মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২
logo
  • হোম
  • সাক্ষাৎকার
  • ‘দলেই ভারসাম্য নেই, অথচ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য চাইছে বিএনপি’

‘দলেই ভারসাম্য নেই, অথচ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য চাইছে বিএনপি’

‘দলেই ভারসাম্য নেই, অথচ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য চাইছে বিএনপি’

ঢাকা, মে, এবিনিউজ : রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ‘রূপকল্প’। ২০০৮ সালে রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করে নির্বাচনে বাজিমাত করেছিল আওয়ামী লীগ। এর বিপরীতে ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ স্লোগানের গতানুগতিক ইশতেহারে তখন ধরাশায়ী হয়েছিল বিএনপি। সেই ভরাডুবি থেকে শিক্ষা নেয়নি দলটি। পরবর্তী ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশও নেয়নি বিএনপি। এর মাশুলও দিচ্ছে দলটি। তবে দেরিতে হলেও ভুল বুঝতে পেরে আওয়ামী লীগের মতো করে ঘোষণা করেছে রূপকল্প ২০৩০। তাদের রূপকল্পে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ‘প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতায় ভারসাম্য’ আনার প্রস্তাবটি। অতীতে বড় কোনো রাজনৈতিক দল এমন প্রস্তাব করেনি। এর সঙ্গে এককেন্দ্রিক সংসদীয় ব্যবস্থায় বিএনপি উচ্চকক্ষের পরিকল্পনার কথাও বলেছে। ৩৭টি বিষয়ে ২৫৬টি দফার সমন্বয়ে প্রণীত বিএনপির এই রূপকল্প কতটা বাস্তব ও বাস্তবায়নযোগ্য? এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্ত্তীর সঙ্গে কথা বলেছেন সাংবাদিক আলমগীর স্বপন।

আলমগীর স্বপন : কীভাবে দেখছেন বিএনপির রূপকল্প-২০৩০ কে?

অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী : বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যতম বৃহত্তম দল বিএনপি। দীর্ঘদিন তারা ক্ষমতায় ছিল। দলটি যে একটা ভবিষ্যৎমুখী রূপকল্প দিয়েছে এ জন্য প্রথমেই তাদের সাধুবাদ জানাই। রাজনৈতিক দলগুলোকে আসলে এভাবেই কর্মসূচি দেয়া উচিত, যাতে জনগণ দিকনির্দেশনা পায়। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে বিএনপির ভিশন-২০৩০ উচ্চাকাক্সক্ষী একটি পরিকল্পনা। অবশ্য বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য আকাক্সক্ষা থাকাটা খুবই জরুরি। তবে তাদের রূপকল্পের কতগুলো জায়গা খুব একটি স্পষ্ট নয়। আমি মনে করি, কোনো পরিকল্পনা বা নীতির ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থানে থেকে পলিটিক্যাল নেরেটিভ বা রেটোরিক তৈরি করা ঠিক না। বিএনপির রূপকল্পে বেগম খালেদা জিয়া ৩৭টি বিষয়ে প্রায় ২৩৬টি দফা হাজির করেছেন। এটা আমার কাছে মনে হয় সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার চেয়েও অনেকটাই বিএনপির আগামী দিনের নির্বাচনী ইশতেহার। এই ইশতেহার দিয়ে বিএনপি তার দলকে আগামী দিনগুলোতে সুসংগঠিত করবার একটা প্রচেষ্টা হয়তো নিবে।

প্রশ্ন : আপনি বলছিলেন বিএনপির রূপকল্প স্পষ্ট না। কেন? এটা কী একটু স্পষ্ট করবেন?

অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী : এখানে কতগুলো বিষয় স্পষ্ট না। সেটা হলো ‘প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য’। বিষয়টি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে এখনো আমি নিশ্চিত না, তিনি আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, সংবিধানে উচ্চকক্ষের কথা। কিন্তু তাও স্পষ্ট করেননি। বলেছেন পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা। তাহলে এক বছর ধরে এ নিয়ে তারা কী পরিকল্পনা করলেন? ঘোষিত রূপকল্পেও খালেদা জিয়া উচ্চকক্ষ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা বলেছে।

বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী যে কেউ প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি স্বৈরাচারী হয়ে যান-ধারণাটা সম্ভবত ঠিক না। কারণ খালেদা জিয়া নিজেও তিন দফায় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার উপলব্ধি যদি এমনই হয়ে থাকে তাহলে ক্ষমতার থাকার সময় ভারসাম্যের ব্যাপারটা তিনি আনতে পারতেন। এখন এটা যদি আপনি একটা পলিটিক্যাল নেরেটিভ তৈরি করে এটার সঙ্গে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে তুলনা করবার একটা প্রচেষ্টা চালান- সেটা কিন্তু যৌক্তিক না। আমাদের যেটা দেখতে হবে সেটা হলো আদৌ এখানে ভারসাম্য আনার সুযোগ আছে কিনা। এককেন্দ্রিক সরকার কাঠামোয় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা খুবই কঠিন। আপনি কি রাষ্ট্রপতিকে কিছু দিবেন, হ্যাঁ বলতে পারেন রাষ্ট্রপতিও সংসদ কর্তৃক নির্বাচিত হবে। রাষ্ট্রপতিকে তাহলে আপনি কি দিবেন, কোন কোন ক্ষমতাগুলো রাষ্ট্রপতিকে আপনি দিতে চান। বাংলাদেশের সাংবিধানিক কাঠামোয় প্রধানমন্ত্রী শুধু সংসদের কাছে দায়বদ্ধ। এখন খালেদা জিয়া এই বিষয়টি বলেছেন, শুনতে ভালো লাগে বা জনগণ এটাকে গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু বিষয়টা হচ্ছে জিনিসটা করবেন কীভাবে- এই ব্যপারে রূপকল্পে সুস্পষ্ট ধারণা রাখা উচিত ছিল বিএনপির।

প্রশ্ন : ‘প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতায় ভারসাম্য’ আনার বাস্তবতা বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে কতটা আছে বলে মনে করেন?

অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী : বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর যে ক্ষমতা আছে এটা কিন্তু সংবিধানে বলে দেয়া আছে। এক্ষেত্রে প্রকৃত অর্থে যে গণতন্ত্র সেটা আমাদের দেশে কতটা আছে? এনিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। স্বৈরাচারের পতনের পর থেকে ১৯৯১ সাল থেকে গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে আমরা নানাভাবে চেষ্টা করছি। কিন্তু আদর্শিক গণতন্ত্র বলতে যা বোঝায় সেটা এখনো আমরা করতে পারিনি। গণতন্ত্রকে এখনো আমরা নেহাতই একটি কাঠামো হিসেবে উচ্চারণ করছি।এখানে গণতন্ত্রকে কখনও একটি মূল্যবোধ হিসেবে দেখা হয়নি। এ কারণে বিভিন্ন সরকারের আমলে যারা রাষ্ট্রপতি ছিলেন তারা সবাই একবাক্যেই সেই ১৯৯১ সাল থেকে বলেছেন ক্ষমতায় ভারসাম্য আনার কথা। বিচারপতি শাহাবুদ্দিন সাহেব রাষ্ট্রপতি ছিলেন তিনিও বলেছিলেন ক্ষমতার ভারসাম্য থাকা দরকার, বিএনপির আমলে ডা. একিউএম বদরূদ্দোজা চৌধুরী সাহেব রাষ্ট্রপতি ছিলেন তিনিও বলেছেন, ক্ষমতার ভারসাম্য দরকার। এখন আব্দুল হামিদ খান সাহেব আছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে, তিনিও বলছেন, ফিতা কাটা ছাড়া তার অন্য কোনো কাজ নেই। এর মানে ক্ষমতায় ভারসাম্য আনার বিষয়টি অনুভূত হচ্ছে। কিন্তু যখন এমন অনুভূত হয় সেটাকে যদি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় নিয়ে আসেন তাহলে আপনাকে কিন্তু একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা জনগণের কাছে উপস্থাপণ করতে হবে। সেটি হলো, আপনি কীভাবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনবেন। আমি মনে করি, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীরা যারা বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতায় ছিলেন, তারা যদি গণতন্ত্রকে মুল্যবোধের জায়গায় রেখে কাজ করতেন তাহলে এই প্রশ্নটি এখন আসত না। বিশ্বের অনেক দেশেই সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রধানমন্ত্রীর অঢেল ক্ষমতা আছে।

প্রশ্ন : বিএনপি বলছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর একক নির্বাহী ক্ষমতা সংসদীয় সরকারের আবরণে একটি স্বৈরাচারী একনায়কতান্ত্রিক শাসনের জন্ম দিয়েছে’। সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দও নানা সময়ে বলে এসেছে, সরকারে ও সংসদে প্রধানমন্ত্রীর অঢেল ক্ষমতার কারণে নানা সংকট দেখা দিচ্ছে ?

অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী : বাংলাদেশের পলিটিকস অব কালটিজম বা রাজনৈতিক সংস্কৃতি যেভাবে গড়ে উঠেছে, এতে আমি যদি আমার নেত্রীর সমালোচনা করি তাহলে হয়তো আগামী দিনে পদ-পদবি পাব না-এমন একটা ধারণা আছে। এটা অনেক ক্ষেত্রে সত্যও। কিন্তু এটা গণতন্ত্রের মূল্যবোধ না। গণতন্ত্র নামের যে মূল্যবোধ এর প্রথম কথাই হচ্ছে বিতর্ক। আপনি প্রধানমন্ত্রী, আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যে কোনো বিষয়ে বিতর্ক করার অধিকার রাখি। শুধু মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে না, এই বিতর্ক আমি সংসদেও করতে পারি। এই বিতর্কে যদি বিরোধী দল অংশ নিয়ে খুব ভালো একটা ইনপুট দেয় সেটাকে আমি সংযুক্ত করতে পারি। এটাই গণতন্ত্রের মুল্যবোধ, সৌন্দর্য। কিন্তু বাংলাদেশে যেটা হচ্ছে সেটা এক ধরনের পূজা করবার একটা ব্যাপার। অর্থাৎ যিনি দলের নেত্রী তিনি যদি প্রধানমন্ত্রী হন, তাকে পূজা করবার একটা ব্যাপার দেখা যায়। এক ধরনের আরাধনা- এর বাইরে যাওয়া যাবে না। নেত্রী যা বলবেন সেটাকে হ্যাঁ বলতে হবে, তিনি যদি না বলেন সেটাকে না বলতে হবে। ইস্যুটা হচ্ছে, আমাদের এখানে ’৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনের পর আামরা দল ব্যবস্থাকে পুনর্বিন্যাস করতে পারিনি। ১৯৮১ সালে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে এসেছেন তখন থেকে এখন পর্যন্ত তিনি কিন্তু আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। বিএনপির ক্ষেত্রে খালেদা জিয়াও একইভাবে আছেন। আপনি যখন সরকারে আছেন তখন যদি আপনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন তখন দলের দায়িত্ব অন্যজনকে দেন না। অথচ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান দেশের দায়িত্ব যখন নিয়েছিলেন তখন দলের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। আমাদের সংবিধানে সুস্পষ্ট লেখা আছে প্রধানমন্ত্রীর কী কী দায়িত্ব। এই জায়গায় যদি ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে চান তাহলে প্রধানমন্ত্রীকেই সেই দায়িত্ব নিতে হবে।দলগুলোর নিয়মিত কাউন্সিল হতে হবে। তৃণমূলের নেতাদের সামনে আসতে হবে।

প্রশ্ন : বিএনপি চেয়ারপার্সন রূপকল্পে ‘প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য’ আনার বিষয়টি তুলে ধরেছেন, কিন্তু দল হিসেবে বিএনপিতে ক্ষমতার ভারসাম্য কতটুকু আছে- এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ?

অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী : ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করেছে বিএনপি। কিন্তু দলটির স্থায়ী কমিটির অনেকেই এ বিষয়ে অন্ধকারে ছিলেন বলে জেনেছি। বিএনপি এখন পুরোটাই পরিচালিত হয় অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের দ্বারা। অথচ রাজনৈতিক দলগুলোতে নীতি নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখা উচিত নেতাদের। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা শুধু না, তৃণমূলের নেতাদের গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে হবে। আমি একটি নীতি তৈরি করলাম কেন্দ্রীয় অফিসে বসে, কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশ নিয়ে এটা হবে না। ভিশন-২০৩০ এর ক্ষেত্রে দেখা গেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় অনেক নেতাই বিষয়টি জানেই না। আমি দু’-একজনকে জিজ্ঞেসও করেছি বিষয়টি। তারা এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি। তাহলে দেখা যাচ্ছে, আপনি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য চাচ্ছেন কিন্তু নিজ দলেই ক্ষমতার ভারসাম্য রাখেননি। অবশ্য এটা শুধু বিএনপির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না, ক্যাডারভিত্তিক কিংবা বামপন্থি দলের বাইরে বেশিরভাগ বুর্জোয়া দলের চরিত্রই এমন।

