![পপ ভিডিও ‘তোরি সুরত’ নিয়ে ক্ষিপ্ত ভারতীয় সুফিরা](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/05/02/sufi_137722.jpg)
ঢাকা, ০২ মে, এবিনিউজ : ভারতে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে বিতর্কের আবহে এবার যোগ হল সুফি মতাবলম্বীদেরও নাম।
জনপ্রিয় পপশিল্পী সোনা মহাপাত্রর একটি মিউজিক ভিডিও ‘অশ্লীল’ এবং সুফি ভাবধারার সঙ্গে খাপ খায় না - এই যুক্তিতে তাকে সেটি তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছে ভারতের মাদারিয়া সুফি ফাউন্ডেশন।
সোনা মহাপাত্র নিজে মুম্বাই পুলিশের উদ্দেশে একের পর এক টুইট করে জানিয়েছেন, ওই ফাউন্ডেশন তাকে হুমকি দিয়ে ইমেল পাঠিয়েছে এবং হুঁশিয়ারি দিয়েছে গানটি প্রত্যাহার না-করা হলে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাও ছড়াবে।
শিল্পীর যে গানটি নিয়ে এই বিতর্ক, তার নাম ‘তোরি সুরত’।
কাওয়ালির সম্রাট বলে পরিচিত কবি আমির খশরু তার প্রিয় গুরু নিজামুদ্দিন আউলিয়ার উদ্দেশে ৭০০ বছর আগে এই নামে একটি গান লিখেছিলেন, সোনা মহাপাত্রর মিউজিক ভিডিওটি তার ওপরেই ভিত্তি করে।
কিন্তু সোনা মহাপাত্রকে পাঠানো হুমকি ইমেলে মাদারিয়া সুফি ফাউন্ডেশন লিখেছে, ‘তোরি সুরত’ মিউজিক ভিডিওতে যেভাবে ‘ঐশী নারীশক্তির পার্থিব চরিত্রায়ন করা হয়েছে’ এবং ‘স্লিভলেস জামা পরে শরীর-দেখানো পোশাকে মেয়েরা নাচছে’ তা কিছুতেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
তারা বলিউডের এই জনপ্রিয় সঙ্গীত তারকাকে ‘রেগুলার অফেন্ডার’ (অর্থাৎ যিনি নিয়মিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অপরাধ করে থাকেন) বলেও অভিহিত করেছেন।
মাদারিয়া সুফি ফাউন্ডেশন কোক স্টুডিওতে গাওয়া সোনা মহাপাত্রর বছরপাঁচেক আগের একটি সুফিয়ানা কালামের গান নিয়েও তার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছে।
‘পিয়া সে নয়না’ নামে সোনার ওই গানটিকে তারা ইসলাম-বিরোধী বলে দাবি করেছে - কারণ সেটিতে না কি শিল্পী নিজের ‘শরীর-দেখানো পোশাক’ পরে গেয়েছেন এবং ‘পশ্চিমী মিউজিক’ ব্যবহার করেছেন।
দিল্লির নিজামুদ্দিন দরগা কর্তৃপক্ষও সুফি ফাউন্ডেশনের এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে বলে সোনা জানিয়েছেন।
সোনা মহাপাত্র অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন তিনি এই সব হুমকিতে ভয় পাচ্ছেন না এবং তার সুফিয়ানা কালামের এই সব গান তুলে নেওয়ারও কোনো প্রশ্ন নেই।
তার অভিযোগের ভিত্তিতে মুম্বাই পুলিশ এই হুমকির ঘটনায় তদন্তও শুরু করেছে। তবে এই বিতর্ক সামনে আসার পর মাদারিয়া সুফি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমে কেউ এখনো মুখ খোলেননি।
মাদারিয়া হল সুফি মতাবলম্বী মুসলিমদের একটি সেক্টর, উত্তর ভারতে, বিশেষত উত্তরপ্রদেশের কানপুরে, হরিয়ানার মেওয়াটে এবং তা ছাড়াও বিহার, গুজরাট ও পশ্চিমবঙ্গের কোনো কোনো এলাকাতেও তাদের বেশ কিছু অনুসারী আছেন।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
এবিএন/সাদিক/জসিম