বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • গোদাগাড়ীতে ফুফুর হাঁসুয়ার আঘাতে শিশু তামিম নিহত

গোদাগাড়ীতে ফুফুর হাঁসুয়ার আঘাতে শিশু তামিম নিহত

গোদাগাড়ীতে ফুফুর হাঁসুয়ার আঘাতে শিশু তামিম নিহত

গোদাগাড়ী (রাজশাহী), ৩০ এপ্রিল, এবিনিউজ: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার শিশু তামিমের খুনের রহস্য উৎঘাটন হয়েছে। ফুফুর হাঁসুয়ার আঘাতে সাড়ে তিন বছরের এই শিশু খুন হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল্লাহ তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। নিহত তামিম উপজেলার মাটিকাটা বাইপাস-উজানপাড়া গ্রামের রাসেলের ছেলে। গত শুক্রবার সকালে বাড়ির সামনের একটি মাচার নিচ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সে নিখোঁজ ছিল। আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশী সবখানে খোঁজ করা হয়েছে। এমনকি এলাকায় মাইকিং করা হয়, কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি এরপর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তামিমের মরদেহ বাড়ির সামনে পাওয়া যায়। পরে খবর পেয়ে সকালে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

নিহতের বাবা পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তামিমের বড় বোন নুশরাত জাহান রিয়া প্লে-গ্রুপের ছাত্রী। পরে তামিমের দাদার কথা অনুযায়ী দাদী ও ফুফু রুবিনা বাইরে এসে খড়ের মাচার নিচে জাল দিয়ে ঢাকা গাছের ছাল দিয়ে পা ও পেট বাধা ও প্লাষ্টিকের বস্তা দিয়ে গলা প্যাচানো ও মাথা ফাটা অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়। এ সময় পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়লে প্রতিবেশীরাও ছুটে আসেন।পুলিশ বলছে, এই সোনিয়ার হাতেই ‘অনিচ্ছাকৃতভাবে’ খুন হয়েছে তামিম।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে হাঁসুয়া দিয়ে সবজি কাটার সময় হাঁসুয়ার বাট খুলে যায় ফুফু সোনিয়ার কাছে। এতে হাঁসুয়ার বাট লাগানোর সরু লোহার অংশটি বেরিয়ে যায়। মাটিতে বাড়ি দিয়ে সেই বাট লাগানোর চেষ্টা করছিল। তখন তামিম ফুফুর কাছে গেলে তামিমের মাথায় হাঁসুয়ার সরু লোহার অংশ ঢুকে যায় এবং এতে তার মাথায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। সঙ্গে সঙ্গে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশু তামিম। ওই সময় তামিমের মা ঘুমাচ্ছিলেন।

সোনিয়া বিষয়টি প্রথমে তার বড় বোন রাবিয়া খাতুন (২২) ও পরে মা নার্গিস বেগমকে (৪৭) জানায়। এভাবে শিশুটির মৃত্যু হওয়ায় তারা ভয় পেয়ে যান। এরপর তারা সবাই মিলে মরদেহটি মাচার নিচে নিয়ে গিয়ে রেখে দেন এবং ঘটনাটি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন।

এসপি আরো জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় পরিবারের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু কারও সঙ্গে কারও কথার মিল পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই রোববার সোনিয়া, রাবেয়া ও তাদের মা নার্গিসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হলে রাতে তারা তামিমের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা পুলিশের কাছে বর্ণনা করেন। এ ঘটনার জন্য তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে তোলা হয়। সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন।

মো. শহীদুল্লাহ জানান,তামিমের মৃত্যুর ঘটনা দুই ফুফু,দাদী জানলেও তার মা, বাবা ও দাদাকে জানতে দেইনি কেও। এসপি আরও বলেন, তামিমের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা রাসেল অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। সে মামলাতেই এই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। নিহত তামিমের মরদেহের ময়নাতদন্তও করা হয়েছিল। তবে তার প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। আপাতত ‘অনিচ্ছায়’ তামিম খুন হয়েছে বলে জানা গেলেও অন্য কোনো কারণ আছে কিনা বা ঘটনাটি আর কেউ জানতেন কিনা সে বিষয়ে তদন্ত চলছে বলেও জানান জেলা পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।

এবিএন/শামসুজ্জোহা বাবু/জসিম/তোহা

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত