ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি, এবিনিউজ : ১৭ বছরের তরুণ এস.এম.মুসা ইব্রাহিম বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার ছোটবগী গ্রামে তার জন্ম। ২০১৫ সালে একাদশ শ্রেণীতে অধ্যায়নরত অবস্থায় যখন থাইল্যান্ড ও মালয়শিয়ার জঙ্গলে গণকবরের ঘটনা প্রকাশিত হয় তখন থেকেই এই নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি হাতে কলম তুলেন। পরিকল্পিত গণহত্যা, গণধর্ষন, গ্রেপ্তার, অত্যাচার, নির্যাতন, নিরাপত্তাহীন করুণার পাত্রের জীবন দাসত্বের বন্দী শিকল থেকে মুক্ত করতে এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি নিরলস এগিয়ে চলেছেন। বর্তমানে তিনি দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নরত।
আমরা জানি রোহিঙ্গা সমস্যা একটি আন্তর্জাতিক ইস্যু এর সাথে জড়িত বিভিন্ন দেশের স্বার্থ ও ধর্মের মতো বিষয় আপনি কেনো এতো বড় একটি উদ্যোগ নিলেন?
জবাবে তিনি বলেন, দেখুন- মহামানব ইব্রাহিম (আ) এর ঘটনা সবাই জেনে থাকবেন, তাকে যখন বাদশা নমরুদ উত্তপ্ত আগুনে ফেলেছিল, তখন একটি ছোট পাখি তার ঠোঁটে করে পানি নিয়ে আসতেছিল। তখন অন্য একটি পাখি ঐ ছোট পাখিটিকে প্রশ্ন করল হে ছোট পাখি তুমি কি মনে করেছো তোমার এই সামান্য পানিতে আগুন নিভে যাবে? ছোট পাখিটি জবাব দিল- আমার এ পানি দ্বারা আগুন নিভবে না তা আমিও জানি কিন্তু স্রষ্টা যদি পরকালে আমাকে জিজ্ঞেস করে হে পাখি আমার বন্ধু ইব্রাহিম যখন আগুনে পড়েছিল তখন তুমি কি করেছিলে? তখন আমি জবাব দিব ‘‘ হে স্রষ্টা আমার ক্ষমতানুযায়ী আমি চেষ্টা করেছি’’।
আজ অসহায় নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির মুখে হাসি ফুটাতে যে অর্থ, ক্ষমতা প্রয়োজন তার কোনটিই আমার কাছে নেই। আছে শুধু কলম, তাই কলম দিয়েই তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে লিখলাম।
আমি আহবান জানাই আজ যার ক্ষমতা আছে তিনি ক্ষমতা দিয়ে, যার অর্থ আছে তিনি অর্থ দিয়ে সর্বোপরি স্ব-স্ব স্থান থেকে সাধ্যনুযায়ী এগিয়ে আসুন তাহলেই সম্ভব তাদের নাগরিকত্বসহ সকল অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা, সম্ভব রাখাইনে বৌদ্ধ সম্প্রদায় ও মুসলিম সম্প্রদায় একসাখে একই তাবুর তলে শান্তিপূর্ণ বসবাস করা।
তিনি এবিনিউজ কে আরো জানান বইটি ইতিমধ্যে সর্বমহলে যেভাবে সাড়া পাচ্ছে তা আমাকে দৃঢ় আত্মবিশ্বাসী ও আশাবাদী করে তুলছে। বইটি পড়ে ডিপার্টমেন্টের এক শিক্ষক বলেন -বইটি সত্যিই অসাধারন, প্রশংসার দাবিদার। তুমি বইটাকে ইংরেজীতে অনুবাদ করার কাজ শুরু কর যাতে করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের অসহায়ের কথা আরো স্পষ্টভাবে জানার সুযোগ পায়। ফলে রোহিঙ্গাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন তোমার তা সার্থক হবে।
বইটি নিয়ে এখন আপনি কি স্বপ্ন দেখছেন জানতে চাইলে লেখক বলেন-আমি আশা করি বইটি অতি দ্রুত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যাবে যার মাধ্যমে তাদের নাগরিকত্ব সহ সকল অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে। ফলে আমার রোহিঙ্গা মা বোনদের চেহারায় কান্নার পরিবর্তে স্থান পাবে একরাশ শান্তির হাসি।
এবিএন/মোস্তাকিম ফারুকী/জসিম/নির্ঝর