![প্রাত্যহিক চাহিদা নিয়ে আর কত মুনাফাবাজি, কত দিন](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/01/25/mok_122444.jpg)
আহমদ রফিক, ২৫ জানুয়ারি, এবিনিউজ : বেশ কিছুদিন আগে চালের হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধি সমাজের সব শ্রেণিতে ক্ষোভ ও আলোড়ন সৃষ্টি করে। সেই ধারায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও বলেন ‘চাল নিয়ে চালবাজি’র কথা। কিন্তু ‘এহো বাহ্য’। তাঁর তির্যক মন্তব্যেও চালের দাম খুব একটা কমেনি। দেন-দরবার ও আলোচনার পর দাম কমে কেজিপ্রতি দুই টাকা। অথচ স্থিতিশীল অবস্থা থেকে হঠাৎ বৃদ্ধি ছিল ছয় থেকে আট টাকা প্রতি কেজিতে। তাহলে বিষয়টি কোথায় গিয়ে দাঁড়াল? কেজিতে চার থেকে ছয় টাকা লাভ থেকেই গেল। এখনো তা চলছে। বাধ্য হয়ে মানুষ তা মেনে নিয়েছে। প্রতিকারহীন এক পরাভবে।
এবারের কলামে লেখার ইচ্ছা ছিল পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ ও সবজির ক্রমবর্ধমান দাম নিয়ে, মুনাফাবাজির অপ্রতিরোধ্য শক্তি নিয়ে। কিন্তু মানুষের প্রতিদিনের চাহিদায় এক নম্বর তথা প্রথম ও প্রধান উপকরণ চাল, যা না হলে জীবনযাপন অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। চালের মূল্যবৃদ্ধি বাজারে স্থির হয়ে যাওয়ার পরও কেউ কেউ আপন দায়িত্ববোধ থেকে এ সম্পর্কে দৈনিকের পাতায় প্রতিবাদী কলাম লিখতে দ্বিধা করছেন না।
কেউ লিখছেন চালের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সমাজে হঠাৎ সৃষ্ট দারিদ্র্য বৃদ্ধির পরিসংখ্যান, যা বিদেশি জরিপে উঠে এসেছে। দেশের কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের বিচার-ব্যাখ্যায় প্রকাশ পেয়েছে সামাজিক অন্যায়ের দিকটি। সে অন্যায় লোভের-লাভের। এবং তা এতটাই ঊর্ধ্বমুখী যে একটি প্রতিবেদনে পড়তে হয়েছে, ‘চালের দাম বাড়িয়ে বৃহৎ ব্যবসায়ীদের মুনাফাবাজির সত্য হলো, ‘কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া’।
কি অবিশ্বাস্য নিষ্ঠুরতা! অথচ এর প্রতিকার নেই, প্রতিরোধ নেই। কেউ এগিয়ে আসেনি এ সামাজিক অন্যায়ের শাস্তি বিধানে। আসেনি এ কারণে যে মানবিক মূল্যবোধহীন এই সমাজ-শত্রুরা প্রবল প্রতাপশালী, প্রচণ্ড শক্তিমান। কে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে? আর বললেই তারা তা শুনবে কেন? রাষ্ট্রযন্ত্র এখানে অসহায় ভূমিকা পালন করছে। সত্যি কি তারা অসহায়? নাকি তা ইচ্ছাকৃত?
