![‘ইরানের গোপন পরমাণু কর্মসূচির প্রমাণ ইসরায়েলের হাতে’](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/05/01/israil_137620.jpg)
ঢাকা, ০১ মে, এবিনিউজ : তেহরানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি ক্ষুণ্ন করে পারমাণবিক কর্মসূচি চলমান রেখেছে ইরান।
নেতানিয়াহুর দাবি, প্রমাণ হিসেবে ইসরায়েলের হাতে গোপন পরমাণু কর্মসূচি সংক্রান্ত নথির অনুলিপি রয়েছে।
তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তেহরানের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করে আসছেন। অবশ্য বারবার হুমকি দিলেও চুক্তি থেকে বের হয়ে যাননি তিনি। চলতি মাসে নির্ধারিত তারিখে ট্রাম্প চুক্তি নবায়নের সিদ্ধান্ত না নিলে আবারও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়বে তেহরান।
ঠিক এমন সময়, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মিত্র ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের প্রমাণ হাতে থাকার দাবি তুলল।
ইরান এ দাবিকে হাস্যকর আখ্যা দিয়ে নাকচ করে দিয়েছে।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, জার্মানি ও ফ্রান্সের কাছে ইউরোনেয়িাম প্রকল্প সীমিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান। চুক্তির মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত। তবে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজ চায় ইউরোপীয় স্বাক্ষরকারীরা ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের বিষয়ে স্থায়ী অবরোধ আরোপ করুক। যদিও চুক্তি স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলো কোনোভাবেই এতে রাজি নয়। যুক্তরাষ্ট্রের একা এই চুক্তি বাতিলের এখতিয়ার নেই বলেও দাবি তাদের।
যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী প্রতি ৯০ দিন পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিশ্চিত করতে হয় যে, ইরান এ সমঝোতা মেনে চলছে। যদি তিনি বলেন, তেহরান সমঝোতা মানছে না তাহলে মার্কিন কংগ্রেস এ সমঝোতা বাতিল করতে বাধ্য। ২০১৫ সালে জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন-জেসিপিওএ’র আওতায় ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ১২ মে ট্রাম্প চুক্তিটি নতুন করে নবায়ন না করলে নিষেধাজ্ঞাগুলো আবার কার্যকর হবে। ইউরোপিয়ান শক্তিগুলোকে ওই চুক্তির ‘ভয়ংকর ত্রুটিগুলো পুনর্বিবেচনা করতে’ ওই তারিখ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন তিনি।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে নেতানিয়াহুকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকার দাবি নিয়ে তিনি ইরানের পরমাণু কর্মসূচি চলমান থাকার কথা জানিয়েছেন।
সোমবার তেল আবিবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া বক্তব্যে এই দাবি করেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ‘আমি আজ রাতে আপনাদের বলতে চাই, ইরান মিথ্যা বলছে। ২০১৫ সালে চুক্তি হলেও এখনো তারা পরমাণু পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে।’
নেতানিয়াহু বক্তব্যে দাবি করছেন, ২০১৫ সালের পরও পরমাণু পরীক্ষা চলমান রয়েছে। এ সংক্রান্ত নথিগুলো গোপনে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে তেহরান। তিনি দাবি করেছেন, শোরাবাদ জেলার একটি স্থানে পরমাণু সংশ্লিষ্ট ব্লুপ্রিন্ট, ছবি, ভিডিওসহ প্রায় ১ লাখ ফাইল লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগশি নেতানিয়াহুর দাবিকে ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে মন্তব্য করেছেন, বিগত বছরগুলোতেও এমন শিশুসুলভ কথা বলেছেন নেতানিয়াহু। আরগাশি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন ইরান তাদের গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো পরিত্যক্ত স্থানে রাখবে?
উল্লেখ্য, ওবামা প্রশাসনের সময় ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে তেহরানের সম্পাদিত পরমাণু চুক্তিতে শুরু থেকেই নেতিবাচক অবস্থান থেকে দেখছে তেল আবিব।
এবিএন/সাদিক/জসিম