্থ, দামপাড়া ১নং গলির মোক্তার হোসেনের নসুয়া ভবন নিচ তলা থেকে এদুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত দুই প্রতারক হলেন নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরি কৃষ্ণপুর আবিদ মাষ্টারের বাড়ীর আব্দুল হামিদ মিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহ ফাহিম (১৯) ও চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী বৈলগাঁও দক্ষিণ পাড়ার মো. আহম্মদ ছফার ছেলে মো. আফজাল (২১)।
র্যাব ৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মিমতানুর রহমান জানান, গ্রেফতার দুইজন প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্য। চলমান এইচএসসি-২০১৮ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পরীক্ষা শুরু হওয়ার পূর্বে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সরবরাহ করছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ফল পরিবর্তনের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ফেইসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ এর মাধ্যমে তাদের প্রথম প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সাথে যোগাযোগ হয় এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে অন্যান্য গ্রুপের সাথে যুক্ত হয়। এ সমস্ত গ্রুপের অ্যডমিনদের সাথে সখ্যতার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ পূর্বক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকৃত শিক্ষার্থীদের নিকট হতে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ করে তা ইন্টারনেটের বিভিন্ন অ্যপস ব্যবহার করে এইচএসসি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র পাঠিয়ে দেয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে, চক্রটি বিগত এসএসসি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত ছিল এবং তারা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল পরিবর্তন করে দেওয়ার প্রলোভনও দেখিয়ে আসছিল। তাদের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে এই চক্রের সাথে জড়িত অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
তিনি গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইন ১৯৮০ এর ৪(খ) ও তথসহ দঃ বিঃ ৪২০/৪০৬ ধারায় নগরীর চকবাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান।
এবিএন/রাজীব সেন প্রিন্স/জসিম/নির্ঝর
© আবহমান বাংলা মিডিয়া লিমিটেড কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
