![রাজা ধোপাকে বরখাস্ত করে গাধাকে মন্ত্রী বানালেন](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/01/29/fazlul-haque_123233.jpg)
ফজলুল হক, ২৯ জানুয়ারি, এবিনিউজ : দৈনিক আজাদী পত্রিকা যারা পড়েন, তারা গুনী জ্ঞানী মানুষ। ভাল মানুষেরাই পত্রিকা পড়েন। আপনাদের ইশারায় কিছু বললে– আপনারা বুঝবেন। পত্রিকার জন্য লেখার আগে ভালভাবে প্ল্যান করে নিই। এটা আমার দীর্ঘ দিনের অভ্যাস। দৈনিক আজাদীর জন্য এবারের লেখা লিখব, অর্থনৈতিক বৈষম্যকে বিষয়বস্তু করে– এমনটাই প্ল্যান ছিল। সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। প্ল্যান একটু বদলাতে হয়েছে। ই– কমার্সের ধারণা যখন আবছা আবছাভাবে আমাদের কাছে আসে, তখন আমার খুব আগ্রহ হয়, ই– কমার্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে। ইলেক্ট্রনিক্স কমার্স এবং ডিজিটাল কমার্স (ডি–কমার্স) এখন সবার নখ দর্পণে, সবাই কম বেশী জানে, এটা প্রযুক্তিগত এডভান্সমেন্টের জন্য সম্ভব হচ্ছে। তখন কিন্তু প্রযুক্তির এত আপডেটেড ভার্সন, এত এত ডিজিটাল কনটেন্ট আমাদের হাতে আসেনি। এই শতকের প্রথম দশকের মাঝামাঝিতে আমার বই “ডিজিটাল বাংলাদেশ” প্রকাশ করে শৈলী প্রকাশন। এটা বোঝানোর জন্য কথাটা বললাম যে, ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড– এ আনাগোনা আমার আগে থেকেই আছে। ই–কমার্সের সে জায়গাতে ব্যবসা এখন বসে নেই। এত অগ্রগতি প্রযুক্তির জগতে হচ্ছে, মানুষ কল্পনাই করতে পারবেনা। আমরাও পারছিনা। এখন ইউরোপের কোন কোন দেশে “বসলেস অফিস” কনসেপ্ট বাস্তবায়িত হয়েছে। অফিস আছে, কোন ম্যানেজার বা সিইও নাই। অফিস কর্মীরা সবাই দায়িত্বশীল। তাদের পাহারা দিতে হয়না। তারা সেলফ মোটিভেটেড। প্রযুক্তি অনেকটা নির্বাহীর অভাব পূরণ করে। এখন শপিং ব্যবস্থা আগাগোড়া উল্টে গেছে। এখন– দোকান আছে, দোকানদার নাই। সাধারন সাদামাটা মানুষ শুনলে বিশ্বাস করবেনা। এই দোকানটা অন্য রকম, যখন ঢুকবেন টের পাবেন। দেশ আর বিদেশ– এখন সব একাকার। “আমাজন গো”– এটা একটি ক্যাশিয়ার বিহীন দোকানের নাম। আমাজনের এই দোকানে ঢুকতে চাইলে স্মার্টফোনে থাকতে হবে প্রতিষ্ঠানটির অ্যাপ। ঢোকার সময়ে আপনি বুঝতে পারবেন, দোকানটি অন্য রকম। সারি সারি দরজা পাতাল ট্রেনের স্টেশনের মতো। মানুষ বিহীন দোকানের ধারণা, এনেছে ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজন। ওয়াশিংটনের সিয়াটলে– মানুষবিহীন দোকান এখন কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। পাইলট বিহীন প্লেন, চালক বিহীন কার এখন নতুন এক পৃথিবী দেখছি আমরা। ক্রয় শেষে দোকান থেকে বেরিয়ে যান ক্রেতা। পকেটে হাত দেননা। ক্রেডিট কার্ডও না। টাকা ঠিকই কেটে নেয়া হয়। সিয়াটলে