প্রশ্ন : বিএনপির রূপকল্পে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বাধা তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের অঙ্গীকারও করা হয়েছে?

অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী : বিশেষ ক্ষমতা আইন এটা অনেক পুরনো কাসুন্দি। এ নিয়ে বহুবার কথা হয়েছে। কই বেগম খালেদা জিয়া তো তিনবার ক্ষমতায় ছিলেন তখন আইনটি তিনি বাতিল করেননি। আমি হলফ করে বলতে পারি আগামী দিনে ক্ষমতায় গেলেও তিনি এটা বাতিল করবেন না। আর ৫৭ ধারার কথা তিনি বলেছেন পত্রপত্রিকায় আলোচনা হচ্ছে দেখে। তিনি এ নিয়ে এখন বলেছেন, কিন্তু ক্ষমতায় গেলে ওটাই হবে শাসন করবার অন্যতম হাতিয়ার। এই জায়গাগুলোই আসলে প্রধানমন্ত্রীকে স্বৈরাচারী করে দিচ্ছে। সব নেত্রীই এমন কথা বলছেন, কখন বলছেন বিষয়টি বুঝতে হবে, তারা যখন ক্ষমতার বাইরে থাকছেন তখন এমন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। অথচ ক্ষমতায় গিয়ে এমন গণবিরোধী আইনগুলো তারা কেউই বাতিল করছেন না।

প্রশ্ন : রূপকল্পে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাসহ প্রশাসনিক নানা সংস্কারের কথা এসেছে? কিন্তু দলটি ক্ষমতায় গেলে তা কতটা বাস্তবায়ন হবে বলে মনে করেন ?

অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী : সংসদ থেকে শুরূ করে, পুলিশ-কারাগার নানা ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রস্তাব আছে বিএনপির রূপকল্পে।এটা ঠিক আছে। গণভোটকে ফিরিয়ে আনার কথাও বলেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন।কথাগুলো ভালো। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আমরা একটা পরিকল্পনা ঘোষণা করি, এর আলোকে জনগণ ভোট দেয়, দলগুলো জনগণের ভোট নিয়ে ক্ষমতায় যায়, কিন্তু এরপর যে পরিকল্পনা দিয়েছিল কর্মক্ষেত্রে তা বাস্তবায়ন করেন না। এই যে বৈপরিত্য সেটা কিন্তু বিএনপিকে কাটাতে হবে।

প্রশ্ন : নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার হোক বা না হোক আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়ার বিষয়ে আপনি কতটা নিশ্চিত?

অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী : রাজনীতির ছাত্র হিসেবে আমি যতটুকু বুঝি ঘোষিত রূপকল্প বিএনপির আগাম নির্বাচনী ইশতেহার। আপাতভাবে মনে হচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০১৯ এর পরিবর্তে একটু আগেও হয়ে যেতে পারে। কারণ দলগুলোর মধ্যে এরইমধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন জনসভার ভোট চাইছেন, সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদকের কথায়ও একই সুর। বিএনপিও এক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকতে চাইছে না। এ কথা সত্য যে বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। দলটির ভিশন-২০৩০ প্রমাণ করে বিএনপি আগামী নির্বাচনের জন্য খুব ভালোভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আপাতত রূপকল্পের মাধ্যমে বিএনপি রাজনীতিতে একটা ছোটখাটো নাড়াচাড়া দিয়েছে। এরপর দলটি স্থানীয় পর্যায়ে বা প্রান্তিক পর্যায়ে যাওয়া শুরু করবে। দল গোছানোর একটা প্রক্রিয়া শুরু করবে। তবে এটা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য একটা ভালো খবর যে সবাই নির্বাচনে আসবে।

এবিএন/সাদিক/জসিম/এসএ

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত