![সাপাহারে রাতে নিভে যায় দিনেও জ্বলেও না সোলার স্ট্রিট লাইট!](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/23/abnews24.bbbbbbbbbbbb_136540.jpg)
সাপাহার (নওগাঁ), ২৩ এপ্রিল, এবিনিউজ: নওগাঁর সাপাহার উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে স্থাপন করা অধিকাংশ ইন্টিগ্রেট সোলার স্ট্রিট লাইট রাতের গভীরতার সাথে পাল্লা দিয়ে নিভে যায়। অনেকগুলো লাইট জ্বলেও না। তিন বছরের ওয়ারেন্টি থাকলেও সরবরাহকারী ও সংস্থাপনকারী প্রতিষ্ঠান শক্তি ফাইন্ডেশন (ইডকল) ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের দায়সারা মনোভাবের কারণে দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে থাকা এইসব লাইট ঠিক হয় নি।
জানা যায়, নানা অপরাধ ও নাশকতা এড়াতে এবং মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে সাপাহার উপজেলার প্রতিটি সড়কে সড়কবাতি স্থাপনের উদ্যোগ নেন স্থানীয় সাংসদ সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি। তিন বছর আগে সড়ক বাতি সংস্থাপনের কাজ শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাটামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচীর আওতায় বিগত ছয়মাস পূর্বে (২০১৬-১৭ অর্থ বছর) উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণস্থানে স্থাপিত করা হয়েছিল ৫০৯ টি ইন্টিগ্রেট সোলার স্ট্রীট লাইট ও হোম সোলার। ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ৭৮ টি ইন্টিগ্রেট সোলার স্ট্রীট লাইট ও হোম সোলার স্থাপিত হয়েছিল।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইডকলের সহযোগী প্রতিষ্ঠান শক্তি ফাউন্ডেশন এই লাইটগুলো সরবরাহ ও স্থাপন করেন। সোলার স্ট্রিট প্রতিটি লাইটের বিপরীতে গুণতে হয়েছিল ছাপ্পান্ন হাজার চারশত দশ (৫৬৪১০) টাকা এবং হোম সোলারের জন্য বিভিন্ন রেটে টাকা গুনতে হয়েছিল। কিন্তু স্থাপনের কয়েক মাসের মধ্যেই কিছু লাইট বিকল হয়ে পড়ে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাপাহার উপজেলার দিঘীরহাট বাজারে ৫ টির মধ্যে ৩ টি জ্বলে না, ২ টি রাতের অন্ধকারে নিভে যায়, নিশ্চিন্তপুর মোড়ে ২ টি জ্বলে না, আইহাই ইউপি সামনে, আশড়ন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে, মধইল বাজারের লাইটগুলো জ্বলে না, ইসলামপুর মোড়ের লাইটটি অকেজো হয়ে আছে। এছাড়াও সড়কের পাশে মোড়ে স্থাপন করা সোলার স্ট্রিট লাইট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্নস্থানে অকেজো ও জ্বলে না এবং কিছু কিছু লাইট দিনেও জ্বলে থাকে।
ইসলামপুর মোড়ের দোকানদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মোড়ে লাইটটি লাগানোর মাসখানেক পর নষ্ট হয়ে যায়। দীর্ঘ কয়েকমাস এভাবে নষ্ট হলেও ঠিক করা হচ্ছে না। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, কিছু স্থানে এসব লাইট রাতের গভীরতা বাড়ার সাথে সাথে নিভে যায়। হ্রাস পেয়েছে আলোর পরিমানও। এতে করে রাতের অন্ধকারে সর্বসাধারণের চলাচলে বিঘœ ঘটে। এছাড়াও অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে নানা ধরণের অপরাধ ঘটতে পারে বলে অনেকেই ধারনা করছেন।
সাপাহার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকবর আলী বলেন, আমার ইউনিয়নের গোডাউনপাড়া মোড়ে, জিরোপয়েন্ট সহ গুরুত্বপূর্ন স্থানে কয়েকটি একদম জ্বলে না, আর কয়েকটি রাত ১০-১১ টার পর নিভে যায়। এই সব লাইটের তিন বছরের ওয়ারেন্টি থাকলেও দায়িত্বপ্রতিষ্ঠান দায়সারা ।
এই বিষয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান শক্তি ফাউন্ডেশনের সাপাহার শাখার ম্যানেজার রকিবুল ইসলামের সাথে অকেজো ও রাতের অন্ধকারে বন্ধ হয়ে যাওয়া লাইটের বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে উপজেলার ৫০৯ টির সবকটি ঠিক আছে। এক পর্যায়ে পুরো বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রতিনিধি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করেন।
এই লাইটগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায় স্বীকার করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আবু সোয়েব খান বলেন, ছায়া পড়া স্থানে স্থাপন ও ধুলোবালির আস্তরণ পড়ার কারণে কয়েকটি স্থানে লাইট বন্ধ থাকার খবর পেয়েছি। আগামী এক মাসের মধ্যে এসব লাইট জ্বলে উঠবে বলেও জানা তিনি।
এবিএন/নয়ন বাবু/জসিম/তোহা