এই দোকান শুরু হয়েছে ২০১৮ এর ২২ জানুয়ারি থেকে। প্রযুক্তি চোখের আড়ালে লেনদেন সেরে নিচ্ছে। চেক আউটের প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়। কেনাকাটার সময় শপিং বাস্কেট লাগেনা। কার্টও লাগেনা। পণ্য সরাসরি আপনার শপিং ব্যাগে আপনি ঢোকাতে পারবেন। মানা নেই। তাক্ থেকে কোন পণ্য নামালে ক্রেতার স্মার্ট ফোন অ্যাপের ভার্চুয়াল শপিং কার্টে সে পণ্য যোগ হয়ে যায়। আবার যদি আপনি সে পণ্য তাকে রেখে দেন অ্যাপ থেকে তা মুছে যায়। যে দরজা দিয়ে ক্রেতা ঢোকেন, সেদিক দিয়েই, বেরিয়ে যেতে হবে। ঢোকার সময় স্মার্ট ফোনে থাকা আমাজন অ্যাপ স্ক্যান করতে হয় দরজায়। বেরিয়ে যাওয়ার সময় আবার দরজায় অ্যাপ্ স্ক্যান করলেই অ্যাপে যুক্ত ক্রেডিট কার্ড থেকে পণ্যের মূল্য কেটে রাখা হয়। আমাজন কর্তৃপক্ষ মেশিন লার্নিং এবং কম্পিউটার ভিশন প্রযুক্তি কাজে লাগিয়েছে। দোকান জুড়ে শত শত ক্ষুদে ক্যামেরা আছে। ক্যামেরায় পণ্য দেখেই কম্পিউটার ঠিক চিনে ফেলবে কোন পণ্যটি কেনা হচ্ছে এবং কোন্ ক্রেতা তা কিনছেন। আমাজনের এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়বে। হয়ত কোন এক সময়ে চাটগাঁইয়া কোন তরুণ বা তরুণী মেহেদীবাগে বা আগ্রাবাদে ক্যাশিয়ারবিহীন দোকান খুলে বসেছে। সে আমাজন প্রযুক্তি দেশে নিয়ে আসবে। দেশকে ডিজিটালাইজ করতে সরকারের ভূমিকার প্রয়োজন নাই। মাথাভারী প্রশাসন, আমলারা এ কাজ পারবেনা। গতানুগতিক পলিটিশিয়ানরা তো পারার প্রশ্নই আসেনা। আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে হয়, উনি ডিজিটালাইজেশনকে উনার রাজনৈতিক দর্শনের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তবে সরকার যদি ফেসিলিটেইট করে, প্রাইভেট সেক্টর অনেক কিছু করতে পারবে। আমি মনে করি, তরুণ তরুণীদের সুযোগ করে দিলে তারা প্রযুক্তি ট্রান্সফার করে নিয়ে আসবে। তারা আমাদের প্রয়োজন বুঝে তা এখানে ইনস্টল করবে। আপনারা ভেবে দেখুন, মোবাইল ফোন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জটিল অ্যাপ্ কি ভাবে অতি সাধারণ মানুষ অবলীলায় ব্যবহার করছে? করছেনা? ড্রাগ এডিক্টের পর্যায়ে চলে গেছে মোবাইল এডিকশন। স্মার্ট ফোন, এন্ড্রয়েট সেট এখন নাই কার কাছে? নতুন ধারার সাথে তাল মেলাতে পারে এমন নেতাদের সরকারে আনতে হবে।
