![হাকিমপুরে চুরি হচ্ছে সড়কে লাগানো গাছ](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/23/abnews24.bbb_136510.jpg)
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর), ২৩ এপ্রিল এবিনিউজ: দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার পৌরসভাসহ ৩টি ইউনিয়নের সড়কে লাগানো শত শত শিশু গাছ শুকিয়ে মরে গেলেও নিলামে বিক্রি করা হচ্ছে না। এই সুযোগে কেটে নিয়ে যাচ্ছে চোরেরা। এতে করে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তিন শতাধিক উপকারভোগী।
১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে সামাজিক বনায়ন কর্মসুচির আওতায় জয়পুরহাট ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল (এনডিসি) হাকিমপুর পৌরসভার ছাতনি, জালালপুর এলাকা সহ উপজেলার আলীহাট ইউনিয়নের সাদুড়িয়া, ভাটরা, হরিহরপুর, ইটাই বাওনা, বাঁশমুড়ি, জাংগই, পালসা, ইসবপুর, বোয়ালদাড় ইউনিয়নের খাট্টাউছনা, বিশাপাড়া, বৈগ্রাম, পাইকপাড়া এবং খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নের নন্দিপুর, সাতকুড়ি, মংলাবাজার, বলরামপুর, ঘনেশ্যামপুর, ডাঙ্গাপাড়া, ঢেলুপাড়া, চৌধুরী ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের ৩৬ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে ৩৬ হাজার শিশু সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপন করেছিল। এসব গ্রামের ৩’শ উপকারভোগির মাধ্যমে ১০ বছর মেয়াদে এই গাছগুলি রোপন করা হয়।
জয়পুরহাট ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের (এনডিসি) ব্যবস্থাপক আফজাল হোসেন জানান, ২০১০ ও ২০১১ সালে উপজেলা এবং জেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটি থেকে গাছগুলি বিক্রির অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। সেই সময় নানাবিধ কারণে গাছ নিলামে বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি পুনরায় বিক্রির ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ২০১৬ সালের ২২ মে আবেদন করা হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। গাছগুলি ১০-১২ বছর আগেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। এতে করে উপকারভোগিসহ সংশ্লিষ্টরা তাদের প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
আলীহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রসুল বাবু জানান, চুক্তি অনুযায়ি মেয়াদ শেষে গাছ বিক্রির অংশের মোট অর্থ থেকে এনডিসি এনজিও পাবে ২০ ভাগ অর্থ, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ পাবে ২০ ভাগ অর্থ এবং প্রতি উপকারভোগি পাবেন ৬০ ভাগ অর্থ। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত গাছগুলি নিলামে বিক্রির উদ্যোগ নিলে সুবিধাভোগিরা উপকৃত হবেন।
উপকারভোগি আনোয়ারা বেগম, কহিনুর বেগম, ফাতেমা বেগম, পিয়ারা বেগম ও আতাউর রহমান জানান, এক যুগ থেকে শুনছি গাছ বিক্রি করে আমাদের প্রাপ্য দেওয়া হবে। গাছে নম্বরও লাগানো হয়। কিন্তু আজও সেই গাছ বিক্রি করা হয়নি। কত কষ্ট করে, টাকা খরচ করে গাছ লাগালাম। আর আমাদের লাগানো গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে চোরেরা। আমরা শুধু মুখের দিকে চেয়ে থাকি।
ভাটরা গ্রামের কয়েকজন ক্ষুদে শিক্ষার্থী জানায়, মরা গাছের পাশ দিয়ে স্কুলে যেতে আমরা ভয় পাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. শুকরিয়া পারভীন সাংবাদিকদের জানান, ২০১০ ও ২০১১ সালে উপজেলা এবং জেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটি সভায় গাছ বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই এনজিওসহ সংশ্লিষ্টরা যথা সময়ে তা উদ্যোগ নেয়নি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আকরাম হোসেন জানান, আবার নতুন করে আবেদন করা হলে উপকারভোগিদের আর্থিক বিষয়টি বিবেচনা করে গাছগুলি নিলামে বিক্রির ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এবিএন/আফজাল হোসেন/জসিম/তোহা