![বোয়ালখালীতে নির্বাচন ছাড়াই চলছে দুই ইউনিয়ন পরিষদ](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/05/03/up_abnews_137928.jpg)
বোয়ালখালী (চট্টগাম), ০৩ মে, এবিনিউজ : বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল ও পশ্চিম গোমদনন্ডী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়েছিল ২০০৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। সেই নির্বাচনে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্যরাই পরিষদ পরিচালনা করছেন দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে। ফলে এলাকার আশানুরূপ উন্নয়ন হচ্ছে না বলে দাবি এ দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের।
জানা গেছে, কধুরখীল ইউনিয়নের ৩ ওয়ার্ড ও পশ্চিম গোমদন্ডী ইউনিয়নের ৬ ওয়ার্ড বোয়ালখালী পৌরসভায় অর্ন্তভুক্ত করায় সীমনা জটিলতায় পড়ে এ দুই ইউনিয়ন পরিষদ। এ দুই ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত রেখে ২০১১ সালের ২৫ জুন ও ২০১৬ সালের ২৮ মে উপজেলার চরণদ্বীপ, শাকপুরা, পোপাদিয়া, কড়লডেঙ্গা, আমুচিয়া, সারোয়াতলী ও শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ধারা ২৯ (১) অনুযায়ী নির্বাচিত পরিষদের ১ম সভা থেকে পরবর্তী ৫ বছর উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকা যাবে এবং এর পরবর্তী ১৮০দিনের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। এছাড়া ২০০৮ এর ধারা ২৯ (৫) অনুযায়ী কোনো দৈব-দুর্বিপাকে নির্বাচন না হলে প্রশাসক নিয়োগ করার বিধান রয়েছে আইনে।
এর প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের জুন মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ দুই ইউনিয়নের সীমানা, নির্বাচন ও প্রশাসনিক বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা চেয়ে মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছিলেন। ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বরে স্থানীয় সরকার বিভাগ কধুরখীল ও পশ্চিম গোমদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের নির্বাহী আদেশ দেওয়া হয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে কধুরখীল ইউপি চেয়ারম্যান ও পশ্চিম গোমদন্ডী ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান উচ্চ আদালতে স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেন। উচ্চ আদালত প্রশাসক নিয়োগে ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর তিন মাসের স্থগিতাদেশ দেন।
তবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখার এক আদেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর কধুরখীল ইউনিয়ন পরিষদ পুন:গঠন ও সীমানা নির্ধারণ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও প্রকল্প কর্মকর্তাকে সহকারী সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা নিয়োগ করেন। তাদের প্রস্তাবের প্রেরণের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই প্রস্তাবিত ইউনিয়নের সীমানার গেজেট প্রকাশের জন্য বাংলাদেশ ফরম ও প্রকাশনা অফিসে চিঠি দেয়।
চিঠির বিপরীতে বাংলাদেশ ফরম ও প্রকাশনা অফিস ১৫ নভেম্বর কধুরখীল ইউনিয়নের সীমানার চৌহদ্দী না থাকায় গেজেট প্রকাশ করা যাচ্ছে না মর্মে উপজেলা সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) চিঠি দেয়। এরই প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) চৌহদ্দী উল্লেখপূর্বক ফের গেজেট প্রকাশের চিঠি দেয় ওই অফিসে।
সর্বশেষ ৪ মার্চ কধুরখীল ইউনিয়ন ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ এবং ওয়ার্ড সমূহের চুড়ান্ত তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করেছেন বলে জানান উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. ফোরকান এলাহী অনুপম।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আছিয়া খাতুন বলেন, কধুরখীল ইউনিয়ন পরিষদের সীমানা নির্ধারন নিয়ে শুনানী শেষ হয়েছে। চুড়ান্ত তালিকা গেজেট প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। কধুরখীল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন এখন সময়ের ব্যাপার।
জানা গেছে, কধুরখীল ইউনিয়নের ৬ ওয়ার্ডের আয়তন প্রায় ২০ বর্গকিলোমিটার ও জনসংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। তবে পশ্চিম গোমদন্ডীর তিন ওয়ার্ডে জনসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার ৮১০ জন। এ তিন ওয়ার্ড নিয়ে পশ্চিম গোমদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করা যাবে কি না এ প্রশ্নের উত্তর কারো জানা নেই।
এবিএন/রাজু দে/জসিম/এমসি