![ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি মামলায় শরিফুল ৪ দিনের রিমান্ডে](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/25/shariful_136833.jpg)
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল, এবিনিউজ : সম্প্রতি সংঘটিত ৫টি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার মো. শরিফুল ইসলামের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম ফাহদ বিন আমিন চৌধুরী ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সাইবার শাখার এসআই এ এইচ এম ফজলে রাব্বি এ রিমান্ড আবেদন করেন। অপরদিকে শরিফুল ইসলামের আইনজীবী কাজী মফিজুল ইসলাম আসামিকে নির্দোষ দাবি করে রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, চলতি বছরের মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে পাঁচটি ব্যাংকের (ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইবিএল, ইউসিবিএল, ব্যাংক এশিয়া) কার্ড জালিয়াতির ঘটনা সিআইডির নজরে আসে। এরপর সিআইডি এটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে এ আসামির জালিয়াতি ধরা পড়ে। এ আসামি রাশিয়া থেকে কার্ড জালিয়াতি শিখে দেশে ফিরে এ কৌশল প্রয়োগ করে। তিনি বিভিন্ন ব্যাংকের গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ব্যাংকের গ্রাহকরা যখন বিভিন্ন সুপার শপ ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে যান, তখন এই আসামি ও তার চক্র কৌশলে গ্রাহকের তথ্য চুরি ও ক্লোন কার্ড তৈরি করে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নিতেন। শরিফুল ইসলাম এই চক্রের মূল হোতা। তিনি সুপার শপ স্বপ্নের বনানী শাখায় কাজ করতেন। নিজের হাতঘড়িতে সংযুক্ত বিশেষ মিনি কার্ডরিডারের মাধ্যমে গ্রাহকের কার্ডের অভ্যন্তরীণ তথ্য নিতেন। এরপর গ্রাহক যখন পিন নম্বর দিতেন, তখন কৌশলে পিন নম্বর দেখতেন। বিল পরিশোধ করে গ্রাহক চলে যাওয়ার পর ওই পিন নম্বর সংগ্রহ করতেন। পরে বাসায় গিয়ে ল্যাপটপ ও ডিভাইসের মাধ্যমে গ্রাহকের তথ্য খালি কার্ডে স্থাপন করে ক্লোন এটিএম কার্ড বানিয়ে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নিতেন। স্বপ্নে চাকরি করলেও শরিফুল ইসলামের মূল পেশা ছিল ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি। মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিলাসবহুল জীবন যাপন করতেন শরিফুল ইসলাম। ব্যক্তিগত চলাচলের জন্য টয়োটা এলিয়ন মডেলের গাড়ি ব্যবহার করতেন তিনি। তার ব্যাংক হিসাবে কয়েক কোটি টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে।
শফিকুল ইসলাম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডিকে জানিয়েছেন, কার্ড জালিয়াতির চক্রে ১০০ জন কাজ করে।
শরিফুল ইসলামের বাবার নাম ইয়াজউদ্দিন বিশ্বাস। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হেমায়েতপুর গ্রামে তার বাড়ি। এইচএসসি পাস করার পর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য রাশিয়া যান শরিফুল ইসলাম। সেখানে খনি প্রকৌশল বিষয়ের ওপর তিন বছর মেয়াদি ডিগ্রি নেওয়ার পর ২০১০ সালে বাংলাদেশে ফেরত আসেন। রাশিয়ায় পড়ার সময় তার রুমমেট ছিলেন রাশিয়ার নাগরিক ইভানোভিচ। ইভানোভিচের কাছ থেকে ক্রেডিট কার্ড প্রতারণার কৌশল শেখেন শরিফুল ইসলাম। দেশে আসার পরপরই কার্ড জালিয়াতিতে নেমে পড়েন তিনি। ২০১৩ সালে এ সংক্রান্ত দুটি মামলায় ১৮ মাসের জেলও খেটেছেন শরিফুল ইসলাম।
এর আগে ২৪ এপ্রিল রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় শরিফুল ইসলামের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, ১ হাজার ৪০০ ক্লোন কার্ড, গ্রাহকদের তথ্য চুরিতে ব্যবহৃত সচল ডিজিটাল হাতঘড়ি, ১৪টি পাসপোর্ট, দুটি মিনি কার্ডরিডার, একটি পরচুলা, একটি কালো রঙের সানগ্লাস ও আটটি মোবাইল ফোন জব্দ করে সিআইডি।
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি