বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে: বিআইবিএম

বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে: বিআইবিএম

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল, এবিনিউজ : প্রতি বছর বাড়ছে বেসরকারি খতে বিদেশী ঋণের পরিমাণ। যা বৈদেশিক মুদ্রার ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করছে এবং দেশের অর্থনীতিতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণের ১১ ধরণের উদ্বিগ্নতা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ফরেন কারেন্সি রিস্ক, মোরাল হ্যাজার্ড, কস্ট অব বোরোয়িং, ফরেন কারেন্সি বোরোয়িং লোকাল বিজনেস অর্গানাইজেশন, লোন ইউটিলাইজেশন, পলিসি আনসার্টিইনিটি, পলিসি সাপোর্ট, ভেরিফিকেশন অব অ্যাপ্লিকেশন, বোরোয়িং ফ্রম অফ শোর ব্যাংকিং ইউনিট এবং ঋণ অনুমোদনে দীর্ঘ সূত্রিতা।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘প্রাইভেট কমার্শিয়াল বোরোয়িং ফ্রম ফরেন সোর্সেস ইন বাংলাদেশ: অ্যান অ্যানাটমি’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহা: রাজী হাসান। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের মুজাফফর আহমেদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা, সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সাবেক চেয়ার প্রফেসর এস এ চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং বিডার নির্বাহী কমিটির সদস্য নাভাস চন্দ্র মন্ডল, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি, ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব -উল-আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে বেসরকারি খাতে বিদেশী বাণিজ্যিক ঋণ ছিল চার’শ কোটি ডলার। ২০১৭ সালে তা বেড়ে দাড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ১১’শ কোটি ডলারে। বিদেশী এ ঋণের প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ শতাংশ। বেসরকারি খাতে বিদেশী বাণিজ্যিক ঋণ বৈদেশিক মুদ্রার ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করছে। যা অর্থনীতিতে উদ্বিগ্নতা বাড়াচ্ছে।

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, ব্যবসায়ী বিশেষ করে রপ্তানিকারকদের দাবির প্রেক্ষিতে বিদেশী ঋণ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে প্রথম দিকে এ ঋণের কিছু অপব্যবহার হয়েছিল। এখন এ ধরণের ঘটনা ঘটে না। পুরো বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোরভাবে নজরদারী করছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ বেসরকারি খাতে বিদেশী বাণিজ্যিক ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছে। বাংলাদেশে এ ধরণের পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলেও বিষয়টি সর্তকতার সঙ্গে দেখতে হবে।

বিআইবিএমের মুজাফফর আহমেদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বর্তমানে বিদেশী বাণিজ্যিক ঋণের প্রয়োজন রয়েছে। তবে বিদেশী বাণিজ্যিক ঋণ যেন ভিন্ন খাতে ব্যবহার না হয় সেদিকে বিশেষ নজরদারী করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংককেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী বলেন, বন্ড মার্কেট ডেভেলপ করলে তারল্য সংকট থাকবে না। তবে এজন্য সরকারি বন্ড মার্কেট ডেভেলপ করা জরুরি। পরিকল্পিতভাবে উদ্যোগ নিলে ব্যাংকিং খাতে কোন তারল্য সংকট থাকবে না।

সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সাবেক চেয়ার প্রফেসর এস এ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে কোন সংস্থার এক টাকাও খেলাপী না। অথচ ব্যাংকিং খাতে বড় অঙ্কের অর্থ ঋণ খেলাপী হয়ে পড়েছে। এটা মানা যায় না। ব্যাংকে ক্যাশ রিকভারী অনেক কমে গেছে। এটি ভাবনার বিষয়। কেন এটা হচ্ছে তা খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে বিদেশী বাণিজ্যিক ঋণ ব্যাপক ভাবে বেড়ে গেছে। আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে অর্থনীতিতে তার বড় ধরণের প্রভাব পড়বে।

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, বিদেশী ঋণ নিয়ে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের একটি অংশ তাদের স্থানীয় ঋণও পরিশোধ করতে দেখা গেছে। এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে সেদিকে নজর রাখতে হবে।

ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব -উল-আলম বলেন, বিদেশী ঋণের ব্যবহার বিষয়ে সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সব পক্ষকে সর্তক থাকতে হবে। বিদেশী ঋণে অনেক ধরণের ঝুঁকি রয়েছে- এ কারণে ব্যাংকারদের পাশাপাশি গ্রাহকদেরও ভালো ধারণা থাকতে হবে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত