![সদরপুরে স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, মামলা দায়ের](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/26/rape5_136999.jpg)
সদরপুর (ফরিদপুর), ২৬ এপ্রিল, এবিনিউজ : ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আকোটেরচর ইউনিয়নের গোলডাঙ্গী গ্রামে ৪র্থ শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
এ ব্যাপারে সদরপুর থানায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে একটি ধর্ষনের মামলা দায়েরের প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রয়েছে।
জানা যায়, গত সোমবার (২৩ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে একই ইউনিয়নের ধোনাই বেপারীর ডাঙ্গী গ্রামের মো. আক্কাচ বেপারীর পুত্র রাকিব বেপারী (২২) কিশোরীর বাড়িতে ওৎপেতে থাকে। রাতে কিশোরী ঘর থেকে প্রকৃতির ডাকে বের হলে তাকে মুখচেপে ধরে বাড়ির পাশের একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। ওই সময় রাকিবের সাথে আরও চারজন ছিলেন বলেও জানাযায়।
কিশোরী সুত্রে জানা যায়, তাকে প্রথমে মুখ পরে হাত পা বাঁধে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাকিব তার বন্ধুদের সহযোগিতায় একাধিকবার তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। কিশোরী আরও জানায় চিৎকার করার চেষ্ঠা করলে তাকে হত্যা করা হবে হুমকি দেন রাকিব। পরে অজ্ঞান অবস্থায় বাড়ির পাশের একটি পাট ক্ষেতে ফেলে যায় তাকে।
ভোররাতে ওই কিশোরীকে ঘরে না দেখতে পেয়ে তার মা বিভিন্ন জায়গায় খুজতে বের হয়। পরে বাড়ির পাশের ক্ষেতে ধর্ষিতার ছোটবোন দেখতে পেয়ে চিৎকার দেয়। পরে তাকে হাত পা মুখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে বলে জানান এলাকাবাসী।
এ ঘটনার কথা কিশোরী তার মা বাবাকে জানালে রাকিব ধর্ষিতার পরিবার কে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকেন। এ ঘটনায় বুধবার রাত ৯টার দিকে আকোটেরচর ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্যা রাজিয়া আক্তারের বাড়ির ঘরে শালিস বৈঠক বসে। ওই শালিশ বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন আকোটেরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চৌধুরী মনিরুল হক মুরাদ।
ঘন্টাব্যাপী শালিস শেষে একটি মিশাংসার জন্যে একটি গোপন বৈঠকে যায় শালিসের ইউসুফ মোল্যা, ইউপি সদস্য মোমরেজ খালাসী, আলমগীর কাজী। পরে তারা ছেলের পরিবারকে নগদ এক লক্ষ টাকা জরিমানা করেন।
ঔই জরিমানার বিপক্ষে কথা বলেন ইউপি চেয়ারম্যান তিনি জানান ২০ হাজার টাকা মেয়ের পরিবারকে দেওয়া যেতে পারে বলেন, ওই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোমরেজ খালাসী। শালিসে কোনো মিমাংসা না হলে আজ বৃহস্পতিবার সকালে সদরপুর থানায় মামলা দায়ের করতে আসেন ধর্ষিতার পরিবার।
ইউপি চেয়ারম্যান মুরাদ বলেন, ধর্ষণের ঘটনা আমি জানিনা। দুই পরিবারের মাঝে সমঝোতা না হওয়ায় কোনো সমাধান হয় নাই।
ধর্ষিতার পরিবার সর্ম্পকে জানা যায়, ধর্ষিতার বাবা একজন দিন মজুর। কিছুদিন আগে পদ্মার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে আকোটেরচর গোলডাঙ্গী চরাঞ্চলে বসতি শুরু করেন। পাটখড়ির একটি ঘর ও ওই ঘরের খোলা বারান্দায় অসহায় পরিবারে জীবন সংসার চলছিল। অন্যের জমিতে দিনমজুর খেটে চলত হতদরিদ্র সংসার। মেয়ে কে লেখাপড়ার জন্যে মায়ের উদ্যোগে ২৩নং হাট নারিকেল বাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করান।
এ ব্যাপারে সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রুত গোলদার জানান, প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ হয়েছিল বর্তমানে কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে মামলার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কিশোরীকে পরীক্ষার জন্যে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এবিএন/সাব্বির হাসান/জসিম/এমসি