তাই চালের অস্বাভাবিক ও ষড়যন্ত্রমূলক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দেশি-বিদেশি লেখালেখি সত্ত্বেও প্রশাসন নীরব। অথচ বিস্ময়কর ঘটনা হলো, চাল নিয়ে চালবাজির ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক চাপের বাইরেও অন্য এক জরিপধৃত সত্য হলো, অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ গরিব হয়েছে। আরেক তথ্য হলো, এ মতামত নাকি আমাদের পরিকল্পনা কমিশনের এক বিশেষজ্ঞ সঠিক বলে মেনে নিয়েছেন।
তর্কচ্ছলে কেউ বলতে পারেন, ১৬-১৭ কোটি মানুষের দেশে পাঁচ লাখ লোকের দারিদ্র্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, এবং তা বলেছেনও দু-একজন। তাঁরা কিন্তু ভেবে দেখেননি, এ জরিপ সমাজের কত অংশকে নিয়ে পরিচালিত কিংবা তা কতটা তাত্ত্বিক, কতটা বাস্তব জীবনদুর্দশা ধারণ করছে। কারণ অস্বীকারের উপায় নেই যে আমাদের জানামতে বা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় এমন সত্যই প্রকাশ পেয়েছে যে সাধারণ মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত শ্রেণির প্রতিটি পরিবার চালের দীর্ঘস্থায়ী মূল্যবৃদ্ধির চাপে খাদ্য তালিকায় কাটাছেঁড়া করতে, প্রয়োজন কাটছাঁট করতে বাধ্য হয়েছেন। তাতে অপুষ্টির ও স্বাস্থ্যঝুঁকির সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সেদিকটা ভাবেননি, ভাবছেন না।
কেউ কেউ চালের মূল্যবৃদ্ধি জায়েজ করতে গিয়ে বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও শস্যহানির কারণ উল্লেখ করেছেন। কিন্তু উল্লেখ করেননি যে ওই হঠাৎ বৃদ্ধির সময়কার দুটি বিপরীত ঘটনার। প্রথমত, মোকামে চালের গুদামে যথেষ্ট চাল মজুদ থাকার বাস্তবতা, যা পত্রপত্রিকায় তথ্য-প্রমাণ হিসেবে প্রকাশ পেয়েছে সেই সময়েই।
দ্বিতীয়ত, সরকার চাল আমদানি সহজ করার লক্ষ্যে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিলেও আমদানিকারকরা সে সুযোগের খুব একটা সদ্ব্যবহার করেনি। তবু চাল আমদানি কিছুটা হয়েছে, এবং চাল মজুদে ব্যাপক ঘাটতির কোনো প্রমাণ নেই। তবু অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি কেন? দু-এক টাকা বৃদ্ধি মানুষ হয়তো হিসাবে আনে না। তাই বলে সংগত কারণ ছাড়া ছয়-আট টাকা মূল্যবৃদ্ধি কোনো হিসাবে মেলে না।
অর্থনীতিবিদরা তো স্বীকার করবেন, যেকোনো পণ্যের চাহিদামাফিক মজুদ বা সরবরাহ থাকলে মূল্যবৃদ্ধি দূরে থাক, মূল্যহাস পাওয়াই অর্থনীতির সত্য। কিন্তু বাংলাদেশের বাজার ও মুনাফাবাজ ব্যবসায়ীরা এসব সত্যের ধার ধারে না। তারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পণ্যের অস্বাভাবিক দাম বাড়ায়। কখনো পণ্যের সংকট ছাড়াই মূল্যবৃদ্ধির স্বেচ্ছাচারে জনসমষ্টির জন্য দুঃখ-কষ্ট তৈরি করে থাকে।
এ অমানবিক মুনাফাবাজি মানুষের প্রধান খাদ্য চাল নিয়ে, অথচ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নীরব। চালের দাম এখনো স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি। পুনরাবৃত্তি সত্ত্বেও কথাটা আবার বলতে হয়, মানুষ বাধ্য হয়ে তা মেনে নিয়েছে। কারণ পণ্যটি হলো চাল, বাঙালির খাদ্য তালিকায় প্রধান উপকরণ। সে ক্ষেত্রে অন্য খাদ্যে বাঙালি রাজি নয় (যেমন আলু বা গম), এমন উদাহরণ দেখা গেছে একাধিক ঘটনায়। দৈনন্দিন পারিবারিক খাদ্যমূল্যের বেশির ভাগ খরচ চালে। তাই নিয়ন্ত্রণহীন ব্যবসায়ীকুল চাল নিয়ে মুনাফাবাজি করবে না কেন?
এভাবে চাল নিয়ে মুনাফাবাজিতে যেমন বৃহৎ ব্যবসায়ীদের হাজার কোটি টাকার লাভ, তেমন লাভই নাকি মধ্যস্বত্বভোগীদের। বাজার নিয়ন্ত্রণে তাদের প্রভাবও কম নয়। শুনেছি, এবারকার নিয়ন্ত্রণহীন চালের বাজারে খুচরা ব্যবসায়ীরাও নাকি লাভবান হয়েছে। কৃষক এ লাভের অংশীদার নয়। হওয়ার কথাও নয়। বাংলাদেশের বাজার প্রকৃতপক্ষে মুনাফাবাজদের বাজার, যা তাদের দখলে। এ দেশের রাষ্ট্রপতি একবার দুঃখ করে বলেছিলেন, সংসদ ব্যবসায়ীদের দখলে। যে দেশের সংসদ তথা আইন প্রণয়ন সংস্থা ব্যবসায়ীদের দখলে থাকে, সে দেশের শাসন কি কখনো জনবান্ধব হতে পারে?
দুই.
তাই বছরের পর বছর দেখে আসছি, রমজান মাসসহ সময়ে-অসময়ে হঠাৎ হঠাৎ দৈনন্দিন চাহিদার কোনো কোনো পণ্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। দুই-তিন বছর ধরে দেখা যাচ্ছে মুনাফাবাজ ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজ-কাঁচা মরিচের মতো সাধারণ পণ্যের ওপর লোভাতুর দৃষ্টি। তাই গত বছরে দেখা গেছে, ২৫ টাকা কেজির কাঁচা মরিচের দাম আকাশছোঁয়ার মতো। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, কেজিপ্রতি কাঁচা মরিচ কিনতে হয়েছে প্রথমে ১০০ টাকা, মধ্যে ২০০ টাকা দরে। এখন দাম কমেও কাঁচা মরিচ খুচরা বাজারে ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচে দামের ঝাল নিয়ে সংবাদপত্রে সরস শিরোনাম লক্ষ করা যাচ্ছে।
কিন্তু তাতে কারো কোনো প্রকার মাথাব্যথা লক্ষ করা যাচ্ছে না। অবশ্য সংশ্লিষ্ট ক্ষমতাধর কর্তৃপক্ষের সম্পর্কেই ওপরের কথাগুলো বলেছি। বাংলাদেশের বাজার রাজনীতি, দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্য-সংস্কৃতির বড় সমস্যা হলো, সে কোনো যুক্তিসংগত নিয়মের অধীন নয়। এমনকি অর্থনীতির নিয়মও সে মানে না। সে বোঝে তার স্বার্থ আর স্বার্থনির্ভর নিয়মনীতি।
শাসনযন্ত্র তাকে ব্যাপক স্বাধীনতা দিয়ে রেখেছে। আর সে স্বাধীনতার কারণে সে তার নিজের মতো করে নিয়ম-নীতি তৈরি করে নিচ্ছে। বিষয়টি লক্ষ করার কারণেই হয়তো একটি দৈনিক পত্রিকায় এমন এক শিরোনাম : ‘চাল পেঁয়াজ সবজি পর্যাপ্ত, তবু বাজারে আগুন’। এ সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক বিবরণ নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ।
প্রায় প্রতিটি দৈনিক পত্রিকায় দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্যের অস্বাভাবিক দাম নিয়ে সমালোচনামূলক লেখালেখির পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক মহলে কিছুটা চাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে, নড়েচড়ে বসছে মন্ত্রিসভা। কারণটা অবশ্য স্বার্থনির্ভর। সামনে জাতীয় নির্বাচন, এ বছরের শেষ দিকে। এ সময়ে জনমনে অসন্তোষ কে চায়? অসন্তোষ থেকে সরকারবিরোধী প্রতিক্রিয়া ভোটের রাজনীতিতে কারো কাম্য হতে পারে না।
তাই চলছে খাদ্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা। বাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কথাবার্তা। সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাবে গত এক মাসে মোটা থেকে সরু চালের দাম, তথাকথিত মূল্য স্থিতিশীলতা নিয়েই বেড়েছে ২৩ থেকে ২৬ শতাংশ। কিন্তু গুরুতর বৃদ্ধি পেঁয়াজের। এরই মধ্যে হঠাৎই সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। যে ফুলকপির দাম কদিন আগেও ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা, তা আজ (১৯.১.২০১৮) ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজির মূল্যবৃদ্ধি প্রায় একই মাত্রায়। কুয়াশা, পরিবহন সমস্যা উপলক্ষ বা অজুহাত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এসবের প্রভাব দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। ‘তাই শিরোনাম দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে না পারায় অসন্তোষ শরিকদের।’ শেখ শহীদ থেকে দিলীপ বড়ুয়া প্রমুখ রাজনৈতিক নেতা খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির রাশ টানতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ রাজনৈতিক স্বার্থের গরজ বড় বালাই।
