ঢাকা, ২৯ এপ্রিল, এবিনিউজ : মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে রোহিঙ্গা সংকটের কারণে উত্তরের কাচিন বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘাতের খবর সম্প্রতি খুব একটা নজরে আসেনি। কিন্তু সেখানে যুদ্ধ হঠাৎ করে তীব্র হয়ে ওঠায় হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে।
মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেস আর্মির যোদ্ধাদের অবস্থানগুলোর ওপর বিমান হামলা এবং কামানের গোলাবর্ষণ করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
ফলে হাজার হাজার লোকঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে চীন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলোয় আশ্রয় নিচ্ছে।
জাতিসংঘ বলছে, এ বছর অন্তত ১০ হাজার লোক ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। আর শুধু এপ্রিল মাসেই সেখান থেকে পালিয়েছে ৪ হাজারের মতো।
কাচিন জনগোষ্ঠীর লোকেরা প্রধানত খ্রিস্টান এবং ১৯৬১ সাল থেকে তারা বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে স্বায়ত্তশাসিত এলাকা প্রতিষ্ঠার দাবিতে লড়াই করে যাচ্ছে। কেআইএ বিদ্রোহীদের হাতে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র আছে এবং তারা অন্যতম শক্তিশালী একটি বিদ্রোহী গ্রুপ বলে মনে করা হয়।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, গত কিছু দিনে পরিস্থিতি গুরুতর রূপ নিয়েছে। খবরে বলা হচ্ছে, সবশেষ এই লড়াইয়ে সরকারি সৈন্যরা কাচিন যোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি ঘাঁটি দখল করে তাদেরকে সীমান্ত এলাকার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
জাতিসংঘের এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে, কাচিন এলাকাগুলোয় বিচার-বহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং যৌন সহিংসতার মতো ঘটনা সাম্প্রতিক কালে ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করতে ব্যর্থতার জন্য এবং ত্রাণ যেতে না দেয়ার জন্য মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির সমালোচনা করা হয়েছে।
বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার কর্মীরা তাদের সেখানে যেতে অনুমতি দেওয়ার জন্যে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, এ যুদ্ধের কারণে উত্তর মিয়ানমারে সোয়া এক লাখের মতো মানুষ গৃহচ্যুত হয়েছে।
বিদ্রোহীদের একজন মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে এ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এতো তীব্র সংঘর্ষ আর কখনো হয়নি।
মিয়ানমার সরকার গত ৬ বছর ধরে বেশ কয়েকটি জাতিগত বিদ্রোহী গ্রুপের সঙ্গে শান্তি আলোচনা চালিয়ে আসছিল। কিন্তু কাচিন ন্যাশনাল আর্মি এ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি না হয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
তাদের দাবি হলো, প্রথমেই কাচিনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
সংখ্যালঘু খ্রিস্টান এ কাচিন জাতিগোষ্ঠীর জন্য আরও স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে এ সশস্ত্র লড়াই শুরু হয় ১৯৬০-এ দশকে।
খবর বিবিসি বাংলা
এবিএন/সাদিক/জসিম
© আবহমান বাংলা মিডিয়া লিমিটেড কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
