
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল, এবিনিউজ : ভারতে কট্টরপন্থি হিন্দু সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একজন নেতা ট্যাক্সি হেইলিং অ্যাপে গাড়ি বুক করার পর যখন দেখেন চালক মুসলিম সঙ্গে সঙ্গে সেটি বাতিল করে দিয়ে সগর্বে সে কথা সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘোষণা করেছেন।
অভিষেক মিশ্র নামে ওই ব্যক্তির সেই বিতর্কিত টুইট নিয়ে ভারতে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে, ‘ওলা’ নামে যে অ্যাপটি তিনি ব্যবহার করেছিলেন তারা রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে ওই গ্রাহকের আচরণের নিন্দা করেছে।
অভিষেক মিশ্র নামে ওই ব্যক্তিকে ওলা যাতে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে, সেই দাবিও জানাচ্ছেন অনেকেই। তবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ওই নেতা নিজের আচরণের জন্য যে আদৌ দুঃখিত নন, সেটা পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন।
এই বিতর্কের আগে থেকেই টুইটারে তার প্রায় ১৪ হাজার ফলোয়ার ছিল, সেই সংখ্যাও গত দু-তিন দিনে আরও কয়েক হাজার বেড়ে গেছে।
ভারতে বিজেপির বেশ কয়েকজন কেবিনেট মন্ত্রীও টুইটারে তাকে নিয়মিত ফলো করেন, যা থেকে বোঝা যায় বিজেপি ও তার ঘনিষ্ঠ গৈরিক সংগঠনগুলোয় অভিষেক মিশ্র একটি পরিচিত ও প্রভাবশালী নাম।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বা সংস্কৃতিমন্ত্রী মহেশ শর্মার মতো অনেকেই তার ‘ফলোয়ার’।
গত ২০ এপ্রিল তিনি টুইটারে একটি স্ক্রিনশট দিয়ে জানান, ওলাতে ক্যাব বুক করার পর তিনি যখন দেখতে পান চালক একজন মুসলিম সঙ্গে সঙ্গে সেই বুকিং বাতিল করে দেন, কারণ তার কথায়, ‘আমার পয়সা আমি জিহাদি মানুষজনকে মোটেও দিতে চাই না।’
এই পোস্টের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এটির সাম্প্রদায়িক চরিত্র নিয়ে অনেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে সরব হন।
অভিষেক মিশ্র যেহেতু বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশে পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন কনসালট্যান্ট হিসেবেও নিযুক্ত, তাই এ ব্যাপারে যোগী আদিত্যনাথ সরকারকেও ব্যবস্থা নিতে হবে দাবি করেন অনেকে।
অভিষেক মিশ্রর বিতর্কিত টুইটের চব্বিশ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে ওলা ক্যাবস একটি বিবৃতি দিয়ে বলে, ‘আমাদের দেশের মতোই ওলা একটি ধর্মনিরপেক্ষ প্ল্যাটফর্ম এবং আমরা কখনই আমাদের চালক বা গ্রাহকদের সঙ্গে তাদের ধর্ম-জাতপাত-লিঙ্গের ভিত্তিতে কোনো বৈষম্য করি না।’
অভিষেক মিশ্রর আচরণের বিরুদ্ধে দেশের নানা প্রান্ত থেকে নিন্দার ঝড় বয়ে গেলেও হিন্দুত্ববাদী ওই ব্যক্তি দাবি করেছেন, তিনি এ সবে মোটেও বিচলিত নন।
তিনি বরং পাল্টা একটি পোস্ট করে দাবি করেছেন, ‘মানুষ আমাকে আক্রমণ করা শুরু করেছেন। কিন্তু একজন গ্রাহক হিসেবে আমি কোনো জিনিসটা নেব, আমার সেটা বেছে নেওয়ার কি কোনো অধিকার নেই?’
সূত্র : বিবিসি
এবিএন/সাদিক/জসিম