ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল), ২০ এপ্রিল, এবিনিউজ : কাজী না হয়েও দেদারছে বিয়ে রেজিস্ট্রি করে যাচ্ছেন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গালা গ্রামের আব্দুস ছাত্তার। তিনি পৌরসভার ১৬নং ওয়ার্ডের কাজীর সীল নিজ নামে তৈরি করে প্রতিনিয়তই এ কাজ করছেন।
অথচ জেলা কাজীদের তালিকায় ওই ওয়ার্ডে নাম রয়েছে ইউসুফ আলীর। সরকারি বই না পাওয়ায় ভুয়া বই ক্রয় করে তিনি এ জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন।
স¤প্রতি ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইল গ্রামের নওশের আলীর ছেলে লাল মিয়ার কাবিনে ৮০ হাজার টাকার পরিবর্তে ৮ লাখ টাকার কাবিনের নকল প্রদান করেন। তখনি তার জালিয়াতির বিষয়টি প্রকাশ পেয়ে যায়। রাসেল নামে এক আইনজীবির সহকারিকে বই সরবরাহ করে এ কাজটি করিয়েছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, জেলার কাজীদের তালিকা অনুযায়ী টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৬নং ওয়ার্ডের কাজী হিসেবে লিপিবদ্ধ রয়েছে ইউসুফ আলীর নাম। কিন্তু ওই তালিকাকে পাত্তা না দিয়ে নিজ নামে কাজীর সীল তৈরি করে দেদারছে বিয়ে রেজিস্ট্রি করে যাচ্ছেন আব্দুস ছাত্তার। সরকারি বই না পাওয়ায় ভুয়া বই ক্রয় করে তিনি এ জালিয়াতির আশ্রয় নিচ্ছেন।
শুধু তাই নয় এসব জালিয়াতি কাজ করতে সহযোগী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন সাইফুল, কাওছার, হানিফ, শাহাদত, রাসেল, আকরাম, লতিফ, আমেনা বেগম, মুসলিম ও আবুবকরকে। এসব ব্যক্তিরা ছাত্তারের কাছ থেকে ভুয়া বই নিয়ে প্রতিনিয়তই বিয়ে রেজিস্ট্রি করে যাচ্ছেন। আর ছাত্তারের এসব অপকর্ম জেনেও মোটা অঙ্কের মাসোহারার বিনিময়ে নীরব ভূমিকা পালন করছেন জেলা রেজিস্টার আব্দুস সালাম আজাদ ও প্রধান সহকারি শাকিল আহমেদ।
স¤প্রতি ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইল গ্রামের নওশের আলীর ছেলে লাল মিয়ার কাবিনে ৮০ হাজার টাকার পরিবর্তে ৮ লাখ টাকার কাবিনের নকল প্রদান করায় জালিয়াতির মাধ্যমে ছাত্তারের ভুয়া বিয়ে রেজিস্ট্রির বিষয়টি জনসম্মুখে প্রকাশ পেয়ে যায়। এ নিয়ে অন্যান্য কাজীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতারণার শিকার দরিদ্র ভ্যান চালক লাল মিঞা বলেন, রাসেল নামের এক লোক আমার বিয়ের ৮০ হাজার টাকার কাবিন করে। পরে আমার স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য হওয়ায় সে মামলা করে। মামলায় দেখতে পাই আমার কাবিনের দেনমোহর তোলা হয়েছে ৮ লাখ টাকা। আর ওই কাবিনের নকলে টাঙ্গাইল পৌসভার ১৬নং ওয়ার্ডের কাজী হিসেবে ছাত্তারের নামযুক্ত সীল রয়েছে। আমার সাথে অনেক বড় প্রতারণা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
অভিযোগের বিষয়ে আব্দুস ছাত্তার বলেন, লাল মিয়ার বিয়ের রেজিস্ট্রি আমি করিনি। রাসেল আমার কাছ থেকে বই নিয়ে এ কাজ করেছে। আমি শুধু স্বাক্ষর ও সীল দিয়েছি। আপনিতো ওই ওয়ার্ডের কাজী নন, তাহলে কেমনে বিয়ে রেজিস্ট্রি করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি কোর্টে মামলা করেছি ওই ওয়ার্ডের কাজী হওয়ার জন্য।
জেলা রেজিস্টার আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, জেলার কাজীদের তালিকা অনুযায়ী টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৬নং ওয়ার্ডের কাজী হিসেবে রয়েছেন ইউসুফ আলী। ছাত্তার নামে কোনো কাজী আমাদের তালিকায় নেই। যদি এরকম থেকে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর আমি কারো কাছ থেকে কোনো মাসোহারা গ্রহণ করিনা।
এবিএন/কামাল হোসেন/জসিম/এমসি