
ঢাকা, ১০ নভেম্বর, এবিনিউজ : বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে এবার নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি সিলেট সিক্সার্স। শেষ মুহূর্তে এসে বিপিএলে অন্তর্ভুক্তি, তাড়াহুড়ো করে দল গঠন আর দলে তারকা খেলোয়াড় অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় আসরের শুরুতে আন্ডারডগই ভাবা হয়েছিল দলটিকে। অথচ নিজেদের মাঠে স্বপ্নের মতোই শুরু করেছে সিক্সার্স। হ্যাটট্রিক জয়ে টেবিলের শীর্ষে তারা। বিপিএলে আসা, দল গঠন, শুরুর সাফল্য আর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন সিক্সার্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির ওবায়েদ।
দল গঠন সম্পর্কে পরিকল্পপনা কী ছিল?
ইয়াসির ওবায়েদ: আমরা এবারের নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি। আমাদের শুরুটা একটু দেরিতে হয়েছে। ফলে অনেক খেলোয়াড়, যাদের আমরা চেয়েছিলাম তাদের পাইনি। তারা অন্য দলে সাইন করে ফেলেছিল। বিদেশী খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা তারকা খেলোয়াড় দলে টানার চেয়ে একটা টিম গড়তে চেয়েছি। কিছু টি২০ স্পেশালিস্টকে দলে যুক্ত করি। আমাদের স্কোয়াডের সাইজও খুব বড় নয়। এ নিয়ে অনেক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। দলের তারকা খেলোয়াড় বেশি নেই কেন, এমন প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু আমাদের কথা হলো, আমাদের তারকা নেই, কিন্তু খেলোয়াড় আছে। তাদের ওপর বিশ্বাস রেখেছি।
নাসিরের ওপর আস্থা প্রসঙ্গে...
আমরা বিশ্বাস করি, নাসির কিছুটা আনলাকি। তার যা প্রতিভা বা সক্ষমতা, সেই অনুযায়ী সে মূল্যায়িত হয়নি। খেলায়াড় হিসেবে সে খুবই দক্ষ ও কার্যকর। সে টিমকে একত্রিত করতে পারে, উদ্বুদ্ধ করতে পারে। তার অভিজ্ঞতাও আছে। ঘরোয়া লিগে সে নেতৃত্বও দিয়েছে। আমাদের টিমে শ্রীলংকার অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গা আছে। তবু আমরা দেশের ভেতর থেকেই একজনকে অধিনায়ক করার সিদ্ধান্ত নিই এবং আমরা সবাই মিলে নাসিরকে নির্বাচন করি। নাসিরও এতে রাজি হয়।
শিরোপা জিততে কতটুকু আশাবাদী?
টুর্নামেন্ট মাত্র শুরু হলো। আমরা ভালো শুরু করেছি। তবে এখনই উচ্চাভিলাষী হতে চাই না। প্রথম টার্গেট হলো শেষ চারে যাওয়া। ধাপে ধাপে এগোতে চাই। ঢাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে। সবগুলো ম্যাচ যে জিতে যাব তা আমরাও আশা করি না, তবে সবসময় ভালো খেলতে চাই।
দল নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
তিন বছরের জন্য আমরা একসঙ্গে আছি। আগামী বছর হয়তো আমরা আরো গুছিয়ে মাঠে নামতে পারব। আমরা বুঝতে পারছি, আমাদের অনেক গ্যাপ রয়েছে। সামনে হয়তো এই গ্যাপগুলো থাকবে না। এ বছরের অভিজ্ঞতাটাও আগামী বছর কাজে লাগাতে চেষ্টা করব।
বিপিএলে আপনাদের যাত্রা প্রসঙ্গে...
গত বছর সিলেটের কোনো টিম ছিল না। সিলেট দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এখানে ক্রিকেটেরও অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এবারের বিপিএলে দর্শক উপস্থিতিই তার প্রমাণ। ফলে সিলেটের একটা টিম করার দাবি ছিল সাধারণ মানুষের। সে থেকেই সিলেটের টিম করার উদ্যোগ নেন আমাদের চেয়ারম্যানসহ অন্যরা এবং এটি যাতে সিলেটেরই দল হয়, সে চেষ্টাও ছিল। আগের বিপিএলে সিলেটের নামে যে টিম ছিল, তা সিলেটের মানুষের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু আমরা টিম করে প্রথমেই সিলেটে এসেছি। এখানে আমাদের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। লোগো উন্মোচন হয়েছে। সিলেটে পেসার হান্ট করেছি। সেখানে ওয়াকার ইউনুস এসেছেন। সিলেটের মানুষকে আমাদের সঙ্গে যুক্ত করতে চেয়েছি।
সিলেটের অনেকের মধ্যে আমাদের নিয়ে সমালোচনা ছিল, রাগ ছিল, ক্ষোভ ছিল। তবু আমরা তাদের সঙ্গে নিয়েই এগিয়েছি। তার প্রতিদানও পাচ্ছি। এখন সিলেটের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসছে। এখন এই টিমটি যাতে দীর্ঘমেয়াদি হয়, সে চেষ্টা আছে আমাদের।
দলের কাছে প্রত্যাশা...
দলের কাছে প্রত্যাশা, আমরা একটা ইউনিট হিসেবে খেলতে চাই। মানুষের মন জয় করতে চাই। অনেক সময় দেখা যায়, যে দল চ্যাম্পিয়ন হয়, সে দলের চেয়েও আরেকটি দল ভালো খেলে মানুষের মন জয় করে ফেলে। আমরা এবার প্রথম এসেছি। আমরা ভালো খেলতে চাই।
প্রথমবার এসেই এমন চমৎকার শুরু সম্পর্কে...
আমরা যখন টিম বানিয়েছি, তখন তারকা খেলোয়াড় নেয়ার চাইতে কার্যকর খেলোয়াড় নিতে চেয়েছি। ফলে যখন টিম বানিয়েছি, তখন আমাদের কখনই মনে হয়নি আমরা দুর্বল টিম বা মধ্যম সারির টিম। আমরা সবসময়ই সন্তুষ্ট ছিলাম। তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার সমন্বয় করতে চেয়েছি দলে। তবে অনেকেই হয়তো বেশি তারকা না থাকায় আমাদের নিয়ে খুব আশাবাদী ছিলেন না। তাদের বলেছি, আমাদের ওপর ভরসা রাখেন। আস্থা রাখেন। সৌজন্যে: বণিক বার্তা
এবিএন/ফরিদুজ্জামান/জসিম/এফডি