প্রযুক্তি নিয়ে আসতে হলে এবং তা লাগসই ভাবে আমাদের শহরে প্রয়োগ করতে হলে তিনটি জিনিসের প্রয়োজন হবে, উদ্যোগ, দক্ষতা এবং পুঁজি। এটি করতে গেলে আমরা দেখতে পাই বৈষম্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সকল মানুষের উদ্যম সমান নয়। এখানে বৈষম্য দেখতে পাবেন। সকল মানুষের দক্ষতা সমান নয়। দক্ষতার বেলায় বৈষম্য। সকলের কাছে বিনিয়োগ করার মতো সমান পুঁজি নাই। বৈষম্যকে আপনি এড়িয়ে যেতে পারবেননা। অনেকে “বৈষম্যকে” রাজনৈতিক এজেন্ডা বানাতে চান। বৈষম্য রাজনৈতিক এজেন্ডা হতে পারেনা। গরীব মানুষের কথা বললে বেশী ভোট পাওয়া যায়। বৈষম্য– রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবে হটকেক। আমি মনে করি, বৈষম্য কমানো সকল সরকারের জন্য অতি পালনীয় কর্তব্য হওয়া উচিৎ। সকল রাজনৈতিক দলের নেতাদের উচিৎ– রাজনৈতিক ফায়দা লাভের আশায় নয়, অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া, শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া, দক্ষতা অর্জনে অসমর্থ এবং উদ্যোক্তা হতে না পারা মানুষের কথা ভাবা। যে সকল কারণে মানুষ বৈষম্য– আক্রান্ত হয়– সে সকল সীমাবদ্ধতা এড্রেস করা। রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন আনা সম্ভব। যখন রাজনীতিতে দৃশ্যমান কোন করণীয় ও পালনীয় থাকেনা, পরিমাপযোগ্য অবজেকটিভ থাকেনা, তখন রাজনীতি সুবিধাবাদীদের লুণ্ঠনের হাতিয়ারে পরিণত হয়। ষাটের দশকে আমাদের সামনে বিশাল এক রাজনৈতিক আদর্শ ছিল। সেটা ছিল স্বায়ত্তশাসন ও অর্থনৈতিক মুক্তি। যা পরে স্বাধীনতার স্পৃহায় পরিণত হয়। তখন যারা মরতে আগ্রহী তারাই রাজনীতিতে আসত। তখন রাজনীতি ছিল দুর্বৃত্ত খতম করার প্ল্যাটফরম। এখন রাজনীতি পরিণত হয়েছে দুর্বৃত্ত বানানোর প্ল্যাটফরমে। এখন ব্যক্তি বড়। দেশ ও আদর্শ পাদ প্রদীপের আড়ালে। ব্যক্তি পূজা এখন বড় রাজনীতি। এখন দূর্বৃত্তরা দলে ঢুকতে চায়। ক্ষমতা তাদের লক্ষ্য।
এখন যে ক্যাশিয়ারবিহীন দোকান, বসলেস অফিস, চালকবিহীন যানবাহন, এরকম অটোমেশনের জন্য কি আমরা প্রস্তুত? রাস্তায় দোতলা বাস যাচ্ছে, এক তরুণ দৌড়ে বাসে উঠে। নীচে সীট নাই। চলে যায় উপরের তলায়। হঠাৎ চোখ মুখ উল্টে দিয়ে সে পেছন ফিরে ছুটতে শুরু করে। নীচে নামে। বাস থেকে লাফিয়ে পড়ে রাস্তায়। হাত পা ভাঙে। হাসপাতালে নেয়া হয়। ডাক্তার বলে, চলন্ত বাস থেকে লাফ দিলে কেন? সে বলে, স্যার, ভয়ে লাফ দিয়েছি। ভয় কিসের? সে বলে, উপরে ড্রাইভার নাই। কিন্তু বাস চলছে।
এক পাঠক আমাকে ফোন করেছিলেন। বল্লেন, সভা সেমিনারে যান না কেন? বক্তব্য টক্তব্য দেন। আমরা শুনতে চাই। আমাকে লোকে চেনেননা। তাই সভা সেমিনারে আমন্ত্রণ করেন না। আমি বক্তৃতা দিতে পারিনা। অনেক বুদ্ধিজীবী সরকারের মন্ত্রীদের কাছাকাছি থাকতে “পদ” চান। আমি পদ চাইনা। কারো কাছাকাছি থাকতে চাইনা। যারা আমাকে ভালবাসে তাদের কাছাকাছি থাকতে চাই।