বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

সামরিক শাসন কতো জঘণ্য...

সামরিক শাসন কতো জঘণ্য...

সামরিক শাসন কতো জঘণ্য! মৃত্যুর পর স্বামীর সমাধির পাশে থাকার মতো স্ত্রীর সহজ, সাধারণ, বহু কাঙ্ক্ষিত ইচ্ছেও পূরণ করে না সাম্প্রদায়িক রাজনীতির স্বার্থে! কাজটা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সরকার করেছিলো কবি কাজী নজরুল ইসলামকে তাঁর স্ত্রী প্রমীলার কবরের পাশের বদলে ঢাকায় সমাধিস্থ করে!

প্রখ্যাত গবেষক, প্রাবন্ধিক, লেখক গোলাম মুরশিদের লেখা থেকে জেনে নিচ্ছি তথ্যটা। তিনি লেখেন, ‘দীর্ঘদিন রোগে ভোগে ১৯৬২ সালের ৩০ জুন প্রমীলা মারা যান। তাঁকে সমাধিস্থ করা হয় চুরুলিয়ায় নজরুলের পৈতৃক বাড়িতে। তাঁর ইচ্ছা অনুসারে তাঁর কবরের পাশে জায়গা রাখা হয় স্বামীর জন্য। প্রমীলা প্রতীক্ষা করে থাকেন, মৃত্যুর পরও তিনি থাকবেন স্বামীর কবরের পাশে। কিন্তু ভাগ্যের কী পরিহাস! তাঁর মৃত্যুর পরও বাংলাদেশের এক ফৌজি একনায়ক প্রমীলার স্বামী নজরুলকে ঢাকায় চিরদিনের জন্য আটকে রাখেন, আটকে রাখেন চিরতরে। প্রমীলার প্রতীক্ষা পরিণত হয় অনন্ত পরীক্ষায়’ (সূত্র: প্রমীলার প্রতীক্ষা, দৈনিক প্রথম আলো, ৭ অক্টোবর, ২০১৬ খ্রি.)।

মুক্তিযুদ্ধের পর অসুস্থ নজরুলকে সম্মান জানাতে ও চিকিৎসা করাতে ঢাকায় নিয়ে আসেন রাষ্ট্রপিতা বঙ্গবন্ধু। ’৭৫ সালের ১৫ আগষ্টে বাঙালির ইতিহাসে সবচেয়ে কলংকিত হত্যাকাণ্ডের পর এক পর্যায়ে ক্ষমতা চলে যায় উর্দিওয়ালাদের কবলে। শুরু হয় বাকরুদ্ধ কবি নজরুলকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি, বাঙালিকে ‘বাংলাদেশি মুসলমান’ বানাতে বিভাজনের নীতি ছড়ানোর রাষ্ট্রীয় ভণ্ডামি। এদেশের ভৌগলিক সীমারেখার মধ্যে কবরস্থ হওয়ার ইচ্ছের কথা নজরুল কখনোই বলেননি। প্রমীলার প্রতীক্ষার অবসান ঘটাতে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে সমাধিস্থ করা যেতো। এদেশের পাঠকদের যে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, ভক্তি নজরুলের প্রতি, তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে স্ত্রীর পাশে সমাধিস্থ করলে এর এতোটুকুও কি কমতো?

হাসান শান্তনু’র স্ট্যাটাস থেকে

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত