![সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ইউনেস্কো...](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/11/25/ratan_112541.jpg)
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ইউনেস্কো
৭ই মার্চ ১৯৭১, বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় দিন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যাঁর অনন্যসাধারণ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি একটি স্বাধীন- সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছে। ১৯৭১ সালের এ দিনে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে অসীম সাহসিকতার সাথে রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশে বলিষ্ঠ কণ্ঠে যে ভাষণ প্রদান করেন তা বাঙালি জাতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ঐতিহাসিক সেই ভাষণ এদেশের জনগণকে দারুণভাবে আন্দোলিত করে এবং মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করে। ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠের ঘোষণা ‘‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম-এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’’ ছিল স্বাধীনতার ডাক। এই উচ্চারণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু কেবল স্বাধীনতার চূড়ান্ত আহ্বানটি দিয়েই ক্ষান্ত হননি, স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের রূপরেখাও দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা মুক্তিকামী মানুষের কাছে লাল-সবুজ পতাকাকে মূর্তিমান করে তোলে। আর এরই মাধ্যমে বাঙালির ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হয়। শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধে নয়, বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ আজও বাঙালি জাতিকে উদ্দীপ্ত করে, অনুপ্রাণিত করে। ঐতিহাসিক ভাষণের সেই ধারাবাহিকতায় ২৬ মার্চ ১৯৭১ জাতির জনক বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ মহান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। জাতির জনক এই সম্মোহনী ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশব্যাপী সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। তারই ধারাবাহিকতায় ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করি আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা। দীর্ঘ ন’মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি বহু কাঙ্খিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। একটি জাতি বিশ্বের বুকে মাথা তুলে বিজয়ীর বেশে এক নতুন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা করে। আর প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রের রূপকারকে তখন বিশ্ব অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখে। বিশ্বে তখন দুটি শব্দ এক হয়ে ধ্বনিত হতে থাকে বাংলাদেশ ও মুজিব। আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে তাই ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ আমাদের প্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ভাষণ। বাঙালির বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে জাতির জনকের ঐ ভাষণের দিক-নির্দেশনাই ছিল সে সময় বজ্র কঠিন জাতীয় ঐক্যের মূলমন্ত্র। অসীম ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অমিত শক্তির উৎস ছিল এই ঐতিহাসিক ভাষণ। ১৮ মিনিটের ওই ভাষণ ছিল অলিখিত৷ তিনি সারাজীবন যা বিশ্বাস করতেন, সেই বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করেই ওই ভাষণ দিয়েছিলেন৷ যার আবেদন আজও অটুট রয়েছে।
‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড'-এর স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো৷ 30 সেপ্টেম্বর ফ্রান্সের প্যারিসে ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা এক ঘোষণায় একথা জানান৷ ইউনেস্কো বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ করে৷ ৪৬ বছর আগে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) স্বাধীনতাকামী ৭ কোটি মানুষকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশ বহুদূর এগিয়ে গেল৷ এটা শুধু বঙ্গবন্ধুর স্বীকৃতি নয়, দেশের জন্যও এক বড় স্বীকৃতি৷ এখন এটাকে আরো ছড়িয়ে দিতে হবে৷ বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নেতা ছিলেন না, তিনি বিশ্বের নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের নেতা ছিলেন৷ ২০১৫ সালে ক্যানাডার একজন অধ্যাপক সারা বিশ্বের ঐতিহাসিক ভাষণ নিয়ে একটা গ্রস্থ প্রকাশ করেছিলেন৷ সেখানেও বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ ছিল৷ তখন অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি পেলেও এবার পেলো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি৷''
ইউনেস্কো জানিয়েছে, তাদের ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড (এমওডব্লিউ)' কর্মসূচির ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি গত ২৪ থেকে ২৭ অক্টোবর প্যারিসে দ্বিবার্ষিক বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণসহ মোট ৭৮টি দলিলকে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ' হিসেবে ‘মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিষ্টারে' যুক্ত করার সুপারিশ করে৷ এরপর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা ওই সুপারিশে সম্মতি দিয়ে বিষয়টি ইউনেস্কোর নির্বাহী পরিষদে পাঠিয়ে দেন এবং সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেই তথ্য প্রকাশ করেন৷ এবং তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়৷
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকা সেদিন ছিল মিছিলের শহর৷ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে মানুষ পায়ে হেঁটে, বাস-লঞ্চে কিংবা ট্রেনে চেপে রেসকোর্স ময়দানে সমবেত হয়েছিলেন৷ সবার হাতে ছিল বাংলার মানচিত্র আঁকা লাল সূর্যের অসংখ্য পতাকা৷ বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি আর হাতাকাটা কালো কোট পরে বাঙালির প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু সেদিন দৃপ্তপায়ে উঠে আসেন রেসকোর্সের মঞ্চে৷ভাষণে তিনি বলেন, ‘‘আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়, তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো৷ তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু, আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে৷'' উত্তাল জনসমুদ্র যখন স্বাধীনতার ঘোষণা শুনতে উদগ্রীব, তখন এরপর বঙ্গবন্ধু উচ্চারণ করেন তার চূড়ান্ত আদেশ, ‘‘তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো৷ মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেবো- এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো, ইনশাল্লাহ৷ এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম৷''
ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতির ফলে সারা বিশ্বের মানুষ এখন এটা জানবেন৷ ভবিষ্যতের পর ভবিষ্যত প্রজন্ম এটা জানবেন যে, বঙ্গবন্ধু ছিলেন এমন একজন মহামানব, তিনি কঠিন পরিস্থিতিতে এই ভাষণে ভারসাম্য রক্ষা করেছিলেন৷ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছু না বলে জনগনকে শান্ত রাখতে পেরেছিলেন৷ বিশ্বে আর কোনো রাজনীতিবিদ এটা পেরেছেন বলে আমাদের জানা নেই৷ এই ভাষণ ১২ টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে৷ এটা এখন নিজস্ব গতিতে সবার কাছে পৌঁছে যাবে৷
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা আজ পুনরায় এক ভিন্ন দ্যোতনায় আন্দোলিত হলাম, আনন্দিত হলাম, প্রবল এক আবেগে আপ্লুত হলাম। আপ্লুত হলাম বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের সেই ভাষণ বাঙালির আত্মমুক্তির মন্ত্ররূপে একদিন প্রতিষ্ঠিত হয়ে আজ তা আবার বিশ্বমানবের মুক্তির মন্ত্ররূপে গৃহীত, বিশ্বের সর্বত্র অবিস্মরণীয় ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত হওয়ায়। এমন আনন্দের সংবাদে আমরা আপ্লুত না হয়ে পারি না।
আপ্লুত হওয়ার আরো কারণ আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো- ৭ই মার্চের এই ভাষণসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের অনেক বক্তব্য-ভাষণ, অনেক কথা এই ভূগোল-বাংলায় উচ্চারণ করাও ছিল প্রায় দেশদ্রোহিতার শামিল! এককথায়, ১৯৭৫ পরবর্তী প্রেক্ষাপটে এই নিষ্ঠুর নির্মমতাই ছিল বাঙালির অনিবার্য নিয়তি। ১৯৯৬ সালের জুন মাসের পূর্ব পর্যন্ত বাঙালি সেই নিয়তিকে কোনমতে এড়িয়ে যেতে পারেনি, মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল। সেবছর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর বাঙালির ললাট থেকে কালিমাময় ভ্রান্ত ইতিহাসের অপনোদন ঘটতে শুরু করে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নতুন যুগের সূচনায় ঐতিহাসিক নানা দালিলিক প্রামাণ্য আমাদের সম্মুখে উন্মোচিত হতে শুরু করে। তাই এবার ইউনেস্কো যখন বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের এই ঐতিহাসিক ভাষণকে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় তখন আমাদের নানা কথাই মনে পড়ে। মনে পড়ে কী ভয়ংকর এক অন্ধশক্তির অপশাসনের খপ্পড়ে আমরা পড়েছিলাম! সেইসাথে আমাদের এই জাতিরাষ্ট্র এক মিথ্যা ইতিহাসের চোরাবালির মরীচিকায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল!
