ঢাকা, ১৬ জানুয়ারি, এবিনিউজ : কিছু দিন পর এক চাকরিতে অনেকেই হাঁফিয়ে ওঠেন। ফল চাকরি বদল করা। জব সাইটগুলোতে লেগে যান কোথায় কী খালি রয়েছে, তা দেখতে। আবার অনেকের এটা পছন্দ নয়, বছরের পর বছর হয়তো থেকে যান একই চাকরিতে। বার বার চাকরি পাল্টানোর যেমন কিছু সুবিধে রয়েছে, তেমনই রয়েছে কিছু নেতিবাচক দিকও।
ভালো দিক
* যারা এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানিতে ভালো সুযোগ পেলে চলে যান, তারা তাদের প্রতিভা ও সৃজনশীলতার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে পারেন। কারণ বিভিন্ন প্রোজেক্ট ও পরিস্থিতিতে কাজ করার ফলে নিজের জানাশোনার পরিধিটাও স্বাভাবিকভাবেই অনেকটা প্রসারিত হয়। নেতৃত্ব দেওয়া, কাজের ব্যাপারে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম স্কিল সম্পর্কে এরা অনেক বেশি ওয়াকিবহাল হয়ে ওঠেন।
* অন্য কোম্পানিতে যাওয়া মানেই ধরে নেওয়া হয়, স্যালারি প্যাকেজ আগের থেকে একটু হলেও বেশি হবে। ফলে আর্থিক নিরাপত্তার ব্যাপারেও তারা থাকেন অনেক বেশি সুরক্ষিত। ভবিষ্যতের সঞ্চয়ও ভালোভাবে করতে পারেন।
ফলে জীবনধারণে আসে স্বাচ্ছন্দ্য।
বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়। এখনকার প্রতিযোগীতামূলক বাজারে এটা খুবই জরুরি। ফলে কোন কোম্পানিতে কর্মীদের কীভাবে দেখা হয়, মূল্যায়ন কীভাবে হয়, কী কী সুযোগ-সুবিধে পাওয়া যায় এবং সর্বোপরি কাজের পরিবেশই বা কেমন সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যায়। যেমন কেউ যদি নন-প্রফিট সংস্থা থেকে ফর-প্রফিট সংস্থায় যান, তাহলে তারা লজিস্টিক ম্যানেজমেন্ট ও ফাইনানশিয়াল ম্যানেজমেন্টের বেশ কিছু গুরুত্বপুর্ণ বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
* পরপর অনেকগুলো চাকরি পাল্টাবার পর আপনি অবশেষে বুঝতে পারবেন, জীবনে ঠিক কী ধরনের কাজে আপনি ফোকাসড থাকতে চান।
* বেশি অভিজ্ঞতা থাকলেই ক্যারিয়ারেও আপনি দ্রুত উন্নতি করতে পারবেন। মানে ভালো কোম্পানিতে অ্যাপ্লাই করা বা অফার করার ব্যাপারগুলো আপনার পক্ষে অনেক সহজ হয়ে যায়। আর বায়োডাটায় এত কিছুর উল্লেখ থাকলে কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে আপনি সহজেই আশ্বাস দিতে পারবেন, তাদের কোম্পানির জন্য আপনি কেন অপরিহার্য।
খারাপ দিক
* বার বার চাকরি পাল্টানোর যেমন কিছু সুবিধে রয়েছে, তেমনই এটা আপনার বায়োডাটাতে ফেলতে পারে নেতিবাচক প্রভাব। প্রথমেই প্রশ্ন উঠবে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে। বার বার কোম্পানি পাল্টাচ্ছেন মানে, কর্মচারী হিসেবে আপনি খুব একটা আস্থা অর্জনের জায়গায় পৌঁছননি। এবং আপনার মধ্যে কোম্পানির প্রতি কোনো দায়বদ্ধতাও নেই।
* আপনার মধ্যে সন্তুষ্টির অভাব রয়েছে। আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে আপনি মোটেও খুশি নন। তাই কোনও কোম্পানিতেই দীর্ঘদিন থাকতে পারছেন না। খালি মনে হয়, অন্য কোম্পানিত গেলেই হয়তো আপনি মনের মতো ওয়ার্ক প্রোফাইল পাবেন।
* আপনি অত্যন্ত নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত নিতেও আপনি দৃঢ়বদ্ধ নন। আর এর অর্থ ক্যারিয়ারে আপনার কমিটমেন্টও কম।
* বারবার চাকরি বদলানো আপনার পক্ষে খুবই মানসিক চাপের। কারণ প্রতিবার চাকরি খোঁজা বা চাকরির পরিবেশ পাল্টানোর মতো ব্যাপারগুলোর সঙ্গে অনেকেই মানিয়ে নিতে পারে না। যার প্রভাব পড়তে পারে কাজেও। এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হলে বা যদি কোনোভাবেই নিজের মনের মতো চাকরি খুঁজে না পান, তাহলে আপাতত চাকরির চেষ্টা না করাই ভালো।
* বার বার চাকরি বদলালে বায়োডাটাতে রেফারেন্স দেওয়ার মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না।
* কেন আপনি এতগুলো চাকরি ছেড়েছেন, সে সম্পর্কে ই্টারভিউ বোর্ডে ঠিকমতো উত্তর দিতে না পারলে, প্রশ্নকর্তাদের মনে আপনার সম্পর্কে তৈরি হবে নেগেটিভ ইম্প্রেশন।
এবিএন/সাদিক/জসিম/এসএ