
ঢাকা, ২৫ মার্চ, এবিনিউজ : ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা নামে একটি রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। কয়েক বছর আগে গ্রাহকদের এ প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ ব্যবহারের অনুমতি দেয়াটা ফেসবুকের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা তাদের অ্যাপের মাধ্যমে অনুমতি না নিয়ে পাঁচ কোটির বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে। বিপুলসংখ্যক গ্রাহকের তথ্য কাজে লাগিয়ে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা গত মার্কিন নির্বাচনকে প্রভাবিত করে। বিভিন্ন কারণে ফেসবুকে গ্রাহক তথ্যের নিরাপত্তার বিষয়টি এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। ফেসবুকে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কয়েকটি টিপস প্রকাশ করেছে ডিজিটাল ট্রেন্ড ওয়েবসাইট—
যাচাই করা ও অ্যাপ মুছে দেয়া: ফেসবুক প্লাটফর্মে বিভিন্ন থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে আসছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা যে বিপুলসংখ্যক ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে, তার প্রধান উৎস ছিল একটি অ্যাপ। বিভিন্ন থার্ড পার্টি অ্যাপের মতোই গ্রাহকদের জন্য ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার অ্যাপ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল ফেসবুক। অ্যাপটির ডেভেলপার ডাউনলোডকারী ফেসবুক গ্রাহকের পাশাপাশি তার বন্ধুদের পর্যন্ত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল এবং পরবর্তীতে এসব তথ্য ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার হাতে স্থানান্তর করেছে।
ফেসবুকে একজন ব্যবহারকারী কী ধরনের থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহার করছেন, তা রিভিউয়ের ব্যবস্থা আছে। গ্রাহক চাইলে এসব অ্যাপ মুছে ফেলতে পারবেন। সেটিংস অপশন থেকে অ্যাপ সিলেক্ট করলে অনেক অ্যাপ দেখা যাবে, যেগুলোর প্রত্যেকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে লিংকড। সেখান থেকে ইচ অ্যাপ অপশনে গিয়ে এডিট সেটিংসে ক্লিক করলে দেখা যাবে থার্ড পার্টির কোনো অ্যাপের গ্রাহকের কোনো ধরনের তথ্যে প্রবেশাধিকার রয়েছে এবং রিমুভ অপশনে ক্লিক করে একটি অ্যাপ সম্পূর্ণভাবে মুছে দেয়া যাবে।
ডাউনলোড ফেসবুক ডাটা: ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকাটা স্বাভাবিক। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক গ্রাহককে তাদের ফেসবুক প্রোফাইলের সব কার্যক্রমের ডাটা ডাউনলোড করার সুবিধা রেখেছে। ফেসবুক প্রোফাইলের সব ধরনের ডাটা ডাউনলোড করতে সেটিংস অপশনে গিয়ে ‘স্টার্ট মাই আর্কাইভ’-এ ক্লিক করতে হবে। সেটিংসটির মাধ্যমে একজন গ্রাহক তার সব ফেসবুক কার্যক্রম আর্কাইভ করতে পারবেন। ডাউনলোড করা যাবে ফেসবুক পোস্ট, পাঠানো টেক্সট মেসেজ। এমনকি যে বিজ্ঞাপনগুলোতে একজন গ্রাহক ক্লিক করেছেন, সেগুলো ডাউনলোড করা যাবে।
প্রাইভেসি সেটিংস পরিবর্তন: প্রাইভেসি সেটিংস থেকে নির্ধারণ করে দেয়া যাবে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর পোস্ট কারা দেখতে পারবেন এবং কারা দেখতে পারবেন না। একইভাবে নির্ধারণ করে দেয়া যাবে কারা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতে পারবেন এবং কারা একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর বন্ধু তালিকা দেখতে পারবেন।
টাইমলাইন এবং ট্যাগিং সেটিংস পরিবর্তন: সিটিংস অপশনে গিয়ে টাইমলাইন অ্যান্ড ট্যাগিংয়ে ক্লিক করে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী নির্ধারণ করে দিতে পারবেন কারা তার টাইমলাইনে পোস্ট করতে পারবেন এবং কারা সে পোস্ট দেখতে পারবেন। রিভিউ অপশন চালুর মাধ্যমে ফেসবুক টাইমলাইনে অন্য কারো ট্যাগ করা পোস্ট যোগ করার আগে তা যাচাই করে নেয়া যাবে। এরপর ঠিক করে নেয়া যাবে কোনো বন্ধুর ট্যাগ করা পোস্ট নিজের টাইমলাইনে শেয়ার করবেন কিংবা করবেন না।
ডিঅ্যাক্টিভেট ফেসবুক: ভার্চুয়াল জগতে আপনি যতই সতর্ক থাকুন না কেন, কোনো না কোনোভাবে ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। কোনো কারণে ফেসবুক নিরাপদ মনে না হলে অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট করে রাখা যেতে পারে। এজন্য অ্যাকাউন্ট সেটিংস অপশনে গিয়ে জেনারেল সেটিংসে ক্লিক করতে হবে। এরপর ম্যানেজ অ্যাকাউন্ট অপশনে ক্লিক করলে ডিঅ্যাক্টিভেট অপশন মিলবে। যেখানে ক্লিক করে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট করে রাখা যাবে।
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি