![বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলা এখন উন্নয়নশীল দেশ](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/03/19/mashiur_abnews_131098.jpg)
মশিউর রহমান, ১৯ মার্চ, এবিনিউজ : তিলে তিলে গড়া বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে এক সময় শকুনেরা ছিন্নভিন্ন করে ফেলেছিল। কথায় কথায় তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিল। করেছিল বাংলাদেশের ইতিহাস পরিবর্তনের ন্যাক্কারজনক অপচেষ্টা; যা অব্যাহত। শুধু অবমাননা নয় ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল বাঙালি জাতির অক্সিজেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যে অক্সিজেন না হলে এই দেশ হতো না, বাঙালি জাতি পেত না আজীবন স্থায়ী কোনো পরিচয়। মোড়লেরা করেছে কতো টিপ্পনী; বলেছে বাংলাদেশ 'তলাবিহীন ঝুড়ি'!
বন্দুকের নলে ক্ষমতায় এসে মেজর জিয়া দিয়েছে জাতিকে কলঙ্কের তকমা। বাঙালি জাতির স্রষ্টাকে খুনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকে খুনিকে করছে পুরষ্কৃত। তারই সুযোগ্য উত্তরসূরি খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে হাটলেন স্বৈরাচারি পথেই। দিলেন বাঙালি জাতিকে নতুন নতুন কলঙ্ক উপহার। এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তিনি করলেন না। নিজে করেছেন এবং অপরকে দিয়ে করিয়েছেন। দেশকে বিশ্বের কাছে পরিচিতি দিয়েছেন দুর্নীতিবাজ দেশ হিসেবে। উপহার হিসেবে দেশকে দিয়েছে বারবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন। সুদের নেশায় পাগল হয়ে ড. ইউনুস দেশকে করেছিল সুদের খোয়ার। সামরিক শাসন তো আছেই? অপরদিকে দুর্গন্ধে ভরা সুশীলরা খেতে ব্যস্ত থাকলো কাউয়া নামের কোকিলদের মতো।
এই অবস্থায় কে ধরবে দেশের হাল? কে বাঁচাবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন? কে দেখবে......? বঙ্গবন্ধু তো স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়ার। কিভাবে বঙ্গবন্ধুর এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে?
পিতা-মাতাসহ পুরো পরিবাকে হারিয়ে শোককে শক্তিতে পরিণত করে হাল ধরলেন পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে। শত ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে নিম্ন থেকে নিম্ম মধ্যম আয়ে উন্নীত করে মধ্যম আয়ের পথে করালেন অগ্রযাত্রা। শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বেই বাংলাদেশ মর্যাদাপূর্ণ দেশে পরিণত হয়েছে। দেশ এখন বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতি প্রবর্তনে শিক্ষা, কৃষিসহ সকল ক্ষেত্রে এসেছে যুগান্তকারী সাফল্য। ডিজিটালাইজেশনের ফলে প্রবৃদ্ধির হার, মাথাপিছু আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, রপ্তানি আয়সহ বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েই চলেছে। দারিদ্র্যের হারও নেমেছে তলানিতে।
মিথ্যা অভিযোগ তুলে পদ্মাসেতুর কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্বের বলে নিজস্ব অর্থায়নে করছে পদ্মাসেতু। জনকল্যাণমুখী চিন্তা-চেতনা, বিচক্ষণতা আর নেতৃত্বের দৃঢ়তা দিয়ে স্বপ্ন পূরণ করছে বঙ্গবন্ধুর। বিশ্ব পরিমন্ডলে আজ সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হয়। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র আর শত প্রতিকূলতার মধ্যেও কূটনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক উন্নয়নে সাফল্য দেখিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
ইতিমধ্যেই জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি দিয়েছে। মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা- এই তিনটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করেই জাতিসংঘ গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতিটি দেয় বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এই যোগ্যতা অর্জন করে। নিয়মানুযায়ী পর পর তিনবার এই ধারা অব্যাহতভাবে রাখতে পারলে ২০২৪ সালে উন্নয়নশীল দেশ হবে বাংলাদেশ। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়।
হাজারো সংকটের বেড়াজালে যখন বিশ্ব মোড়লেরা হিমশিম খাচ্ছিলেন, তখন দক্ষ নেতৃত্ব দিয়ে দেশীয় জ্বালাও-পোড়াওকারীদের ষড়যন্ত্র আর সকল সংকট মোকাবেলা করে মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা দূর করে দেশকে দিয়েছেন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা। তিনি বাংলাদেশের বাতিঘর জননেত্রী শেখ হাসিনা।
লেখক : সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কৃষি ও সমবায় উপ-কমিটি