শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • জলঢাকায় নিয়োগ বাণিজ্যের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় প্রধান শিক্ষক অবরুদ্ধ

জলঢাকায় নিয়োগ বাণিজ্যের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় প্রধান শিক্ষক অবরুদ্ধ

জলঢাকায় নিয়োগ বাণিজ্যের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় প্রধান শিক্ষক অবরুদ্ধ

জলঢাকা (নীলফামারী), ১৮ এপ্রিল, এবিনিউজ: নীলফামারী জলঢাকায় এক প্রধান শিক্ষক নকল সার্টিফিকিট প্রদানের মাধ্যমে নিয়োগ বানিজ্যের অর্থ কেলেঙ্কারির দায়ে বিক্ষুদ্ধ চাকুরী প্রত্যাশিরা ওই শিক্ষককে অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবরুদ্ধ করেছে। ঘটনাটি উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের গোপালঝাড় দ্বী-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে। চাকুরী প্রত্যাশীরা নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতিয় প্রয়োজনীয় কাজগপত্র ও নগদ অর্থ প্রদান করে প্রত্যাশিত চাকুরী না পাওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে অর্থ ফেরৎ চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হামিদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ফজলুর রহমানের পুত্র সুমন মিয়া (২৭) আহত হয় এবং ওই প্রধান শিক্ষক লাঞ্চিত হয়।

পরে স্থানীয় জনগণ মাধ্যমকর্মীদের সহায়তায় উদ্ধার হয়ে স্থান ত্যাগ করে শিক্ষক হামিদুর রহমান। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। প্রাপ্ত সুত্রে ও অনুসন্ধানে জানা যায়, অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষক দয়ের সর্বসম্মতিক্রমে মিটিংয়ের মাধ্যমে সহকারী গ্রন্থাগারিক শুন্য পদের জন্য একজন নিয়োগ আহবান করা হয়। পরে ২৯শে নভেম্বর ১৭ইং তারিকে পত্রিকায় প্রকাশের মাধ্যেমে আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদনপত্র আহবান করেন। সেই সুত্রধরে তিনজন আগ্রহী প্রার্থী আবেদন করেন। তারা হলেন, শরিফা বেগম, তানিয়া আক্তার ও ধরনী মোহন রায় পূর্নাঙ্গ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন করে।

অভিযোগ উঠেছে উক্ত নিয়োগকে কেন্দ্র করে নিয়োগ বানিজ্যের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যোক নগত অর্থ হাতিয়ে নেয় প্রধান শিক্ষক হামিদুর রহমান। সেই সঙ্গে তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে জাল সার্টিফিটিক প্রদানের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এ জন্য জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আগ্রহী চাকুরী প্রত্যাশীরা। সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে আগ্রহী প্রার্থী সোহরাব আলী জানান, আমার বাবা স্কুল প্রতিষ্ঠালগ্ন দাতা সদস্য। তবুও এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে ৪ লক্ষ টাকা নিয়েছে প্রধান শিক্ষক হামিদুর রহমান।

এছাড়া ওই চাকুরীর জন্য নিবন্ধন সার্টিফিটিট প্রয়োজন। যা আমার নেই। হামিদুর মাষ্টার ওই নিবন্ধন সার্টিফিটিট জাল করার জন্য টাকা নেয় ৯০ হাজার। কিন্তূ চাকরি তো হলোই না উল্টো টাকা দিতে তিনি অস্বীকৃর্তি জানাচ্ছেন। এনিয়ে আমরা জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আজীবন দাতা সদস্য ও আগ্রহী চাকুরী প্রত্যশী সোহরাব আলীর পিতা ফজলুর রহমান জানান, আমি বিদ্যালয়টির আজীবন দাতা সদস্য। কিন্তূ অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় যে বিদ্যালয়ের কোন কিছুতেই আমাকে ডাকা হয় না। প্রধান শিক্ষক হামিদুর রহমান আমার ছেলেকে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে চাকুরী দেওয়ার নামে ৪ লক্ষ টাকা গ্রহন করেছে এবং আমার ছেলের যোগ্যতা না থাকায় জাল সার্টিফিটিট প্রদানের মাধ্যমে ৯০ হাজার নিয়েছে। চাকরি তো দিলোই না। এখন টাকা ফেরৎ দিতেও অস্বীকৃর্তি জানাচ্ছে। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, নিজের আবাদি জমি ও অন্যের কাছ থেকে ধারদেনা করে এই টাকা তার হাতে তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তূ তিনি আমাকে বৃদ্ধাঙ্গগুল দেখালেন।

তানিয়া আক্তারের স্বামী আসাদুজ্জামান জানান, লাইব্রিয়ান পোষ্টে নিয়োগের জন্য ৯ লক্ষ টাকা নিয়েছে। আমাকে আশানুরুপ করেছে চলতি মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত শেষ সময় নির্ধারন করেছেন। আসলে তারা কি করবেন। চাকুরী দিবে - নাকি টাকা ফেরৎ দিবেন। এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুরুজ্জামান জানান, নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রধান শিক্ষক প্রকাশ্য এবং গোপনে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া জাল সার্টিফিকিট প্রদানের মাধ্যমেও অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। তা আমি জানি। এমন অভিযোগ উঠায় ওই পদে এখনো পূর্নাঙ্গ নিয়োগ প্রদান করা হয়নি।

তাছাড়া এ বিষয়কে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে আমাকে। এ বিষয়ে গোপালঝাড় দ্বী-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত হামিদুর রহমান জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়েছে তা আদৌ সত্য নয়। বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধারে তারা আমাক অবরুদ্ধ করেছিলো। এ ব্যাপারে আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জানান, জেলা পর্যায়ে এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ করেছে ভুক্তভুগী চাকুরী প্রত্যাশী বঞ্চিত প্রার্থীরা। তবে চাকুরী প্রত্যাশীরা আমার কাছে এসেছিল।কিন্তূ তারা আমাকে লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া শুনছি একজনকে নিয়োগ দেওয়ার পর আর একজনকে অত্যান্ত সু-চতুর ভাবে অর্থের বিনিময়ে অন্যকে নিয়োগ দেওয়া পায়তারা করছে। এটি নিয়ম বহির্ভুত। আসলে এখনো আমি সুনিশ্চিত নইযে আসলে নিয়োগ হয়েছি কি না। এ ব্যাপারে আমি মৌখিক ভাবে জেনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিভাগীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

এবিএন/হাসানুজ্জামান সিদ্দিকী হাসান/জসিম/তোহা

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত