![...ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পর এখন বলাই যায়, ‘আজ থেকে স্বাধীনতা শব্দাটি সবার](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/11/02/probhash_108731.jpg)
মাত্র ১৮ মিনিটে এক হাজার ৮৬ শব্দে একটি জাতির ২৩ বছরের বঞ্চনার ইতিহাস ধারণ করে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে মূর্ত করা- কল্পনাকেও হার মানায়। কোনও লিখিত স্ক্রিপ্ট ছাড়া এমন একটি মহাকাব্য লেখা সম্ভব? শুনলে মনে হবে, একটুও মেদ নেই, একটিও বাড়তি শব্দ নেই। অথচ কোনও না বলা কথা নেই। সব দাবি ওঠে এসেছে নিপুণভাবে, সব আবেগ ওঠে এসেছে দারুণভাবে। দাবি আছে, হুমকি আছে। বঙ্গবন্ধু বলেছেন হৃদয় থেকে, কিন্তু তাতে বিবেচনার অসাধারণ মিশেল।
৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে মজার গল্প বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে গিয়েছিলেন এক বিদেশি সাংবাদিকের দোভাষী হিসেবে। সেই সুবাদে মঞ্চের খুব কাছে বসার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। ভাষণের শুরুতে তিনি বঙ্গবন্ধুর ভাষণ অনুবাদ করার চেষ্টা করলে সেই সাংবাদিক তাকে ইশারায় থামিয়ে দেন। পরে সেই সাংবাদিক তাকে বলেছেন, অনুবাদ করার দরকার নেই। বঙ্গবন্ধু কী বলেছেন, তা হয়তো বোঝেননি সেই সাংবাদিক। তবে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের আবেগটা ধরতে তার কোনোই অসুবিধা হয়নি।
যতবার এই ভাষণটি আমি শুনি, ততবারই আমি কিছু না কিছু শিখি। যেমন বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ শুনে গণতন্ত্র সম্পর্কে আমার ধারণাই বদলে গেছে। আমি এখন সংখ্যাগরিষ্ঠতার গণতন্ত্র নয়, ন্যায্যতার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আর ন্যায্যতার গণতন্ত্রের শেষ কথা মানি বঙ্গবন্ধুর ভাষণকেই ‘আমি বললাম, এসেম্বলির মধ্যে আলোচনা করবো- এমনকি আমি এ পর্যন্তও বললাম, যদি কেউ ন্যায্য কথা বলে, আমরা সংখ্যায় বেশি হলেও একজনও যদি সে হয় তার ন্যায্য কথা আমরা মেনে নেব।’ যদিও সেই ন্যায্যতার গণতন্ত্রের ধারণা থেকে বাংলাদেশ এখন অনেক দূরে। ন্যায্যতা নয়, এখন চারপাশে এখন শুধু প্রতিহিংসা।
নির্মলেন্দু গুণ তার কবিতা শেষ করেছিলেন, ‘সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।’ ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পর এখন বলাই যায়, ‘আজ থেকে স্বাধীনতা শব্দাটি সবার।’
আজ থেকে স্বাধীনতা শব্দটি সবার
প্রভাষ আমিন’র স্ট্যাটাস থেকে