আপনারা আমার লেখা পড়েন। আপনাদের কাছাকাছি থাকতে চাই। কিছু কথা ঘুরিয়ে বলতে হয়। ইন্ এ হিউমারাস ওয়ে। আমার কাছে অনেক জোকস এর বই আছে। “ওয়ান থাউজেন্ড এন্ড ওয়ান জোকস”– অন্যতম। “লাফটার দ্যা বেস্ট মেডিসিন”– অনুসরণ করলে অনেক জোকস পাবেন। আমার নানা ইউসুফ চৌধুরী আমাকে রিডার্স ডাইজেষ্ট এর হাজার হাজার কপি দিয়ে গেছেন। ইন্টারনেটে এখন জোকস– এর বন্যা। রিডার্স ডাইজেষ্টের “লাফটার দ্যা বেস্ট মেডিসিন”– আমার প্রিয়। আব্রাহাম লিংকন এবং চার্চিল সম্পর্কে আপনারা সবাই জানেন। হেড অফ স্টেট বা হেড অফ গভর্নমেন্টকে আমরা স্বল্প বেতনের মাষ্টাররা সলা পরামর্শ দিতে পারিনা। দিতে চাইলে এই দুই রাষ্ট্র নায়কের রেফারেন্সে দুই এক কথা বলতে পারি। আমি থাউজেন্ড পারসেন্ট নিশ্চিত যে আমার এই “পরামর্শ” সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যাবেনা। দেশে হাজার হাজার পত্রিকা আর লক্ষ লক্ষ লেখক, কার লেখা কে পড়ে? আমি তো গাফ্ফার চৌধুরী বা জহুর হোসেন চৌধুরী নই। চার্চিলকে বলা হয়েছিল, গণতন্ত্রের সীমাবদ্ধতা নাই? চার্চিল বললেন, আমি বিলকুল গণতন্ত্রের পক্ষে না, সেটা পছন্দও করিনা। কিন্তু আপনি আমাকে তার চাইতে ভাল একটি ব্যবস্থা কি এনে দিতে পারবেন? (আপনারা কেউ পারবেন?)
আমেরিকায় গৃহযুদ্ধের কথা আপনারা জানেন। গৃহযুদ্ধের পর আব্রাহাম লিংকন সদ্য যুদ্ধোত্তর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। দলে দলে– দলের লোক উনার কাছে আসতে লাগল। আমরা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি। প্রাণ দিয়েছি। স্বার্থত্যাগ করেছি। আমরা স্বাধীনতা যোদ্ধা। পদ চাই, আমাদের মূল্যায়ন করুন। আব্রাহাম লিংকন বল্লেন, গল্পটা শোন। এক রাজা যাবেন শিকারে। মন্ত্রীকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, আজকের আবহাওয়া কেমন? পথে ঝড় বৃষ্টির কবলে পড়বোনা তো? মন্ত্রী বললেন, জাহাপনা, আবহাওয়া চমৎকার। না না ঝড়বৃষ্টি হবেনা। দুনিয়ার বাদশাহ্ আপনি, ঝড় বৃষ্টিও এটা বোঝে। কিছুদূর যাওয়ার পর এক ধোপার সাথে দেখা। ধোপা বল্ল, রাজা মহাশয়, সামনে ঝড় বৃষ্টি হবে। রাজা এগুলেন ঝড় বৃষ্টির কবলে পড়লেন। ভিজে একাকার হলেন। মন্ত্রীকে বরখাস্ত করলেন। প্রধান উজিরের পদে বসালেন ধোপাকে। ধোপা বলল, রাজা মহাশয় যখন বৃষ্টি হয়, তখন আমার গাধার কান নড়ে। আমার গাধার কান নড়া দেখে, আমি বুঝেছিলাম আজ বৃষ্টি হবে। রাজা ধোপাকে বরখাস্ত করে গাধাকে প্রধানমন্ত্রী বানালেন। এবার রাজ্যের সব গাধা এলো, রাজাকে ঘিরে ধরলো। রাজা হুজুর, আমরাও তো গাধা। আমাদেরকেও মন্ত্রী বানান। মহিউদ্দিন ভাই গত বছর খানেক সময় ধরে আমাকে বলেছিল, তুমি রাজনীতিতে আস। আমি বলেছি, এসে কি করব? মহিউদ্দিন ভাই বলেছিল, বুইজ্যা বুড়ি, টোনাটুনি ঘরে বসে বসে কি কর? আমি বলেছিলাম, রাজনীতিতে এসে কি করব? তিনি বলেছিলেন, তোমাদের মতো লোক সংসদে গেলে দেশ ভাল চলত। তুমি ছাত্র রাজনীতি কর নাই? আমি বলেছিলাম, মহিউদ্দিন ভাই, আমাকে পদে দিলে, বা মনোনয়ন দিলে বিপদে পড়বেন। মহিউদ্দিন বলেছিল, কেন? তোমার টাকা নাই বলে? আমি বলেছি, না ভাই, তা নয়। আমার মতো “রাজনৈতিক গাধাকে” পদ বা মনোনয়ন দিলে দেশের সব গাধা এসে যাবে, বলবে আমাদেরকে পদ দিন, মনোনয়ন দিন। এই দেশ কি গাধারা চালাবে? গাধাকে– গাধা থাকতে দাও।
