ডা. একেএম ফজলুল হক সিদ্দিকী, ২৯ এপ্রিল, এবিনিউজ : ক্যানসার একটি মারাত্মক রোগ। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গেক্যানসার হতে পারে। মলাশয় ক্যানসার একটি মারাত্মকরোগ। প্রধানত মলাশয় ক্যান্সারের কারণ হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য। অতিরিক্ত তেল, চর্বি ও মশলা জাতীয় খাবার মলাশয় ক্যান্সারের আরও একটি অন্যতম প্রধান কারণ। মলাশয় ক্যান্সারের লক্ষণ মলদ্বারে চুলকানি, মলত্যাগের সময় মলদ্বারে তীব্র ব্যথা ও রক্তপাত। মলদ্বারে ক্যানসারের কারণ হচ্ছে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন। অধিক নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবনের ফলে দেহের ভেতর অনেক ক্ষতি করে যেমন হাড়ের ক্ষয় হয়, রক্তের সথে মিশে রক্তের হিমায়িত গুণ নষ্ট করে ফেলে। আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে বয়সের কারণে হয়ে থাকে। এ রোগ থেকে কিছুটা রক্ষা পেতে হলে বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। নেশা জাতীয় খাদ্য যেমন মদ গাজা হেরোইন সিগারেট থেকে বিরত থাকতে হবে আর নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
বয়স কোলন ক্যান্সারের এক নম্বর কারণ। ৫০ বছর বয়সের মধ্যে ২৫% মানুষের যমফহয্র দেখা দেয়। এই পলিঞ্ঝ থেকেই ক্যান্সার হতে পারে। ২. মদ্যপান কোলন ক্যান্সারের দ্বিতীয় কারণ। ৩. ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪০% বেশি। ৪. অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার খেলেও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। ৫. ২৫% মানুষের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি জেনেটিক। ৬. ধূমপান মলাশয় ক্যান্সার এর অন্যতম কারণ।
লক্ষণ :
মলদ্বার দিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, কালো মলত্যাগ প্রধান লক্ষণ। বয়স জনিত এবং জেনেটিক কারণের ক্ষেত্রে কিছু করার নেই। সুষম খাদ্যাভ্যাস, পরিমিত বিশ্রাম এবং নিয়মিত শরীর চর্চা মলাশয় ক্যান্সার রোধে সাহায্য করে।
বিভিন্ন ক্যান্সার জনিত কারণ যেমন পরিবেশ বা বংশগত প্রভাবের কারণে মলাশয়ের মিউকোসাল এপিথেলিয়ামের টিউমারটি ম্যালিগন্যান্ট টিউমারে পরিণত হলে তখন তাকে কোলন বা মলাশয়ের ক্যান্সার বলে। এটি সাধারণত মলাশয় এবং মলদ্বারের সংযোগস্থানে হয়। সম্ভাবনার দিক দিয়ে গ্যাস্ট্রিক, খাদ্যনালী এবং কোলন ক্যান্সারের মধ্যে এর স্থান দ্বিতীয়। সাধারণত ৪০–৫০ বছর বয়সী রোগীদের ক্ষেত্রে এই ক্যান্সার বেশী দেখা যায়। এবং ৪০ বছরের নিচে কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ১৫%। পুরুষ এবং নারী ভেদে এর অনুপাত হল ২ঃ১। প্রতিবছর যত প্রকারের ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয় তার মধ্যে কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেশি। মহিলাদের তুলনায় পুরুষেরা কোলন ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে এবং ডাক্তারদের মতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনে কিছুটা পরিবর্তনের মাধ্যমেই কোলন ক্যান্সার হওয়ার প্রায় ৪৫% ঝুঁকি কমে যায়। তাই নিজেদের সুস্থতায় সতর্ক থাকা উচিত নিজেদেরকেই।
১. ধূমপানবন্ধ করা, ধূমপানের ফলে ফুসফুসের ক্যান্সার, হার্ট অ্যাটাকের পাশাপাশি কোলন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। ৪০ বছরের নিম্ন বয়সী ধূমপায়ীদের প্রায় ১৭% ঝুঁকি রয়ে যায় কোলন ক্যান্সারের এবং ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে তা বেড়ে হয় ৩০–৩৫%।
২. লাল মাংস খাওয়া বন্ধ করা, গবেষণায় দেখা যায় লাল মাংস কোলন ক্যান্সারের জন্য অনেকাংশে দায়ী বিশেষ করে যদি তা নিয়মিত খাওয়া হয়। তাই লাল মাংস খাওয়া একদম কমিয়ে দিতে হবে।
৩. পেটের মেদ কমানোর চেষ্টা গবেষণায় পাওয়া গেছে যাদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বিশেষ করে যাদের পেটে মেদ জমার সমস্যা রয়েছে তাদের খুব সহজে এই কোলন ক্যান্সারে আক্রান্তের ঝুঁকি দেখা যায়। তাই যতোটা সম্ভব ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং পেটের মেদ কমানোর চেষ্টা করতে হবে।
৪. নিয়মিত ব্যায়াম স্বাভাবিক নিয়মে যদি প্রতিদিন ব্যায়ামের অভ্যাস তৈরি করে তাহলে দেহে মেদ জমার সুযোগ পাবে না। এতে করে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি আপনা আপনিই অনেক কমে আসবে। ৫. প্রতিদিন সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। যে সকল সবজি কাঁচা খাওয়া যায় তা কাঁচাই খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে করে দেহে বাড়তি ফ্যাট জমবে না এবং পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। মলাশয় ক্যানসার থেকে পরিত্রাণের উপায়গুলি হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসব্জি ও আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ, খাবার পুরোপুরি চিবিয়ে খাওয়া, অতিরিক্ত পানি পান, অতিরিক্ত তেল, চর্বি ও মশলা জাতীয় খাবার পরিত্যাগ, ধূমপান পরিত্যাগ।
(সংগৃহীত)
এবিএন/ফরিদুজ্জামান/জসিম/এফডি