বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

ডোমারে ড্রাগন চাষে স্বপ্ন দেখছে কৃষক

ডোমারে ড্রাগন চাষে স্বপ্ন দেখছে কৃষক

নীলফামারী , ৩০ এপ্রিল, এবিনিউজ: পিতায়য়া বা ড্রাগন এটি এক প্রজাতীর ফল। একধরনের ফণীমনসা(ক্যাকটাস)প্রজাতীর ফল।এই ফলটিই ড্রাগন ফল হিসেবে পিরিচিত।গণচীনে এটিকে ফায়ার ড্রাগন ফ্রুট,ভিয়েতনামে সুইটি ড্রাগন,ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াতে ড্রাগন ফ্রুট,থাইল্যান্ডে ড্রাগন ক্রিষ্টাল নামে পরিচিতি। বাংলাদেশে এই ফলটি ব্যাপকভাবে পরিচিত না হলেও বর্তমানে দেশের প্রায় সব জায়গায় ড্রাগন চাষ হয়ে আসছে। এই ফলটির জন্ম মধ্য আমেরিকায়। বর্তমানে নীলফামারীর ডোমারে ড্রাগন চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষক রেয়াসত করিম। প্রথম পর্যায়ে সফলতার পর আরো ব্যাপক আকারে চাষ শুরু করা হয়েছে।উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের খাটুরিয়া গ্রামের রিয়াসত করিম তার বাহে কৃষি ফার্মে ২০১৬ সালে দেড় বিঘা জমিতে পরীক্ষামুলকভাবে ড্রাগন চাষ করেন।এক বছরের সফলতায় তিনি এবার আরো নয় বিঘা জমিতে ড্রাগন চারা রোপন করেন।

রিয়াসত করিম প্রায় ২০ বছর ধরে কৃষি কাজের সাথে যুক্ত। এর আগে পান চাষ করেও সফল হয়েছেন তিনি। ২০১৬ সালে দেবীগঞ্চ বীজ উৎপাদন কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশিষ কুমার সাহার মাধ্যমে ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ হন তিনি।এরপর ইন্টারনেটের মাধ্যমে ড্রাগন ফল চাষ সম্পর্কে অবহিত হয়ে যশোরের চৌগাছা থেকে প্রতিটি চারা আশি টাকা করে দেড় বিঘা জমিতে চারা রোপন করেন। প্রথম বছরে তিন লাখ টাকার উপরে ড্রাগন ফল বিক্রি করা হয়। প্রতিবছর এর ফলন বৃদ্ধি পায়। একটি বাগান থেকে কমপক্ষে ১২ বছর ফল পাওয়া যায়। দেড় বিঘা জমিতে এক হাজার ২৪টি গাছ রয়েছে। ঐ দেড় বিঘার জমির ড্রাগন গাছ থেকে নতুনভাবে চারা তৈরি করে আরো সাড়ে সাত হাজার চারা রোপন করা হয়েছে।গত ৩১ মার্চ বাগান সম্প্রসারন করে এসব চারা রোপন করা হয়। ক্যাকটাস জাতীয় উদ্ভিদের মত দেখতে ড্রাগন ফল শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

সুস্বাদু এই ফলটি ডায়াবেটিক ও হার্টের জন্যও অনেক উপকারী কোষ্ঠ কাঠিন্য রোগের জন্য ড্রাগন ফল উপকারী। ড্রাগন বাগান দেখতে কৃষি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মোঃ মকবুল হোসেন এমপি বাগানটি পরিদর্শন করে কৃষকদের নানা ভাবে সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন। যশোরের চৌগাছা উপজেলার ড্রাগন নার্সারীর মালিক জুলফিকার সিদ্দিক বলেন,ড্রাগন চাষ একটি লাভ জনক ব্যবসা।ডোমারের মাটি ,আলো,বাতাস ড্রাগন চাষের উপযোগী। এ জাতীয় ফল সুস্বাদু ও মিষ্টি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এর চাহিদাও রয়েছে। কৃষক ইসমাইল হোসেন ও লিটন বলেন,ড্রাগন ফল সুস্বাদুর পাশাপাশি বিভন্ন রোগ প্রতিরোধেও কাজ করে। ড্রাগন গাছে ফুল ফোটে রাতে ।

দেখতে নাইট কুইন ফুলের মত,লম্বাটে সাদা ও হলুদ।ড্রাগন ফুলকে রাতের রানী নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। ড্রাগনের বংশ বিস্তারও সহজ। বীজ দিয়ে বংশ বিস্তার করা যায়। এই ফলের জন্য শুষ্ক জলবায়ু দরকার। তবে অধিক বৃষ্টিপাত হলে ফুল ঝড়ে যায় ও ফলে পচন দেখা দেয় বলে জানিয়েছেন কৃষক রেয়াসত করিম।

নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক কেরামত আলী জানান,অন্যান্য ফসলের তুলনায় ড্রাগন চাষ লাভ জনক। চারা রোপনের এক বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে।ডোমারে ব্যাক্তি উদ্যোগে বাগান গড়ে উঠেছে। জেলায় ৮টি বাগান রয়েছে। সফলতার পর বাগানের পরিধি বাড়ানো হয়েছে।প্রথমবারেই ফল থেকে দুই লাখ টাকা আয় হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আয় বাড়তে থাকবে।

এবিএন/মোঃআব্দুল্লাহ আল মামুন/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত