![নরসিংদীতে ডিবি পরিচয়ে ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার ৭](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/01/31/narsingdi-photo--01_123615.jpg)
নরসিংদী, ৩১ জানুয়াুর, এবিনিউজ : নরসিংদীতে প্রবাসীর গাড়ীতে স্বর্ন ও নগদ টাকা ডাকাতির অভিযোগে রায়পুরা থানার দুই উপ-পরিদর্শক, দুই কন্সন্টেবলসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। আজ বুধবার দিনভর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির স্বর্নেল বার, নগদ টাকা ও একটি প্রাইভেটকার জদ্ধ করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন রায়পুরা থানার উপ পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন, উপ পরিদর্শক আজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম।
অন্যরা হলেন- নুরুজ্জামান মোল্লা, সাদেক মিয়া ও গাড়ী চালক নূর মোহাম্মদ। এর আগে রায়পুরা থানার উপ পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে ৭০ লক্ষ টাকা ডাকাতির অভিযোগ উঠে। যা তদন্তাধিন রয়েছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) সাইদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
অভিযোগে জানা গেছে, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার হাইরমারা গ্রামের বাসিন্দা, মালয়েশিয়া প্রবাসী মোঃ সোহেল মিয়া ২৬ জানুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যায় এয়ারপোর্ট থেকে একটি ভাড়া করা গাড়িতে করে স্বজন আব্দুল্লাহসহ বাড়ি ফিরছিলেন। পথে নরসিংদী সদর উপজেলার ঢাকা সিলেট মহাসড়কের সাহেপ্রতাব এলাকার এ ই সিএনজিতে পাম্পে গ্যাস নেয়ার জন্য চালক গাড়ি থামায়।
এসময় অপর একটি প্রাইভেটকারে যোগে আসা রায়পুরা থানার উপ পরিদর্শক সাখাওয়াত ও আজহার আলী সহ সঙ্গীয় ফোর্স ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের আটক করে নিয়ে যায়। পরে পুরানপাড়া ব্রিজ এলাকায় নিয়ে প্রবাসী সোহেলের নিকট থাকা দুইটি স্বর্নের বার , মোবাইল সেট ও নগদ টাকা লুট করে নেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে এমন ভয় দেখিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়।
পরে প্রবাসী সোহেলের আত্মীয় মোঃ শাহজাহান পুলিশ সুপারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সাইদুর রহমান, উপপরিদর্শক আব্দুল গাফ্ফার ও রুপম সরকার তদন্তে নামে। পরে তারা সিএনজি স্টেশনের সিসিটিভির ফুটেজে ডাকাতির সত্যতা পায়। ওই সময় সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায় রায়পুরা থানার এস আই সাখাওয়াত হোসেন, উপ পরিদর্শক আজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম ৪ পুলিশসহ অন্য তিনজন প্রবাসীদের আটক করে নিয়ে যায়।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমে পুলিশ এস আই সাখাওয়াত হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পরে তার দেয় তথ্যের ভিত্তিতে উপ পরিদর্শক আজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম, সাইদুল ইসলামকে আটক করা হয়। ওই সময় সাখাওয়াতের কাছ থেকে ডাকাতির ১৮হাজার টাকা,এস আই আজহারুল ইসলাম এর ট্রাঙ্ক থেকে স্বর্নের বার ও সাদেক মিয়ার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
মামলার বাদী শাহজাহান জানান, সোহেলকে বিমানবন্দর থেকে নিয়ে বাড়ি ফিরাররপথে পুলিশ এ ঘটনা ঘটায়। প্রবাসী সোহেলের কাছে অন্যান্য প্রবাসীরা মালামাল দিয়েছিল। পুলিশ সদস্যরা ওই সব মালামাল ছিনিয়ে নেয়। কাউকে জানালে ডাকাতি মামলায় ফাসিয়ে দেয়ার ভয় দেখান।
সম্প্রতি রায়পুরা থানা পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতা গুম ,গরু লুট, ডাকাতি ,অর্থের বিনিময়ে টেটাযুদ্ধের ইন্ধন যোগান সহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। গেল বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কোরবানী ঈদের আগে এস আই সাখাওয়াতের নেতৃত্বে মেঘনা নদীতে গরু ব্যাবসায়ীদের জিম্মি করে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা লুট করে নেয়ার অভিযোগ উঠে। ওই ঘটনায় রায়পুরা থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন প্রায় ৯ লক্ষ টাকা ও ২৫টি গরু জব্দের কথা স্বীকার করেছেন । বিষয়টি গনমাধ্যমে উঠে আসলে পুলিশের উর্ধতনকর্মকতারা তদন্তে নামে। এর কয়েক মাসের মধ্যেই পুনারায় তাদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমান সহ ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সাইদুর রহমান বলেন, সিসি টিভির ফুটেজ দেখে আমরা নিশ্চিত হয়েছি ডাকাতির সাথে রায়পুরা থানার উপ পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন, উপ পরিদর্শক আজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম জড়িত। পরে উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশে তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে শোপর্দ করা হয়।
এবিএন/সুমন রায়/জসিম/রাজ্জাক