আমি কলামিস্ট আনিসুল হকের একান্ত ভক্ত (আগে বহুবার বলেছি)। উনার একটি কৌতুক রচনা থেকে চুটকিটি নিয়েছি, ব্যবসায়ীরা লাভজনক ব্যবসা থেকে লাভ করে, অলাভজনক থেকেও লাভ করে। পলিটিক্স– এ ঢুকেও লাভবান হয়। কিভাবে হয়? ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। ব্যবসায়ী যেখানে যাক, সে লাভ ছাড়া আর কি করবে?
এক ব্যবসায়ী বলল, গাধা কিনব। প্রতিটি ১০ ডলার। গ্রামবাসী সব গাধা নিয়ে আসল। খুঁজে খুঁজে আনল। সেই ব্যবসায়ী সব গাধা কিনল। এরপর ব্যবসায়ী বলল, এখন গাধা নিয়ে আস– একটি ২০ ডলার করে কিনব। তন্ন তন্ন করে খুঁজে গ্রামবাসী আরো কিছু গাধা এনে হাজির করল। ব্যবসায়ী ২০ ডলার করে কিনল। ব্যবসায়ী বল্ল, আমি এখন এক এক গাধা ৫০ ডলার করে কিনব। কিন্তু গ্রামে আর গাধা নাই। ব্যবসায়ী বলল, আমি একটু পাশের গ্রাম থেকে ঘুরে আসি। সে গেল। তার সহকারী বলল, কেউ কিনতে চাইলে আমি ৩৫ ডলার করে গাধা বেচব। গ্রামবাসী সোনাদানা ঘটি বাটি বিক্রি করে ৩৫ ডলার করে গাধা কিনল। ব্যবসায়ী ক্রেতার সহকারী পালিয়ে গেল। গাধা ক্রেতারূপী ব্যবসায়ী এবং তার সহকারী উধাও। ১০ ডলারে কেনা গাধা ৩৫ ডলারে বেচে তারা লাপাত্তা। তারা আর কখনো ফিরেনি।
মহিউদ্দিন ভাই আমাদের মাঝে নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয় জানেন, ব্যবসায়ীদের ট্যাকল করা কঠিন। তারা নিজের লাভ বোঝেন। আপনার প্রয়োজন হবে, এমন লোক, যে দেশের লাভ বুঝবে। মুনাফার সামনে দেশপ্রেম টেকে?
রাজনীতিতে এখন বার্নিং ইস্যু হলো, উদ্ভাবন, উন্নয়নকে কি ভাবে আপনি এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আর উন্নয়নের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে “বৈষম্য” বাড়ে, সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা। “গাধা” দের যদি পদে বসান সে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবেন কিভাবে? আমাদের মতো “বুদ্ধিজীবী গাধা”, “ব্যবসায়ী গাধা” আর স্বাধীনতা বিরোধী “হায়েনারা” আজ সরকারের পদের জন্য হন্যে হয়ে উঠেছে। “উদ্ভাবন,” “উন্নয়ন”, “বৈষম্য নিয়ন্ত্রণের”– মতো রাজনৈতিক ইস্যু ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে।
লেখক : কলামিস্ট, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ। অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
(সংগৃহীত)