এর মধ্যেই আমাদের একাধিক লেখার মূল বক্তব্যের সমর্থনে সত্য প্রকাশ পেয়েছে সরকারি অপরাধ তদন্ত বিভাগের অনুসন্ধানে। নানা পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির নানা কারণ উল্লেখ করেও তাদের স্বীকার করতে হয়েছে যে পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে রয়েছে ব্যবসায়ীদের কারসাজি। আরো স্পষ্ট ভাষায় তাদের বক্তব্য হলো, ‘কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এক শ্রেণির ব্যবসায়ী পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মজুদও গড়ে তোলেন। মাঝখানে কয়েকটি স্তরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।’ তথ্য সিআইডির।
এজাতীয় একাধিক সংবাদ প্রতিবেদনের বিশদ বিবরণে না গিয়ে একটি কথাই বলতে চাই, সমাজে বা ব্যবসায়ীকুলের এজাতীয় দুর্নীতি নতুন কিছু নয়। বছরের পর বছর আমরা তা দেখে আসছি। খাদ্যপণ্য যেহেতু প্রতিদিন ব্যবহার্য স্পর্শকাতর উপাদান, তাই এগুলো নিয়ে প্রতিবছরই মুনাফাবাজির কারসাজি চলে আসছে, অথচ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অপকর্মে লিপ্ত অপরাধী ব্যক্তিরা শাস্তি পায় না।
বহুদিন পর দেখছি, পেঁয়াজ নামক খাদ্যপণ্যের আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির কারণে সিআইডির তদন্তে ‘কালো বিড়ালে’র অস্তিত্ব ধরা পড়েছে। সিআইডির ভাষ্যমতে, অপরাধীর কী শাস্তি হয় তা আমরা দেখতে আগ্রহী। কিন্তু সেই সঙ্গে প্রশ্ন, ২০০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচ নিয়ে তদন্ত হয়নি কেন? হলে এ ক্ষেত্রে অনেক রাঘব বোয়াল সিআইডির জালে ধরা পড়ত। যেমন ধরা পড়ত চাল নিয়ে কারসাজি করনেওয়ালা ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তেমন কোনো উদাহরণ দেখতে পাওয়া যায় না।
বাজার পরিস্থিতি, বাজার নিয়ন্ত্রণ, বিশেষভাবে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দুর্নীতিপরায়ণ ব্যবসায়ীকুলের কারসাজি, সর্বোপরি ব্যাংকিং খাত থেকে সমাজের সর্বস্তরে দুর্নীতির প্রাধান্য দেখে মনে প্রশ্ন জাগে, দেশটি কি ব্যবসায়ী-স্বার্থের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে! এর আগে তো একাধিকবার বাংলাদেশ চিহ্নিত হয়েছে দুর্নীতিপরায়ণ রাষ্ট হিসেবে।
এখন নয়, দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা বাজার-মুনাফাবাজির বিষয়টি যদি আন্তর্জাতিক মহল গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে; তাহলে ভবিষ্যতে তারা হয়তো বাংলাদেশকে চিহ্নিত করতে পারে অস্বাভাবিক মুনাফাবাজির রাষ্ট্র হিসেবে। তেমন কিছু ঘটার আগে অন্তত বাজার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সরকার গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করবে, এমন প্রত্যাশা আমাদের।
এর বড় কারণ অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে দুর্দশার শিকার মানুষের দুর্গতির স্তরবিন্যাস নিয়ে অনেক ভিন্নমত। কারো মতে, লাখ নয়, কোটি মানুষ মুনাফাবাজির শিকার। এক শিরোনামে ‘চড়া মূল্যের শিকার ১২ কোটি মানুষ’। ক্যাবের এ প্রতিবেদনে আরো প্রকাশ, ‘চড়া মূল্য খেয়ে ফেলছে উন্নয়নের সুফল।’ অন্যদিকে ‘বাজারে প্রতিযোগিতা নেই, অতিমুনাফা ও চাঁদাবাজি আছে’। পাঁচ লাখের দারিদ্র্য এখানে ১২ কোটিতে পরিণত।
ছবিটা পানির ওপর ভাসমান বরফখণ্ডের দৃশ্যমান অংশের মতো, বৃহৎ বাকি অংশ অপ্রকাশ্য। এবার এমন পরিস্থিতিতে ভাবা যেতে পারে বাংলাদেশে সাধারণ মানুষ, নিম্ন আয়ের মানুষ ও সুতার দুদিক মেলাতে না পারা মধ্যবিত্ত কেমন আছে। স্বভাবতই কালো বিড়াল কাহিনি তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে- এমনটিই স্বাভাবিক। (কালের কণ্ঠ)
লেখক : কবি, গবেষক, ভাষাসংগ্রামী