![...টিটু রায়দের স্ট্যাটাসের বিকৃতি কীভাবে করেছেন ধর্ম উন্মাদরা, তা সহজেই অনুমেয়](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/12/05/hasan_113837.jpg)
●বিনয়ের সঙ্গে ব্যাখ্যা, প্রমাণ চাচ্ছি। অভিনয়শিল্পী অপু-শাকিবের সংসার ভাঙার স্ট্যাটাসে লিখেছি, ‘যা নিতান্তই তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন’। বিয়ের আগে অপু ধমান্তরিত হলেও শাকিব হননি। সিনেমায় শাকিবরা আন্তঃধর্মীয় বিয়ের পক্ষে। ব্যক্তি জীবনে এর প্রয়ােগ ঘটাননি। এটা ‘ধর্ম পরিচয়ের সামাজিকতা রক্ষা’। যা শাকিব নিজের বেলায় বজায় রেখেছেন, অপুর ক্ষেত্রে ছাড় দেননি। স্ট্যাটাসের কোন বাক্যটাতে বলেছি যে, ধর্মের কারণে তাঁদের সংসার ভেঙেছে? বা ধর্মকে আঘাত করেছি?
অভিনয় তারকাদের বিয়ে ভাঙার ঘটনায় অপু-শাকিবই প্রথম নন। পৃথিবীজুড়ে এমন ঘটনা আছে। কারো সংসার ভাঙার জন্য ধর্মকে আজ পর্যন্ত দায়ী করা হয়নি। কোনো ধর্মেই বিশ্বাসী নন, এমন শিল্পীর ঘরও ভেঙেছে। অভিনেত্রী অপুর বেলায় ‘ধর্মের সামাজিকতা রক্ষার’ বিষয়টি এখন বড়ো করে দেখছি কেন? কারণ, তাঁর তো ঘরে ফেরার সুযোগটা নেই। তাঁর বাবা-মায়েরও তো ধর্ম, সামাজিকতা আছে। নাকি ধর্মবোধ শুধু মুসলমানেরই?
অনন্ত জলিলকে লিখেছি, ‘অর্ধশিক্ষিত অভিনেতা’। এর কারণ, তিনি ইসলাম প্রচার করেন, আবার সিনেমাপাড়ারও নট। ধর্ম হিসেবে ইসলামের রক্ষণশীলতা বলুন, বা নিজস্বতা বলুন, এর কোথাও ধর্ম প্রচার করে সিনেমার সঙ্গে যুক্ত থাকার সুযোগ নেই বলেই ধর্মটির বিশারদরা বলে থাকেন। সিনেমায় অভিনয়কে কোরান, হাদিস, ইজমা, কিয়াসের কোথায় সমর্থন করা হয়েছে, সেগুলো আপনাদের কাছে জানতে চাচ্ছি।
মাস কয়েক আগে লিখেছিলাম, শাবানা হচ্ছেন বাঙালি মুসলমানের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী। যে কাজের জন্য তিনি তওবা করেছেন, সেই কাজের জন্য ‘আজীবন সম্মাননা’ও নিয়েছেন। এমন দ্বিচারিতার সুযোগ ধর্মে নেই বলেই এটা লিখেছিলাম। এরপরও অনেকে আমাকে ‘নাস্তিক’ অ্যাখ্যা দিয়ে নিজের জ্ঞান প্রকাশ করেছেন। ইসলাম বিষয়ে জ্ঞানী হতে কারো বাধা নেই। তবে ধর্ম নাশের নামে বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে কারো বিরুদ্ধে উস্কানি দেয়ার অধিকারও প্রকৃত কোনো মানুষের নেই।
৩ ডিসেম্বর একটা স্ট্যাটাসে বক্তব্য ছিলো, মুহ্ম্মদ (সা.) ইসলাম ধর্মের মৌলিকতম বিষয়। তাঁকে বাদ দিয়ে ধর্মে বিশ্বাস রাখার সুযোগ নেই। বলতে চেয়েছি, তাঁর প্রতি বিশ্বাস রাখা মানে ‘রাজনৈতিক ইসলামের’ প্রতি বিশ্বাস রাখা নয়। প্রকৃত ইসলামে বিশ্বাসের জন্যই তাঁর প্রতি বিশ্বাস জরুরি। তাই নবিকে ঘিরে মুসলমানদের মধ্যকার বিভেদ সংক্রান্ত লেখা আমাকে যেন কেউ ইনবক্স না করেন। কারণ, ‘আমি ইসলামের নামে রাজনীতির বিরুদ্ধে। তবে কোনো ধর্মের মৌলিক বিশ্বাস নিয়ে কথা বলার ইচ্ছে আমার নেই। কারণ, ধর্ম মানুষের পবিত্র বিশ্বাস, নিষ্পাপ অধিকার।’ এমন স্ট্যাটাসের পরিপ্রেক্ষিতেও কথিত সেই ইসলামবিদ্বেষী অ্যাখ্যা দিয়েছেন বিজ্ঞ বন্ধুরা।
এ স্ট্যাটাসে যা লিখেছি, এর প্রমাণ নিচেই ঝুলছে। নিজের চোখে দেখেই এমন বিকৃতি! আমি জন্মসূত্রে এদেশের নব্বইয়ের শতাংশেরই দলে। আমার স্ট্যাটাসেই এমন বিকৃতি হয়! আর নিরীহ সংখ্যালঘু উত্তম বড়ুয়া, রসরাজ দাস, টিটু রায়দের স্ট্যাটাসের বিকৃতি কীভাবে করেছেন ধর্ম উন্মাদরা, তা সহজেই অনুমেয়।●
হাসান শান্তনু’র স্ট্যাটাস থেকে