![পুলিশ হেফাজতে কিশোর হত্যা: বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/11/mohanagar_134738.jpg)
ঢাকা, ১১ এপ্রিল, এবিনিউজ : পুলিশ হেফাজতে রাকিব হাওলাদার (১৫) নামের এক কিশোর হত্যার অভিযোগে রাজধানীর ওয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা হয়েছে।
রাজধানীর ওয়ারী থানাধীন বনগ্রামের বাসিন্দা রাকিব হাওলাদারের মা রীতা আক্তার বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন- একই থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো. সেলিম, এএসআই জ্যোতি এবং সোর্স মোশাররফ। মামলায় অজ্ঞাত আরো দুই-তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
বাদীর আইনজীবী এমদাদুল হক লাল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিচারক মো. কামরুল হোসেন মোল্লা শুনানি শেষে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে দায়ের করা এ মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদীর ছেলে রাকিব হাওলাদার (১৫) গত ৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাসার পাশের কাপ্তান বাজারের মুরগি পট্টির মোড়ে পান আনতে যান। ওই সময় আসামি জ্যোতি ও মোশাররফসহ অজ্ঞাত কয়েকজন তাকে আটক করে ওয়ারী থানায় নিয়ে আটকে রাখেন। বাদী ছেলে আটকের কথা জানতে পেরে রাত পৌনে ১১টার দিকে থানায় গিয়ে আসামি রফিকুল ইসলামের কক্ষ থেকে তার সন্তানের চিৎকার শুনতে পান। ওই সময় আসামি জ্যোতি বাদীর ছেলেকে আটকের বিষয়টি স্বীকার করে তাকে গালিগালাজ করে থানা থেকে বের করে দেন।
ওই দিন রাত আড়াইটার দিকে বাদী পুনরায় থানায় গেলে আসামি রফিকুল ইসলামের রুমের দরজা বন্ধ দেখতে পান। তখন তিনি দরজা ধাক্কা দিয়ে রুমের মধ্যে প্রবেশ করে দেখতে পান যে, তার ছেলের মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা, হাতে হাতকড়া পড়ানো, পরণে প্যান্ট নাই, গায়ের জামা কাপড় ছেঁড়া, শীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন। ওই সময়ও আসামি রফিকুল ও সেলিম বাদীর ছেলেকে লাথি মারছিল। বাদী সন্তানের অবস্থা দেখে কান্না শুরু করলে আসামিরা তাকে বের করে দেন। এরপর বাদী পরের দিন সকল ৯টার দিকে থানায় গেলে আসামিরা তাকে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে থানা থেকে বের করে দেন। এরপর ওই দিন বাদী ও তার আত্মীয়-স্বজন থানার বাইরে রাত ৯টা পর্যন্ত অবস্থান করে ছেলের কোনো খবর না পেয়ে চলে আসেন। এরপর গত ৬ এপ্রিল বাদী পুনরায় থানায় গিয়ে সন্তানের খোঁজ না পাননি। ওই দিন ১১টার দিকে আসামি রফিকুল ইসলাম বাদীর পিতা আব্দুল লতিফতে ফোন করে জানান তার নাতি ক্রসফায়ারে মারা গেছেন। এরপর বাদী ও তার আত্মীয়-স্বজনরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে রাকিবের ডান হাত ভাঙা, মাথা ফাটাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ দেখতে পান।
বাদীর অভিযোগ, আসামিরা তার নিরপরাধ ছেলেকে থানায় নির্যাতন করে হত্যার পর ক্রসফায়ারের নাটক সাজিয়েছেন।
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি