![নারী লেখকদের বই কেমন চলছে?](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/02/22/book-fair_127038.jpg)
ঢাকা, ২২ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : একুশে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি স্টলে বই দেখছিলেন একজন নারী। কথা প্রসঙ্গে জানালেন নিয়মিতই মেলায় আসেন এবং সেটা প্রতিবছরই।
নারী লেখকের বই তিনি কেনেন বা পড়েন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে নারী লেখকের বই কেনাও হয়না, পড়াও হয় না।
আরেকজন তরুণ বলেন, ‘সেলিনা হোসেন কিংবা তসলিমা নাসরিনের বই চোখে পড়ে বেশ কিছু প্রকাশনীতেই।’
তার সঙ্গে কথা বলার পর মেলার আরও ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল অসংখ্য মানুষ স্টলগুলোতে বই দেখছেন কিনছেন কিংবা দল বেঁধে আড্ডা দিচ্ছেন।
তারা কেউ বলেন তারা হুমায়ূন আহমেদ কিংবা জাফর ইকবালের বই পড়েন। কিন্তু নারী লেখকদের বিষয়ে তারা ততটা অবহিত হন।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর ৭২ সালেই গ্রন্থমেলার আয়োজন হয়েছিল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। তবে আজকের একুশে গ্রন্থমেলার আনুষ্ঠানিক সূচনা ১৯৮৪ সালে।
তার পর থেকে বইমেলার পরিসর বেড়ে একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে ছড়িয়ে পড়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। একই সঙ্গে বেড়েছে পাঠক ও লেখকের সংখ্যা।
যে পরিমাণ বই প্রকাশ হয় তার মধ্যে নারী লেখকদের বই আসলে কতটা থাকে?
প্রকাশক আদ্যিত অন্তর বলেন, ২৫ শতাংশের বেশি হবে না নারী লেখকদের বই। প্রবীণ যারা আছেন তাদের বইয়ের প্রতি পাঠকের আগ্রহ আগে থেকেই দেখা যায়। তবে তরুণরাও ভালো লিখছেন।
কোন ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে বেশি লিখেন নারী লেখকরা ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সিরিয়াস ধরনের লেখা খুব একটা পাইনা। গল্প কবিতা উপন্যাসই মেলায় বেশি বিক্রি হয়।’
১৯৭২ সালের অনানুষ্ঠানিক মেলায় ঠাঁই পেয়েছিলো ৩২টি বই। আর সেখানে ২০১৬ সালের বইমেলায় নতুন বই এসেছিলো প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। যেটি এবারের মেলায় ৪ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন প্রকাশকরা।
সাহিত্যিক বদরুন নাহার বলছেন নারী বা পুরুষ নয় বরং নতুন যে কারো জন্যই বই প্রকাশ খুব একটা সহজ নয়। তবে পাঠকের দিক থেকে আজকাল লেখক পুরুষ নাকি নারী তা খুব একটা প্রভাব ফেলে না।
তিনি বলেন, ‘প্রথম বইটা আমি নিজেই প্রকাশ করি। দ্বিতীয় বইটা নিয়ে একজন প্রকাশকের সাথে কথা হলেও অনেক বিষয়ে আপত্তি থাকায় বইটি নিয়ে আসি। তবে তৃতীয় বই থেকেই আমার বই প্রকাশকরা ছাপছেন এবং কিছু ক্ষেত্রে রয়্যালটিও পাচ্ছি।’
তবে সুপরিচিত লেখকদের বাইরে নতুন উঠে আসা নারীর বই প্রকাশে প্রকাশকদের মধ্যে অনীহা কাজ করে এমন অভিযোগ মানতে রাজী নন ঐতিহ্য প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন।
তিনি বলেন, পাণ্ডুলিপি পেলে তারা বই প্রকাশ করেন এবং নারী লেখকদের বই তাদের প্রকাশনা থেকে সারাবছরই বিক্রি হয়।
সাহিত্যিক ও প্রকাশক লিলি হক বলেন, পুরনো নারীদের মধ্যে অনেকেই জনপ্রিয়তা যেমন অর্জন করেছেন তেমনি তাদের পথ ধরে নারী লেখকদের সংখ্যাও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আর একই সাথে বিস্তৃত হচ্ছে নারীদের লেখার বিষয়বস্তুও।
লিলি হকের মতে, লেখালেখিতে নারী এগিয়ে আসা যত বাড়বে তেমনি করে তৈরি হবে পাঠকও আর তাতে করে আরও সমৃদ্ধ হবে বাংলা বইয়ের ভাণ্ডার।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
এবিএন/সাদিক/জসিম/এসএ