জেনে নিন ভালো সিভি লেখার নিয়মগুলো

ঢাকা, ২৮ জানুয়ারি, এবিনিউজ :গ্র্যাজুয়েশন শেষ হলেই শুরু হয় চাকরি খোঁজাখুঁজি। আর চাকরি খোঁজার আগে প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে তা হলো সিভি বা বায়োডাটা তৈরি করা। নিখুঁত ও সফল সিভি তৈরির নিয়ম তুলে ধরা হলো-

নিজেই তৈরি করুন : নিজের সিভি নিজেই তৈরি করুন। ইন্টারনেটে সিভির প্রচুর নমুনা পাওয়া যায়। বন্ধুবান্ধবদেরও হয়তো সিভি তৈরি করা আছে। সেগুলো দেখতে পারেন, কিন্তু কোনোটাই নকল করবেন না।

যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই লিখুন : সিভি বেশি বড় না করাই ভালো। বড়জোর দুই পাতা। এখন কম্পিউটারেই সবাই সিভি তৈরি করে। পুরোটা একটাই ফন্টে লিখুন। আর পরিচিত কোনো ফন্ট ব্যবহার করুন। যেমন, এরিয়াল, টাইমস নিউ রোমান বা ক্যালিব্রি ইত্যাদি। পয়েন্ট সাইজ ১২ বা ১৪ রাখুন।

ভুল নয় : ইংরেজিতেই সিভি লেখা হয়। ভাষা সরল রাখুন, যাতে পড়তে ভালো লাগে। যতটুকু দরকার, সেইটুকু তথ্যই দিন। হোয়াটসঅ্যাপ বা এসএমএসে যে ধরনের ইংরেজি লিখে এসেছেন, সেটা কিন্তু ভুলেও এখানে ব্যবহার করবেন না। যেহেতু সিভির মাধ্যমেই নিয়োগকর্তারা আপনাকে প্রথম চিনবেন, তাই নিজের সম্পর্কে যখন কিছু বলবেন, তখন এমন কথাই লিখুন, যেটা পড়ে আপনার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি হতে পারে। বাক্য গঠন, বানান ভুলের বিষয়ে সতর্ক থাকুন।

শিক্ষাগত যোগ্যতা : যখন শিক্ষাগত যোগ্যতা লিখছেন, তখন সম্প্রতি যে পরীক্ষায় পাস করেছেন সেটি দিয়ে শুরু করে ক্রমপর্যায়ে বোর্ডের পরীক্ষা পর্যন্ত লিখুন। ভালো হয়, এগুলোকে এক একটা বুলেট পয়েন্ট করে লিখলে। বৃত্তি, পুরস্কার বা শিক্ষাগত কোনো সম্মান পেয়ে থাকলে সেটা দিতে ভুলবেন না।

অভিজ্ঞ-অনভিজ্ঞ : অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই ফ্রেশারদের সুযোগ দেয়। তাই কাজের অভিজ্ঞতা না থাকলে অসুবিধা কিছু নেই। তবে এর মধ্যে যদি কোনো কোর্স বা ইন্টার্নশিপ করে থাকেন, সেটার তথ্যও এখানে দেবেন। আর যারা আগে চাকরি করেছেন, তাদের পরিষ্কার করে লিখতে হবে, কোন সংস্থায় কাজ করতেন, কত বছর করেছেন, কী ধরনের প্রোজেক্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, কী পদে ছিলেন ইত্যাদি।

সতর্ক থাকুন : ফ্রেশার হিসেবে যখন ‘কেরিয়ার অবজেকটিভ স্টেটমেন্ট’ লিখবেন, তখন আগামী ৫ বছরে আপনি কী করবেন, নিজেকে কতটা উন্নত করবেন বা কী ধরনের টার্গেট বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করবেন, সেটা লিখুন। নিজের পরিকল্পনা মতো যেভাবে কেরিয়ারটা গড়তে চান, সেটাই তুলে ধরুন কেরিয়ার অবজেকটিভ স্টেটমেন্টে।

রেফারেন্স : আপনার যোগ্যতা সম্পর্কে জানাতে পারেন, এমন কয়েক জনের নাম ‘রেফারেন্স’ হিসেবে উল্লেখ করতে পারেন। সিভির শেষে তাদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, ইমেইল উল্লেখ করুন। তবে, তার আগে অবশ্যই এদের সঙ্গে কথা বলে নিন, তারা আপনার বিষয়ে রেফারেন্স দিতে আগ্রহী কি না।

যোগাযোগ : সিভিতে আপনার কনট্যাক্ট ডিটেইলস যেন পরিষ্কার করে থাকে- নাম, বাড়ির ঠিকানা, ফোন নম্বর, ই-মেইল ইত্যাদি। এখানে যে ই-মেইল আইডি দেবেন, সেটা যেন খুব উদ্ভট কিছু না হয়। কলেজে অনেকে এমন ধরনের মেইল আইডি ব্যবহার করেন। কিন্তু যেহেতু আপনি চাকরির জন্য আবেদন করতে যাচ্ছেন, তাই তার জন্য কোনো অফিশিয়াল মেইল আইডি থাকাই ভালো।

একাধিক : সিভি নানাভাবে লেখা যায়। কোনো বেসরকারি সংস্থায় আবেদন করতে হলে আপনাকে এক ধরনের সিভি জমা দিতে হবে। এই সিভি কিন্তু কোনো অলাভজনক সংস্থায় জমা দেওয়া যাবে না। সেখানে ধরনটা হবে অন্য। এই সব সিভিতে আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার যাবতীয় তথ্য অপরিবর্তিত থাকবে ঠিকই, শুধু তথ্য পরিবেশনটা সংস্থা অনুযায়ী পালটে যাবে। কাজের সংস্থার খুঁটিনাটি যত স্পষ্ট হবে, আপনার সিভি লেখাও তত কার্যকর হবে।

এক্সপার্ট কমেন্ট : ফ্রেশারদের ক্ষেত্রে সিভি তৈরি করা সবচেয়ে কঠিন। কারণ কর্মদক্ষতার কোনো প্রমাণ দেওয়ার সুযোগ নেই। আর আজকাল সবাই এত নম্বর পায় যে নম্বর দিয়ে নজর কাড়া খুব মুশকিল। অথচ, এই সিভিকেই চট করে চোখে পড়াতে হবে ভিড়ের মাঝে। নিয়োগকারী মূলত দেখতে চান একজন ফ্রেশারের অ্যাটিটিউড।

এবিএন/সাদিক/জসিম/এসএ