
যশোর, ১৯ এপ্রিল, এবিনিউজ : মালয়েশিয়ায় নির্মাণাধীন ভবনের লিফটের কেবল ছিড়ে নিহত যশোরের সেই তিন যুবক তরিক, আজমিন ও সালাউদ্দিনের জানাজা শেষে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
গত ৮ এপ্রিল (রবিবার) রাত ৮টার দিকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের জোহরবারু ফরেস্ট সিটিতে কাজ করার সময় লিফটের কেবল ছিড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে নিহতদের স্বজনরা জানিয়েছেন। ১১ দিন পর নিহতদের লাশ বাড়িতে আনা হলে এলাকাবাসী ভিড় শোকবিহ্বল হয়ে পড়েন।
ঝিকরগাছার শংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাওলানা নিছার উদ্দিন বলেন, ঝিকরগাছা উপজেলার ছোট-পোদাউলিয়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাহউদ্দিনের (৪২) লাশ বেলা ১১টায় নিজ বাড়িতে এসে পৌছায়। স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন করা হয়।
শার্শা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, শ্যামলাগাছি গ্রামের আবু তালেবের ছেলে আজমিন হোসেনের (২৬) বাদ জোহর জানাজার পর উপজেলার শালতা গ্রামে তার নানাবাড়িতে দাফন করা হয়।
অপর নিহত শার্শা উপজেলার ধান্যখোলা গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে তরিকুল ইসলাম তরিককে (৩২) বাদ জোহর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় বলে জানান বেনাপোলের বাহাদুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মফিজুর রহমান।
নিহতের স্বজনরা জানান, পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে তিন বছর আগে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিল যশোরের তিন যুবক তরিক, আজমিন ও সালাউদ্দিন। সহায় সম্বল বিক্রি ও ধারদেনা করে গিয়েছিলেন সেখানে কাজ করে দেশে টাকা পাঠালে পরিবারের সবাই ভালো থাকবে এই আশায় কিন্তুু এক দুর্ঘটনায় তাদের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।
নিহত হওয়ার ১১ দিন পর আজ বৃহস্পতিবার নিহতদের বাড়িতে লাশ আসার পর থেকে চলছে শোকের মাতম।
ছোট-পোদাউলিয়া গ্রামের সালাহউদ্দিন এবার বাড়িতে এসে মেয়ে বিয়ে দেবে বলেছিলেন। মেয়ে ফারহানা ইয়াছমিন (১৮) বাগআচড়া কলেজে অনার্সে পড়াশুনা করছে। তার মৃত্যুতে সকল স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে।
লাশ আসার পর সালাহউদ্দিনের স্ত্রী শেফালি খাতুন প্রলাপ বকছে। তার বৃদ্ধা মাতা ছফুরা খাতুন, মেয়ে ফারহানা ইয়াছমিন (১৮) ও ছেলে রেজওয়ানের (০৮) আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। প্রতিবেশীরা শত চেষ্টা করেও তাদেরকে শান্ত করতে পারছেন না।
এবিএন/ইয়ানূর রহমান/জসিম/এমসি