সোনাগাজী (ফেনী), ২৮ এপ্রিল এবিনিউজ: গাড়ীতে হামলা চালিয়ে ফেনী-৩ আসেনের সাংসদ হাজী রহিম উল্যাহ কে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে স্বদলীয় প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা। আজ শনিবার রাত সাড়ে ১২ টার সময় উপজেলার আমিরাবাদ ইউপির মুহুরি প্রজেক্ট পুলিশ ফাঁড়ির সামনে হামলার ঘটনাটি ঘটে। তবে গাড়ীতে না থাকায় সৌভাগ্যক্রমে সাংসদ প্রানে বেচেঁ যান। এসময় সন্ত্রাসীরা তার ব্যাবহ্নত ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ী ও পাশের বালু মহলের দুইটি স্কেভেটরে পেট্টল দিয়ে অগ্নিসংযোগ করে।
শনিবার দুপুরে পৌরসভার জিরো পয়েন্টে নীজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংসদ রহিম উল্যাহ তাকে হত্যা চেষ্টার জন্য ফেনী সদরের সাংসদ ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তার অনুসারী পালিত সন্ত্রাসীদের দায়ী করে বলেন, ফুলগাজীর চেয়ারম্যান একরামের মতো তাকেও নৃশংসভাবে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনি বলেন, নিজাম হাজারী ও তার পালিত সন্ত্রাসী ছাড়া আমার সাথে কারো বিরোধ নেই।
এ নিয়ে সাংসদ রহিম উল্যাহ কে দ্বীতিয়বার হত্যার চেষ্টা ও তার বাল মহালে চতুর্থবারের মতো অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবী করেন,ঘটনার সময় তিনি তার ব্যাক্তিগত ব্যাবহারের গাড়ী নং(ভিএক্স ভিএইট ঢাকা মেট্রো-১৫-৩৯২২) যোগে মুহুরী প্রজেক্ট সংলগ্ন মৎস প্রকল্পে যান।
গাড়ী থেকে নেমে পাহারাদারের সাথে কথা বলার সময় হঠাৎ ১৫/২০ জনের মুখোশধারী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গুলি ছোড়ে তার গাড়ীতে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর করে।এসময় তারা পাশের বালু মহালের মাটি কাটার দুইটি স্কেভেটর মেশিনে অগ্নিসংযোগ করে।তিনি আরো দাবী করেন, তার দেহরক্ষীরা পাল্টা গুলিবর্ষন করলে সন্ত্রাসীরা দ্রুত ট্রলারযোগে পালিয়ে যান। হামলায় তার ৩০/৩৫ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দাবী করে তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।
সাংসদের গাড়ীতে হামলার খবর পেয়ে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাংসদ রহিম উল্যাহ কে নিরাপদে বাড়ীতে পৌঁছে দেন।দমকল বাহিনীর কর্মিরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনার পূর্বেই স্কেভেটর মেশিনগুলো পুড়ে ভস্মিভুত হয়ে যায়।পুলিশ সাংসদে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ীটি থানায় নিয়ে যায়।
২০১৫ সালে ফেনী সার্কিট হাউজে সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে সাংসদ রহিম উল্যাহ কে লাঞ্চিত করে ফেনী সদরের সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর অনুসারীরা।সে সময় থেকে সোনাগাজীতে দুই সাংসদের সমর্থকদের মাঝে বহু রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি ২৫/৩০ টি মামলা হয়।
রহিম উল্যাহ ২০১৪ সালে দলীয় মনোয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করে জয়ী হয়।নির্বাচনে ফেনী জেলা আওয়ামীলীগ মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির নেতা রিন্টু আনোয়ার কে সমর্থন না করে রহিম উল্যাহ কে সমর্থন করে।জয়ী হওয়ার পর প্রথম কয়েক মাস সদরের সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর সাথে রহিম উল্যাহর ভালো সম্পর্ক থাকলেও পরে উন্নয়ন কাজের কমিশনের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ শুরু হয়ে এখনো তাহা অব্যহত রয়েছে।
রহিম উল্যাহ সৌদি আরবের জেদ্দা মহানগর শাখা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন এবং ২০০৭ সালে বাতিল হওয়া অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-৩ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী ছিলেন।
ঘটনার বিষয়ে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুনায়েত কাউসার জানান,সাংসদের গাড়ীতে হামলা ও বালু মহালে অগ্নিসংযোগের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তাদের অভিযান অব্যহত রেখেছে।
সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী দেশের বাইরে অবস্থান করায় তার বিরুদ্ধে সাংসদ রহিম উল্যাহর অভিযোগের পাল্টা বক্তব্য জানা যায়নি।
এবিএন/আবুল হোসেন রিপন/জসিম/তোহা