![গুগল ফেসবুক ইউটিউবকে করের আওতায় আনতে রিট](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/09/highcourt_134484.jpg)
ঢাকা, ০৯ এপ্রিল, এবিনিউজ : সার্চ ইঞ্জিন গুগল, ফেসবুক ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে করের আওতায় আনতে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দাখিল করা হয়েছে। এছাড়া দেশে প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনার জন্য নীতিমালা প্রস্তুত করা, প্রতিষ্ঠানগুলো কী পরিমাণ আয় করছে তা জানতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ চাওয়া হয়েছে আবেদনে। একইসঙ্গে গত ১০ বছরে প্রতিষ্ঠানগুলো কী পরিমাণ অর্থ আয় করেছে এই কমিটির মাধ্যমে তা নিরূপণের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে রিটে।
আজ সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবী সম্মিলিতভাবে রিট আবেদনটি করেন। রিটকারীরা হলেন- মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, মোহাম্মদ কাউসার, আবু জাফর মো. সালেহ, অপূর্ব কুমার বিশ্বাস, মোহাম্মদ সাজ্জাদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ মাজেদুল কাদের।
রিটে অর্থ সচিব, বাংলদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আইন সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, তথ্য ও প্রযুক্তি সচিব, প্রথমআলো পত্রিকার সম্পাদক এবং বাংলাদেশ নিউজ পেপারস ওনারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিসহ, গুগল, ফেসবুক, ইয়াহু ও ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে বিবাদী করা হয়েছে।
মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের বলেন, 'রিট মামলাটি আগামীকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হতে পারে।'
এর আগে, গত ৭ এপ্রিল সার্চ ইঞ্জিন গুগল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ ইন্টারনেটভিত্তিক সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ফাঁকির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ চেয়ে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। অর্থসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, এনবিআরের চেয়ারম্যান, আইনসচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, তথ্য ও প্রযুক্তি সচিব, প্রথমআলো পত্রিকার সম্পাদক ও বাংলাদেশ নিউজ পেপারস্ ওনারস্ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতিকে এই নোটিশ পাঠানো হয়।
তাছাড়া গুগল, ফেসবুক, ইয়াহু ও ইউটিউব কর্তৃপক্ষকেও নোটিশ পাঠানো হয়। রিট সংশ্লিষ্ট ছয় আইনজীবী এই নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়েছিল, ‘প্রযুক্তির যুগে গুগল ও ফেইসবুক এখন প্রাত্যহিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এখন সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন দেখতে আগ্রহী। দিন দিন এর ব্যবহার বাড়ছে। বাড়ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যাও। এ সুযোগে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে দেশ থেকে কোটি কোটি ডলার নিয়ে যাচ্ছে ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট বিশ্বের নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু সরকারকে এক টাকাও রাজস্ব দিচ্ছে না। প্রতি বছর কত টাকা বিজ্ঞাপন বাবদ বিদেশে পাচার হচ্ছে, তার সঠিক কোনও হিসাব নেই সরকারের কোনও প্রতিষ্ঠানের কাছে। কারণ, বিজ্ঞাপনদাতারা তাদের অর্থ পরিশোধ করছে ক্রেডিট কার্ড ও অন্যান্য অনলাইন প্রযুক্তির মাধ্যমে।'
নোটিশপ্রাপ্তদের কয়েকটি প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছিলো। তা হলো- গুগল, ইয়াহু, অ্যামাজন, ইউটিউব, ফেসবুককে দেওয়া সব বিল থেকে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য রাজস্ব কর কেটে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা হলো। একইসঙ্গে রাজস্ব কর আদায়ের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারির অনুরোধ করা হয়।
এছাড়া সরকারকে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি তদন্ত করাসহ বিগত ১০ বছরে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব ওই ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত হতো সেই হিসাব করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে তা আদায়ের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি গুগল, ইয়াহু, অ্যামাজন, ইউটিউব, ফেসবুককে তাদের গত ১০ বছরের বকেয়া রাজস্ব বাংলাদেশ সরকারের কোষাগারে ফেরত পাঠানোর জন্যও নোটিশে বলা হয়।
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি