![বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ২০ শহরের মধ্যে ১৪টিই ভারতে](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/05/03/pollu-1_137857.jpg)
ঢাকা, ০৩ মে, এবিনিউজ : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পৃথিবীর সবথেকে বেশি দূষিত ২০টি শহরের মধ্যে ১৪টিই আছে ভারতে।
এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে ‘হু’ জানিয়েছে, সব থেকে দূষিত শহর হলো উত্তর প্রদেশ রাজ্যের কানপুর । সেখানে শূন্যে ভাসমান কণার পরিমাণ নিরাপদ স্তরের থেকে প্রায় ১৭ গুণ বেশি।
পিছিয়ে নেই জাতীয় রাজধানী দিল্লি আর তার লাগোয়া ফরিদাবাদ, বা উত্তর প্রদেশের প্রাচীন শহর বারাণসী।
বিজ্ঞানী ও পরিবেশবাদীরা বলছেন, দূষণ নিয়ন্ত্রণের দিকে নজর না দিয়ে উন্নয়ন আর শিল্পায়ন হয়েছে এই ভারতীয় শহরগুলোতে, আর এটাই ব্যাপক বায়ুদূষণের একটা বড় কারণ।
পৃথিবীর ২০টি সবচেয়ে দূষিত শহরের যে তালিকা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশ করেছে তাতে ভারতের শহরগুলি ছাড়াও কুয়েত, চীন আর মঙ্গোলিয়ার কয়েকটি শহর আছে।
পৃথিবীর ৪ হাজারেরও বেশি শহরে বায়ুতে ভাসমান ধুলিকণার নিয়মিত পরিমাপ বিশ্লেষণ করে ‘হু’ এ তালিকা বানিয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের যে কানপুর শহরকে সবথেকে দূষিত শহর বলা হচ্ছে, সেখানকার একজন আইনজীবি ও পরিবেশবাদী রবি শর্মা জানাচ্ছিলেন, কেন তাদের শহরে বায়ুদূষণের পরিমাণ এত বেশি।
তিনি বলেন, আমাদের শহরে গাছগাছালি খুবই কম। যদিও একটি মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী ১৬ % জমি পার্ক বা বৃক্ষায়ণের জন্য রাখা ছিল। কিন্তু সেই সব জমি অন্য কাজে বিলি অথবা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। আইন বাঁচিয়েই করা হচ্ছে ব্যাপারটা। শহরের আয়তন বৃদ্ধি করে দেখানো হচ্ছে যে নির্দিষ্ট পরিমান জমি সবুজায়নের জন্য রাখা হচ্ছে। কিন্তু সরকারের হিসাবেই শহরের পুরেেনা শহরের মাত্র এক শতাংশ জমিতে পার্ক রয়েছে।
রবি শর্মা বলেন, ‘এ ছাড়াও রাস্তা তৈরি হচ্ছে, অথচ তার পাশে আইন অনুযায়ী গাছ লাগানো হচ্ছে না, উন্মুক্ত মাটি রেখে দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে ধুলিকণা অত্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে।
পরিবেশ দূষণ ক্ষেত্রে ভারতের নামকরা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সেন্টার ফর সায়েন্স এন্ড এনভায়রনমেন্টের বা সিএসইর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞ অনুমিতা রায়চৌধুরী বলেন, উন্নত দেশগুলোতে গোড়া থেকেই দূষণ নিয়ন্ত্রণের ওপরে কড়া নজর দিয়েছিল, যেটা ভারতে করা হয় না। শিল্পোন্নত দেশগুলিতেও গোড়ার দিকে বায়ুদূষণের প্রবল সমস্যা ছিল। লন্ডন স্মগ বা পেনসিলভানিয়া স্মগের কথা সকলেই জানি। কিন্তু ওখানে যেটা করেছিল যে, শিল্পোন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গেই পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রনের ওপরেও ব্যাপক জোর দেওয়া হয়েছিল। আমাদেরও উন্নত হতে হবে, কিন্তু একই সঙ্গে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি বা আইনগুলোকে কড়া ভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
বলা হচ্ছে, সারা পৃথিবীতে প্রতিবছর শুধুমাত্র বায়ুদূষণের কারনেই ৪২ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছেন।
পরিবেশবাদীদের আশা, যদি নিজের বা কাছের মানুষদের স্বাস্থ্যের ওপরে বায়ুদূষণের এ ভয়াবহ প্রভাব দেখে নাগরিকদের বা আইন রক্ষকদের চেতনা জাগে।
সূত্র : বিবিসি
এবিএন/সাদিক/জসিম