![চট্টগ্রামে গৃহবধূ সুপর্ণা হত্যা: যুক্তিতর্ক শেষ, ৮ই মে রায়](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/24/abnews_24.bb_136703.jpg)
চট্টগ্রাম, ২৪ এপ্রিল, এবিনিউজ: চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর গৃহবধু সুপর্ণা শীল (২০)কে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ফেলার মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানী আজ মঙ্গলবার শেষ হয়। গত ২৩ ও ২৪ এপ্রিল দুদিনের দীর্ঘ শুনানী শেষে আদালত আসামী কৃষ্ণপদ শীলের জামিন বাতিল করে জেল হাজতে প্রেরনের আদেশ দেন এবং অপর ৩জন আসামীকে রায়ের তারিখ পর্যন্ত জামিন বর্ধিত করেন। একই সাথে আগামী ৮ই মে মামলা রায়ের জন্য দিন ধার্য্য করে মামলার অপর ৩ আসামীদের রায়ের দিন আদালতে স্বশরীরে হাজির থাকার নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার বিকেলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্র্যাইবুনাল-১ এর বিচারক বেগম রোখসানা পারভীন এ নির্দেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্র পক্ষে বিশেষ পি.পি জেসমিন আক্তার ও মানবাধিকার আইনজীবীগণ বাদী পক্ষে মামলার যুক্তি তর্ক শুনানী শুরু করেন।
বাদী পক্ষে মানবাধিকার আইনজীবী এডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান বলেন, বাদী পক্ষ নিরপেক্ষ সাক্ষ্য দ্বারা মামলাটি সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে বিধায় আসামীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদন্ড প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, এটা একটা সুপরিকল্পিত বর্বর নৃশংস হত্যাকান্ড। যৌতুকের দাবীতে নারী নির্যাতনের ও নির্মম নিষ্ঠুরতার এ এক করুন চিত্র এটি।
আসামীরা ময়না তদন্ত পূর্বক ভিকটিমের মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে বাঁধা সৃষ্টির জন্য আলামত (লাশ) নষ্ট করতে তড়িঘড়ি করে পুড়িয়ে ফেলে। এ সময় ভিকটিমের মা মামলার সংবাদদাতাকে আটক রেখে অলিখিত ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। মেয়ের মৃত্যুতে ভিকটিমের পিতা মধ্য প্রাচ্যের কর্মস্থলে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে। এমন জগন্য কর্মকান্ডে অংশগ্রহণকারীদের সব্বোচ্চ সাজা প্রার্থণা করেন এ আইনজীবি।
অন্যদিকে আসামী পক্ষ তাদের যুক্তি তর্কে বলেন, ‘এটি একটি স্বাভাবিক মৃত্যু, ধর্মীয় কারণে ভিকটিমকে তাড়াতাড়ি অন্তষ্টিক্রিয়া সম্পাদন করা হয়। এর আগে গত ৩০মে ১৭ সাক্ষ্য গ্রহণ ও পরবর্তীতে তাঁর জেরা সমাপ্ত হলে আসামী পক্ষে ১নং আসামী কৃষ্ণশীল ও অনিল ভট্টাচার্যসহ ২ জন সাফাই সাক্ষী প্রদানের পর ২৩ এপ্রিল যুক্তি তর্কের দিন ধার্য্য করেন আদালত। যৌতুকের দাবীতে গৃহবধু সুপর্ণা শীলকে গলাটিপে নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ফেলার মামলার আসামী পক্ষের আবেদন ইতিপূর্বে খারিজ করে দিয়েছেন মহামান্য উচ্চ আদালত। ফলে গত ১৪ ই সেপ্টেস্বর’১৫ চট্টগ্রামের বিচারিক আদালতে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা দেশের বাহিরে থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ বিলম্বিত হয় বলে জানিয়েছেন মানবাদিকার আইনজীবিরা।
উল্লেখ্য গত ২০১২ সালের ৪ জানুয়ারী আনোয়ারা উপজেলা বারশত ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের শীল পাড়ায় গৃহবধু সূপর্না শীলকে যৌতুকের জন্য হত্যার পর নিহতের আত্মীয় স্বজনকে জিম্মি করে পোষ্টমর্টেম ছাড়া তড়িগড়ি করে লাশ দাহ করে গৃহবধুর শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। পরে নিহতের মা রমা শীলবাদি হয়ে আনোয়ারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে নিহতের স্বামী কৃষ্ণপদ শীল, দেবর পলাশ শীল, শাশুড়ী রেনু বালা শীল এবং ভাসুর সুনীল কান্তি শীলকে আসামী করা হয়।
এবিএন/রাজীব সেন প্রিন্স/জসিম/তোহা