মনে পড়ে দীর্ঘ ২১টি বছর সেনা-ছাউনিজাত অপশাসনের নিগড়ে নিমজ্জিত হয়ে আমরা সত্যভাষণ উচ্চারণেও কী পরিমাণে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম! কথায় বলে ‘আগুন কখনো ছাইচাপা দিয়ে রাখা যায় না’। অবশেষে তাই প্রমাণ হলো। কেবল বাংলাদেশেই নয় বিশ্বের সর্বত্রই বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের এই ভাষণ উচ্চারিত হবে। বিশ্ববাসী বঙ্গবন্ধুর এই মহান ভাষণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে নতুন করে চিনতে পারবে। তাই নানা কারণে আজ আমরা আবেগপ্রবণ ও আনন্দে আপ্লুত।
মহান সেই ভাষণের মন্ত্রে উজ্জীবিত বাঙালির মিলিত ঐক্য মাত্র ক’দিনেই সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রকাশ করে তুলেছিল। বাঙালি তার তেজদীপ্ত শৌর্য ও বীর্যের হুংকারে পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটায়। লাখ লাখ বীর বাঙালির প্রেরণায় ছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণসহ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। মরণপণ সংগ্রামে তরুণ, কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র আপামর মেহনতি জনতা মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে মাত্র নয়মাসে মাতৃভূমিকে হানাদার মুক্ত করেন।
" আমাদেরকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় তোমাদের পরিচয় কী, সোজা কথায় উত্তর হবে "আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ , বাংলা আমার ভাষা " এ আত্ম পরিচয়টুকু যিনি আমাদের দিয়ে গেছেন, তিনি বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বীজের আত্মবিকাশের জন্য যেমন কর্ষিত উর্বর ভূমির প্রয়োজন হয়, আর সেই উর্বর ভূমিতে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার বীজ বপন করে এনে দিয়েছেন বাঙালির হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত ফসল 'স্বাধীনতা।' চারদিকে ধ্বনিত হয়েছে পদ্মা মেঘনা যমুনা বাঙালির ঠিকানা।
১৬ই ডিসেম্বর বাঙালির বিজয় সূচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে আমরা পেয়ে যাই লাল-সবুজের পতাকা। আমরা গৌরবান্বিত হই স্বাধীনতার স্বাদ ভোগ করার ক্ষমতা লাভের মাধ্যমে। যার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সেই ‘ভাষণ’ কেবল কতগুলো শব্দগত উচ্চারণমাত্র ছিল না। সেই ভাষণ ছিল বাঙালির আত্মআবিষ্কারের দর্শন, দিগনির্দেশনা। তাই ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ বাঙালি জাতির অহংকারের ধন। বাঙালির অহংকার থেকে মহামানবের মহান সেই ভাষণ এখন মানব ইতিহাসের অহংকাররূপে প্রতিষ্ঠিত।
ইউসেনেস্কো সম্প্রতি ‘মেমোরি অব দ্য ওর্য়াল্ড’ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে স্বীকৃতি দেওয়ায় বিশ্বসভায় আরো একবার বাঙালিকে গৌরবান্বিত করলেন বঙ্গবন্ধু। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে কতভাবেই না ঋণী করেছেন! বঙ্গবন্ধু জন্মেছিলেন বলেই আজ আমরা একটি স্বাধীন দেশের অহংকার করতে পারি, স্বাধীনভাবে ভাবতে পারি, স্বাধীনভাবে স্বপ্ন দেখতে পারি।
সমগ্র বিশ্ববাসীর অহংকারের ধনে পরিণত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ। কবি নির্মলেন্দু গুণ এ ভাষণের উপর ভিত্তি করে লিখেছেন অমর কবিতাখানি “স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো্” । ৭ই মার্চের ভাষণ প্রকৃত অর্থেই এক অসাধারণ কবিতা। এই কবিতার মধ্য দিয়ে তৎকালীন সাড়ে সাত কোটি বাঙালির হৃদস্পন্দন প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিল। পরিশেষে বলবো
সে ছিল দীঘল পুরুষ
হাত বাড়ালেই সম্মূখপানে
ধরে ফেলতো পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইল
আর সাড়ে সাত কোটি হৃদয়।
রতন কুমার মজুমদার’র স্ট্যাটাস থেকে