ঝিনাইদহ, ০৪ মে, এবিনিউজ : ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মান্দারতলা গ্রামের বাসন্তী অপেরা যাত্রা মেলার নামে চলছে উলঙ্গ নৃত্য। মেলার ঐতিহ্য ভেঙে অশ্লীলতার বিষ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যুবতী মেয়েরা মঞ্চে উলঙ্গ হয়ে নাচছে। আর নগ্নতার শেষ দৃশ্য পর্যন্ত অবলোকন করছে যুব সমাজ।
ফলে বেসামাল যুব সমাজ যাত্রা ও ভ্যারাইটি শো'র নামে আয়োজিত অপসাংস্কৃতি দেখতে ছুটছে মহেশপুর উপজেলার মান্দারতলা গ্রামের বাসন্তী অপেরা যাত্রা মেলায়। মেলায় নগ্নতার পাশাপাশি চালু আছে মদ,গাঁজা, ইয়াবা, জুয়ার আসর, হাউজি, চরকি, ওয়ানটেন, ফোরগুটি। জুয়াড়ি মেহমানদের ফূর্তি করার জন্য বাইরে থেকে যুবতী মেয়েদের আনা হয়েছে বলেও গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। আয়োজকদের এসব কর্মকান্ডে চারিদিকে 'ছি ছি' রব উঠেছে যে, মহেশপুর মান্দারতলার মেলায় হচ্ছেটা কী?
জানা গেছে, যাত্রা প্যান্ডলে রাত ১২টা থেকে ভোর পর্যন্ত শুধুই অশ্লীলতা ও বিকৃত যৌন আবেদনে ভরা উলঙ্গ নৃত্য এবং অরুচিকর গানের আগ্রাসন। উঠতি বয়সের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও গ্রাম্য যুবকসহ দূর-দূরান্তের বিকৃত মানসিকতার মানুষের উপচেপড়া ভীড়। তাদের আড্ডায় জমে উঠছে মেলা প্রাঙ্গণ। অশ্লীল নৃত্য চলাকালিন যাত্রা প্যান্ডেলে মহেশপুর থানার একাধিক পুলিশ সদস্যকে পোষাক পরিহিত অবস্থায় নারীদের নগ্ন নৃত্য উপভোগ করতে দেখা যায়।
যাত্রা ও ভ্যারাইটি শো’র প্যান্ডেলে ১০০ থেকে শুরু করে ২০০ টাকায় দেখা যাচ্ছে অশ্লীল এ নাচ। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত ১০ বা ২০ টাকা দিলে নৃত্যরত তরুণীর সংবেদনশীল স্থানে অবাধে হাত দেওয়া যাচ্ছে। এতে বিপথগামী হচ্ছে উপজেলার ছাত্রসহ তরুণ যুব সমাজ। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ব্যক্তির প্রত্যক্ষ ইন্ধনে পুলিশের সামনেই চলছে এসব অসামাজিক কার্যকলাপ। আয়োজকদের এই ঘৃণিত কর্মকান্ডে মেলায় ভালো মানুষের সমাগম কমে এসেছে।এছাড়া এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ১৫ মে। একদিকে এইচএসসি পরীক্ষা ও ডিগ্রি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ১২ মে ,এর মধ্যে প্রশাসনের যাত্রার অনুমতি দেয়ায় হতবাক হয়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকার সাধারণ মানুষ। মেলাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে জমজমাট মাদকের হাট।
আবার প্রতিযোগিতামূলক ভাবে চলছে গাঁজা ও ইয়াবা সেবন। অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধ না করে উল্টো তাদের উৎসাহিত করছে বলে সচেতন মহলের অভিযোগ। কথা হয় মেলা দেখতে আসা ফরিদের সাথে। তিনি বলেন, এসেছিলাম মেলা দেখতে তবে একা কারণ মেলার যে অবস্থা তাতে পরিবার নিয়ে তো আসা অসম্ভব।
তহিদুল নামের আরেকজন বলেন, এ রকম মেলার নামে অশ্লীলতায় তরুণ ছেলে মেয়েরা খারাপের দিকে ধাবিত হবে। নাটিমা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, জুয়া, হউাজি, ওয়ানটেন, অশ্লীলতা আর নগ্ন নৃত্যের কারণে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি পুলিশের খোঁজ-খবর রাখার কথা। এ ধরণের ঘটনা ঘটলেও তারা আমাকে কিছু জানাইনি।
মহেশপুর থানার ওসি লস্কর জায়াদুল বলেন, বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিএন/যবনিকা/জসিম/এমসি