
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদ্রাসাকরণ প্রক্রিয়া আসলে একদিনে হয় নাই ।
জসিম উদ্দিন হলের রাত্রিকালীন আড্ডা বন্ধে রাত ১১ টার পর ১৪৪ ধারা জারি হইছে ,
আমার বঙ্গবন্ধু হলে আগে থেকেই ১১ টার পর হুলিয়া ,
একাত্তর হলের সামনের সব দোকান উঠিয়ে দেয়া হইছে,
মুহসিন হলের মাঠের কোণার রাঙুনিয়া বসুনিয়ার দোকান উঠিয়ে দেয়া হইছে,
সার্বজনীন আড্ডাবাজির ব্লেইমে মুহসিন হলের বাইরের দোকান ভেতরে নেয়া হইছে ,
ছবির হাট ভেঙে দেয়া হইছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সান্ধ্য আইন জারি করা হইছে ।
একাধিকবার পলাশীর দোকান বন্ধ হইছে।
আমরা ফার্স্ট ইয়ারে ক্যাম্পাসে এসে যে উৎসব মুখরতা পাইছি তার চারভাগের একভাগও আমাদের কোন জুনিয়র ব্যাচ পায়নি।
সেদিন ভাইব্রাদারের রাতের এক আড্ডায় জ্ঞানের বিভিন্ন শাখার বিশ্লেষণ দেখে আরেক ভাইকে বলছিলাম , আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হলে এই টপিকটা তো বুঝতামই না বরং এই জায়গার স্টুডেন্টদের এলিয়েন মনে হইতো এবং আমি সত্যিই ভাগ্যবান।
আমার বলতে দ্বিধা নাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আমার যা শিক্ষা তা এই জায়গার দেয়াল লিখনও যতটুকু দিতে পারছে তার সিকিভাগও এখানকার ক্লাসরুম দিতে পারেনি , আমার শিক্ষার পুরোটাই পাইছি এসব আড্ডার আসরে।
এখানে আড্ডা শুরু হবে মনির ভাইয়ের দোকান নিয়ে আর আড্ডা শেষ হবে পারমানবিক বোমার উচ্চতর বিশ্লেষণ দিয়ে অথবা বিশ্বরাজনীতির আদ্যোপান্ত দিয়ে।
এসব সিদ্ধান্ত বন্ধের পেছনে যদি শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা বলেন , " রাত ৮টার পর কি কোন ভাল ছেলেমেয়ে ঘরের বাইরে থাকে?এশার নামাজের পর ঘুমাইতে গেলে না ফজরের নামাজ ধরতে পারবা''
তবে আমার আর বলার কিছু নাই!!
সামনের পুতুল হিসেবে দাঁড়া করানো হয় সব সময় নিরাপত্তা কে।
একাত্তরের ছেলে জসীমউদ্দিনে গিয়ে আড্ডা দিলে নিরাপত্তা ক্ষুন্ন হয়, মুহসিন হলে অন্য হলের ছেলেপেলে আড্ডা দিলে নিরাপত্তা ক্ষুন্ন হয় , রাত ১১ টা ১২ টার পর ছেলেপেলে বাইরে আড্ডা দিলে নিরাপত্তা ক্ষুন্ন হয় কিন্তু ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের বাইক রেস হলে , পার্ক বাণিজ্য হলে নিরাপত্তা সঙ্কট হয়না।
বহিরাগতদের দখলে থাকা ক্যাম্পাস টা যখন রাতের বেলা একান্ত নিজের মনে হয় তখন আমরাই আমাদের ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা সঙ্কট ঘটাই। ভাল তো !!
বাকি ছিল টিএসসি , এটারও নুনু কাটিয়ে ষোল কলা পূর্ণ হইল জাস্ট !!
রাইয়ান কামাল’র স্ট্যাটাস থেকে