![অমর একুশে গ্রন্থমেলার অষ্টম দিনে নতুন বই এসেছে ৬৪টি](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/02/08/g_125023.jpg)
ঢাকা, ০৮ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : আজ অমর একুশে গ্রন্থমেলার অষ্টম দিন। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ৬৪টি এবং প্রথম সপ্তাহে (১-৭) বাংলা একাডেমির নিজস্ব স্টলে বিক্রির পরিমাণ ২১,০৩,২৬৪ টাকা।
বিকেল ৪:০০টা গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় এ বি এম হবিবুল্লাহ মমতাজুর রহমান তরফদার চৌধুরী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আকবর আলি খান এবং মেসবাহ কামাল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফিরোজ মাহমুদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক পারভীন হাসান।
এ বি এম হবিবুল্লাহ শীর্ষক প্রবন্ধে আকবর আলি খান বলেন, ড. হাবিবুল্লাহর গবেষণা থেকে দেখা যায় তুর্কি সুলতানরা ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। দিল্লির সুলতানদের সাফল্য সম্পর্কে তিনি যে চিত্র এঁকেছেন তা আজও প্রাসঙ্গিক। দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলো দিল্লির সুলতানদের রাষ্ট্রপরিচালনার অভিজ্ঞতা স্মরণ করে দেশ চালালে অনায়াসেই সুশাসনের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক ইতিহাসচর্চার প্রচ- হুমকির কাছে ড. হাবিবুল্লাহ আত্মসমর্পণ করেননি। তিনি প্রগতিশীল চেতনার আলোকবর্তিকাকে লালন ও রক্ষা করেছেন। তাঁর লেখা শুধু বিভাগপূর্ব ভারত বা পাকিস্তানি প্রজন্মের জন্যই প্রাসঙ্গিক নয়, তাঁর বক্তব্য আজকের প্রজন্মের জন্যও সমভাবে সত্য। ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে তিনি অজ্ঞানতার তিমিরকে চূর্ণ করেছেন।
মমতাজুর রহমান তরফদার শীর্ষক প্রবন্ধে মেসবাহ কামাল বলেন, ইতিহাসচর্চার গতানুগতিক ধারাকে অতিক্রম করে বিজ্ঞানসম্মত ও প্রগতিশীলতার আলোকে মধ্যযুগের ইতিহাসকে পুনঃগঠন করেছেন মমতাজুর রহমান তরফদার। মধ্যযুগের কাব্যচর্চা থেকে শুরু করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিচর্চাও ছিল তাঁর ইতিহাস-গবেষণার বিষয়বস্তু।
আলোচক ফিরোজ মাহমুদ বলেন, ইতিহাসচর্চায় বহুমাত্রিকতার ধারক ছিলেন এ বি এম হবিবুল্লাহ এবং মমতাজুর রহমান তরফদার। মধ্যযুগের ভারতীয় ইতিহাসকে প্রগতিশীল ও বিজ্ঞানসম্মতভাবে আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন তারা। ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসন আমলে সংঘটিত নানা সংস্কার ও পরিবর্তনকে অবলম্বন করেই ইতিহাস রচনায় তাঁরা নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও গবেষণা-পদ্ধতি প্রণয়ন করেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক পারভীন হাসান বলেন, এ বি এম হবিবুল্লাহ ও মমতাজুর রহমান তরফদার দু’জনই ইতিহাসচর্চায় যে প্রগতিশীল ধারার সৃষ্টি করেছেন তা অতুলনীয়। তাঁরা দেখিয়েছেন অতীতকে কেবল তথ্যমূলকভাবে উপস্থাপন করাই ইতিহাস নয় বরং বর্তমানের সাথে অতীতের ঘটনার প্রাসঙ্গিকতা সৃষ্টি করাই একজন ঐতিহাসিকের দায়িত্ব।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়, কান্তা নন্দী, মো. নূরুল ইসলাম, নবনীতা রায় বর্মণ, সঞ্জয় কুমার দাস। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বাবু জামান (তবলা), মো. মামুনুর রশিদ (বাঁশি), আনোয়ার সাহদাত রবিন (কী-বোর্ড)।
আগামীকালের অনুষ্ঠানসূচি :
আগামীকাল ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/২৭ মাঘ ১৪২৪ শুক্রবার। অমর একুশে গ্রন্থমেলার ৯ম দিন। মেলা চলবে সকাল ১১:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত।
শিশুপ্রহর : আগামীকাল সকাল ১১:০০টা থেকে বেলা ১:০০টা পর্যন্ত মেলায় শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়েছে।
শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা : অমর একুশে উদ্যাপনের অংশ হিসেবে সকাল ৮:৩০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করবেন চিত্রশিল্পী অধ্যাপক নিসার হোসেন।
বিকেল ৪:০০টা গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে রশীদ উদ্দিন উকিল মুন্সী বারী সিদ্দিকী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সুমনকুমার দাশ। আলোচনায় অংশ গ্রহণ করবেন কামালউদ্দিন কবির এবং সাইমন জাকারিয়া। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন নূরুল হক। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এবিএন/জসিম/রাজ্জাক/এআর