![নাঈমকে গ্রেফতারের অভিযানে নেওয়া হয় ‘কঠোর’ গোপনীয়তা](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/05/18/naeem-ashraf_78384.jpg)
মুন্সীগঞ্জ, ১৮ মে, এবিনিউজ : রাজধানীর বনানীর হোটেল রেইনট্রিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামি নাঈম আশরাফকে (হাসান মোহাম্মদ হালিম যার প্রকৃত নাম) গ্রেফতারের বিষয়টা এতটাই গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়েছিল যে স্থানীয় পুলিশের সহায়তাও নেয়নি পুলিশ সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা।
মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘তবে অভিযানের মাত্র এক ঘণ্টা আগে শুধু অবহিত করা হয়েছিল যে আমার জেলায় একটি অভিযান পরিচালনা করা হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, ‘নাঈম আশরাফকে গ্রেফতারের আগে এ বিষয়ে কোনও তথ্য জানতো না জেলা পুলিশ। অভিযানটি পরিচালনার মাত্র এক ঘণ্টা আগে রাত পৌনে আটটার দিকে আমাকে পুলিশ সদর দফতর থেকে জানানো হয়, জেলায় একটি অভিযান পরিচালনা করা হবে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তারা স্থানীয় পুলিশের সহায়তা নেবে। তবে তারা কোনও সহায়তা নেননি। অভিযান শেষে শুধু জানতে পারি, নাঈমকে লৌহজং থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
লৌহজং সার্কেলের এএসপি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেফতারের অভিযানের ব্যাপারে আমি তেমন কিছু জানি না। তবে থানার ওসি জানত। আমি এইমাত্র ওসির সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, ঢাকা পুলিশের একটি দল অত্যন্ত গোপনে অভিযান পরিচালনা করে চলে গেছে। অভিযানে নাইম আশরাফকে গ্রেফতার করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসামী এখানে কতদিন ধরে অবস্থান করছি, তা আমাদের জানা নেই। সম্ভবত মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত করে অভিযান চালানো হয়। সত্যি বলতে, অভিযানে কতজন পুলিশ সদস্য অংশ নিয়েছে কিংবা তারা অভিযানের সময় ইউনিফর্ম পরিহিত ছিল নাকি সাদা পোশাকে ছিল, সেসব তথ্যও বলতে পারব না।’
গত বৃহস্পতিবার এই মামলার পাঁচ আসামির অন্যতম দুই আসামি সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে সিলেট থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরে অন্য দুই আসামি সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলীকে গত সোমবার ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তারাও বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছে। অ ন্য চার আসামিকে গ্রেফতার করার পরও নাঈম আশরাফকে গ্রেফতার না করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এ প্রেক্ষাপটে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল নাঈম পুলিশের নজরদারিতেই আছে।
প্রসঙ্গত, ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ এনে গত ৬ মে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন দুই তরুণী। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৮ মার্চ পূর্বপরিচিত সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওই দুই তরুণীকে জন্মদিনের দাওয়াত দেয়। এরপর তাদের বনানীর ‘কে’ ব্লকের ২৭ নম্বর সড়কের ৪৯ নম্বরে রেইনট্রি নামের হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, সেখানে দুই তরুণীকে হোটেলের একটি কক্ষে আটকে রেখে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ধর্ষণ করে সাফাত ও নাঈম। এ ঘটনা সাফাতের গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিও করানো হয় বলেও উল্লেখ করা হয় এজাহারে। ধর্ষণ মামলার আসামিরা হলো- সাফাত আহমদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ।
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি