![চট্টগ্রামে ব্যাপক হারে বেড়েছে জাটকা নিধন: বাজারে ডিমওয়ালা মা মাছ](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/03/18/jatka-abn02_131036.jpg)
চট্টগ্রাম, ১৮ মার্চ, এবিনিউজ : চট্টগ্রামে ব্যাপক হারে বেড়েছে জাটকা নিধন। প্রশাসনের কঠোর নজরদারির মাঝেও থেমে নেই জাটকা নিধন ও বিক্রি। অভিযোগ উঠেছে প্রতিদিন রাতের আঁধারে ও ভোরে ঝাঁকে ঝাঁকে জাটকা ইলিশ বিকিকিনি হয় চর চাক্তাই এলাকায় স্থাপিত নতুন মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে।
স্থানীয় ব্যবসায়িদের অভিযোগ প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও সমিতির গুটি কয়েক নেতার যোগসাজশে এসব জাটকা মাছ বাজারে উঠে।
রবিবার সকালে সরেজমিনে বাজারে গিয়ে জাটকা ইলিশ ধরা পড়ে ক্যামেরায়। তবে জাটকা ইলিশ বিকিকিনির বিষয়টি অস্বিকার করে সোনালি যান্ত্রিক মৎস্য সমবায় সমিতির নেতারা। এমনিতেই স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে ব্যবসায়িক দ্বন্ধ, ইয়াবার চালান ও চাঁদাবাজিসহ নানান জটিলতায় ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে চর চাক্তাই মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে।
মৎস্য অধিদপ্তরের জাটকা সংরক্ষণ, জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান এবং গবেষণা প্রকল্পের জাটকা নিধন প্রতিরোধ প্রতিবেদন অনুযায়ী উপকুলীয় এলাকা চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, বরিশালসহ ২৩টি জেলা থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত শতাধিক টন জাটকা জব্দ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিধন হয়েছে অথচ জব্দ করা যায়নি, এমন জাটকার পরিমাণ হবে আরও অনেক বেশি।
সুত্র মতে নভেম্বর থেকে মে পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুম। এ সময়ে জাটকা নিধন বন্ধে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য বিভাগের।
র্যাব ৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মিমতানুর রহমান বলেন গত ১২ ডিসেম্বর একটি জাহাজ থেকে অভিযান চালিয়ে ২০টন আটক করা হয়। এসময় ২ ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ঝাটকা নিধন ও বিক্রি বন্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।
নগরীর বহদ্দারহাট কাঁচা বাজারে মাছের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক দোকানে বিভিন্ন আকৃতির ইলিশের পাশাপাশি সযত্নে সাজিয়ে রাখা হয়েছে কয়েকটি জাটকা ইলিশ। দরদাম বনিবনা হলে ভেতর থেকে এনে দেওয়া হচ্ছে জাটকা। প্রতি কেজি জাটকা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত। অনেক দোকানে দেখা গেছে, পেটে ডিমভর্তি মা মাছও।
জসিম উদ্দিন নামে বাজারের এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, 'বিত্তবানরা বড় সাইজের ইলিশ নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এসব ইলিশের দাম নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে। তারা কম টাকায় জাটকা জাতীয় ছোট মাছ কিনে ইলিমের স্বাদ গ্রহন করে থাকেন। এরকম সংখ্যাই বেশি। চাহিদা থাকায় আমরাও বিভিন্ন আড়তদারের কাছ থেকে এসব ঝাটকা সংগ্রহ করি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এবিএম মহসিন বলেন, বাজারে ইলিশের জোগান দিতে নির্বিচারে জাটকা নিধন করা হচ্ছে। এতে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হচ্ছে। এ ছাড়া জাটকা নিধন বন্ধ করা গেলে এসবই অল্প কিছুদিন পর বড় সাইজের সুস্বাদু ইলিশে পরিণত হবে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে।' লম্বায় ২৫ সেন্টিমিটারের কম এবং ওজনে ২৫০ গ্রামের কম হয়ে থাকলে সেটাকে জাটকা হিসেবে ধরে নিতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এবিএন/রাজীব সেন প্রিন্স/জসিম/জেডি