![চিকিৎসক সংকটে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/30/abnews-24.b_137499.jpg)
সোনাগাজী (ফেনী), ৩০ এপ্রিল, এবিনিউজ: চিকিৎসক-কর্মচারী ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংকটে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন নিজেই রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা বাসিন্দারা কাংখিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্র জানায়, সোনাগাজী উপজেলায় চিকিৎসকের মোট ২১টি পদ থাকলেও বর্তমানে উপজেলায় চিকিৎসক কর্মরত রয়েছে মাত্র ২ জন।অফিস সহকারীর ৫টি পদের মাঝে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১ জন।চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের ৫টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছে ১ জন। সুইপারের ৫টি পদের মধ্যে ৪টি পদ দীর্ঘদিন শুন্য রয়েছে।টেকনেশিয়ান থাকলেও দীর্ঘদিন এক্স-রে মেশিনটি বিকল অবস্থায় রয়েছে।গত এক যুগেরও বেশী সময় জেনারেটোরটি নষ্ট অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এছাড়াও আসবাবপত্র ও বিভিন্ন বিভাগে যন্ত্রপাতির সংকটও রয়েছে।
সুত্র জানায়,বর্তমানে হাসপাতালে যে ২জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন তাদের মধ্যে একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পারিকল্পনা কর্মকর্তা।তাকেও দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে হচ্চে।একজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে চরম সংকটে চলছে উপজেলার চিকিৎসা কার্যক্রম। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কাগজে কলমে ৫০ শয্যা বলা হলেও ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন গড়ে ৬০/৭০ জন রোগী ভর্তি থাকে বলে জানা গেছে। বর্হিবিভাগে গড়ে প্রতিদিন ৩০০/৪০০ দরিদ্র রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহন করতে উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চল থেকে আসে।কিন্তু প্রযোজনীয় বিভাগীয় চিকিৎসক না থাকায় অনেক রোগী সেবা না নিয়েই ফিরে যেতে হচ্চে। উপায়হীন এসব রোগীকে বাধ্য হয়ে জেলা সদরের বিভিন্ন ক্লিনিক অথবা বেসরকারী হাসপাতালে চড়া দামে চিকিৎসা সেবা গ্রহন করতে হয়।
উপজেলার চরছান্দিয়া ইউপির দরিদ্র রিক্সা চালক কামাল উদ্দিন জানান দাঁতের চিকিৎসার জন্য তিনি হাসপাতালে গিয়ে দন্ত চিকিৎসক না থাকায় ফিরে এসেছেন। সোনাগাজী সদর ইউপির ছাড়াইতকান্দি গ্রামের গৃহবধু হোসনে আরা জানায়,তার ভাঙ্গা হাতের চিকিৎসার জন্য তিনি হাসপাতালে গেলে তাকে জানানো হয় এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট।সোনাগাজী সদরে ২/১ টি ক্লিনিক থাকলেও সেখানে ভালো মানের এক্স-রে মেশিন না থাকায় তাকে জেলা সদরে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়েছে।
সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক হিরন জানান,স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী প্রসুতি সেবা কার্যক্রম না থাকায় রোগীদের কে বাধ্য হয়ে ফেনী সদর হাসপাতাল অথবা বেসরকারী ক্লিনিকে যেতে হয় যার কারনে দরিদ্র রোগীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে জানতে স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী রহিম উল্যাহর সাথে যোগাযোগ করা তিনি জানান,প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার জন্য একাধীকবার সিভিলি সার্জন,স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রির কাছে লিখিত অনুরোধ করেছেন কিন্তু অজ্ঞাত কারনে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছেনা। সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা নুরুল আলম চিকিৎসক-কর্মচারী ও যন্ত্রপাতি সংকটের সত্যতা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, চিকিৎসক সংকট এবং এক্স-রে মেশিনসহ বিভিন্ন বিভাগের যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকার বিষয়ে একাধীকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি আরো জানান, ২১ জন চিকিৎসকের মধ্যে কর্মরত ২জন চিকিৎসক দিয়ে চরম সংকটের মাঝেও রোগীদেও চিকিৎসা সেবা দিতে সাধ্যমত চেষ্টা করে যচ্ছি।সম্প্রতি ৩ জন চিকিৎসক হাসাপাতালে নিয়োগ দেওয়া হলেও তারা কেউ যোগদান করেনি।
এবিএন/আবুল হোসেন রিপন/জসিম/তোহা