
সিলেট, ০৫ মার্চ, এবিনিউজ : সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলার রায় আগামী ৮ মার্চ ঘোষণা করা হবে। আজ রবিবার দুপুরে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা রায়ের এই তারিখ নির্ধারণ করেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বুধবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের কারণে সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরোর আদালত থেকে মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। আজ রবিবার আদালতে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন উভয় পক্ষের আইনজীবীরা।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ‘আদালত রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শুনেছেন। দণ্ডবিধির ৩২৬, ৩২৪ ও ৩০৭ ধারায় রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে আসামির অপরাধ প্রমাণ করতে পেরেছে। আমরা আশবাদী মামলায় একমাত্র আসামি বদরুলের সর্বোচ্চ সাজার রায় ঘোষণা করা হবে। ৮ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টায় বাংলায় এ রায় ঘোষণা করার কথা রয়েছে।’
অপরদিকে আসমিপক্ষের আইনজীবী সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘বেশ কিছু গ্রাউন্ডে আমরা আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করেছি। আশা করছি, আদালত সে বিষয়গুলো বিবেচনা করে রায় দেবে। বদরুল খালাস পাবে বলে আশা করছি।’
তিনি দাবি করেন, ঘটনার সময় বদরুল মাদকাসক্ত ছিলেন। তাই সে সময় সে কি করেছে, তা বোঝেনি। এছাড়া বদরুল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী ছাত্র। সে বিষয়েও আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে সাক্ষ্য দেন হামলার শিকার খাদিজা বেগম নার্গিস। মামলায় মোট ৩৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৪ জন সাক্ষ্য দেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য প্রদানকালে খাদিজা আদালতকে বলেন, ‘আমার শরীরের যে যে স্থানে আসামি আঘাত করেছে, সেসব জায়গায় দাগ আছে। সে আমাকে সারা জীবনের জন্য প্রতিবন্ধী করেছে। আমি আসামি বদরুলের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। আমি বিচার চাই।’
প্রসঙ্গত, গত ৩ অক্টোবর এমসি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর হামলার শিকার হন স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস। শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ ক্যাডার বদরুল আলম চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে খাদিজাকে। বর্বর হামলার ভিডিও আকারে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে তোলপাড় শুরু হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে খাদিজাকে সিলেটের ওসমানী হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরবর্তীতে পুনর্বাসনের জন্য সাভারের সিআরপিতে পাঠানো হয় খাদিজাকে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সিআরপিতে প্রায় তিন মাস চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে নিজ বাড়ি সিলেটের আউশায় ফিরেন কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিস।
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি