ফজলুল হক, ২৭ মার্চ, এবিনিউজ : (এক)
স্বাধীন দেশ। একে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের মাথার উপর। ভাল ও সৃষ্টিশীল কাজ করে বিখ্যাত হওয়ার আকাঙক্ষা সব মানুষের মনের অবচেতন অংশে সুপ্ত থাকে। সবাই সব কিছু পায় না। স্কুল কলেজে কাজ করে জীবন কাটিয়ে দিয়েছি। শিক্ষকতার বাইরে অন্য কিছু করিনি। ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে চিন্তা ভাবনা করি। আমরা কেমন দেশ ও কেমন স্কুল কলেজ চালাই, সে ব্যাপারে আমাদের উচিৎ সত্য কথা বলা। আমরা সত্য বলি না। দামি মোড়কের ভেতরে কমদামি উপহারের মতো, আমরা কৌশল করি। চালাকি করে কথা বলি। ছাত্রছাত্রীরা কি করছে, এ ব্যাপারে আমাদের সত্য কথা বলা উচিৎ। এখন আমাদের শিশুদের কাঁধে বই এর বোঝা। আমাদের পাঠ্যক্রম বাস্তবতা থেকে দুরে। শিক্ষকরা লেকচারের নামে ক্লাসে একটা “ফিনিশ্ড প্রডাক্ট” উপস্থাপন করেন। আপনার কথা বাচ্চারা শুনছে কিনা, আপনি জানেন না। জোর করে খাওয়াতে চান। বাচ্চাদের স্বতস্ফুর্ততা নাই। ক্লাসে আমরা শিক্ষকরা বাচ্চাদের পার্টিসিপেশন নিশ্চিত করতে পারিনা। ছাত্রের অংশগ্রহণ ব্যতীত শিক্ষা পরিপূর্ণ হয়না। শিক্ষা মানুষকে কণ্ঠস্বর দেয়। আমাদের বেলায় সেটা হচ্ছে না। আমি তাকে সাইকেল চালানো শিখাব, তাই বাচ্চাকে আমি সাইকেল চালানোর ৫০ কৌশল নামক বই মুখস্থ করাচ্ছি। আমাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে বাস্তবতার প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি না।
যে বাচ্চাকে ক্লাসে আপনি পড়াচ্ছেন, তার মধ্যে যুক্তি কম কাজ করে, আবেগ অনেক বেশি। আমরা রসবোধসম্পন্ন সুশিক্ষিত মানুষ চাই। আমার এন্ড্রয়েড সেট আছে, ইন্টারনেট কানেকশন নাই। মানুষ আছে, শিক্ষা ও রসবোধ নাই, এটা হতে পারে না। যদি পারিবারিক বা পারিপার্শ্বিক কোন কারণে নবম দশম বা অন্য কোন শ্রেণির কোন বাচ্চা হতাশায় আক্রান্ত হয়, সে বারবার দুর্বল যুক্তি উপস্থাপন করবে। আগ্রাসী আচরণ করবে। ছাত্র রাজনীতিতে এটাই এখন হচ্ছে। তারা বেপরোয়া, তারা আগ্রাসী। আবেগ শক্তিশালী হয়ে উঠে। অনেক বাচ্চা তীব্র মনোকষ্টে ভোগে। এমন বাচ্চা আছে, মা বাবার সাথে রাগ করে। জোরে জোরে ঘরের দরজা বন্ধ করে। কারণে অকারণে টাকা চায়। মাঝে মাঝে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। উচ্চস্বরে ঔদ্ধ্যত্তপূর্ণ তর্ক করে। মা বাবাকে ধাক্কা দেয়। এই নেতিবাচক আচরণ শিক্ষকের নজরে পড়ে না তা নয়। এ যুগে এর চিকিৎসা দিতে কেউ এগোয় না। আমরা রোবট। বাচ্চাদের কিছু বলতে পারিনা। শিক্ষককে পিটিয়েছে। শিক্ষক বললেন, “ছাত্রলীগ” পিটিয়েছে। না, ওরা ছাত্রলীগ নয়। ছাত্রদলও নয়। সে আপনার ছাত্র। সে আপনার সন্তান। মা বাবা, শিক্ষক– আমরা কিছুই করতে পারছিনা। পাঁচ ছয় হাজার টাকা বেতন পান। ৭ জনের পরিবার। মাস শেষ হয়। বাবা ভাবেন, এই মাসে এক জোড়া নতুন জুতা কিনব। ছেলে বলে, আব্বু, আমার একটা ব্যাগ লাগবে। মেয়ে বলে, নতুন জুতা কিনব। জামা ও লাগবে। চওড়া হাসি দিয়ে বাবা রাজী হয়ে যান। বাবার আর জুতা কেনা হয়না। স্বাধীন দেশ। আমি চাই মানুষ হাসুক।
আবেগ– অবৈজ্ঞানিক ব্যাপার নয়। এর জন্য বাচ্চা দায়ী নয়। শরীরের বেশ কিছু রাসায়নিক উপাদান নিউরোট্রান্সমিটার আবেগের নানামুখী পরিবর্তন ঘটায়। ইস্ট্রোজেন, টেস্টোস্টেরন, হরমোন, এন্ডোরফিন, নরএপিনেফ্রিন ডোপামিন, সেরোটনিন– এরা বাচ্চাদের শরীর মনের পরিবর্তন ঘটায়। একটা তৃপ্ত জাতি গঠনে– শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সব বদলে ফেলতে হবে। এই সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে।
(দুই)
আমি গ্রামে থাকিনি। আমার জন্ম শহরে। গ্রামের মানুষ অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাদের সেনিটেশন নাই। মাঠে মল ত্যাগ করে। পুকুরে বা খালে গোসল করে। কোন কোন গ্রাম সমৃদ্ধ। সব গ্রামের খবর, সব ধরনের মানুষের খবর পাইনা। তবুও শুনুন খেটে খাওয়া মানুষের শক্তি অনেক। তারা প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে। প্রকৃতি তাদের সামর্থ্যবান করে। কৃত্রিমতা মানুষকে দুর্বল করে। “এনিমেল ফার্মে” বসবাস করার কোন অর্থ হয়না। ডায়াবেটিকস আক্রান্ত, কিডনী নষ্ট– শহরের মানুষ খুব আনন্দে নেই। আনন্দভরা জীবন খুঁজছি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এজন্য কিছু করার আছে। বঙ্গবন্ধু আমাদের আনন্দে ভরা জীবন দেয়ার স্বপ্ন দেখতেন।
(তিন)
আমাদের স্কুল জিপিএ– ৫ এর কারখানা। যে স্কুলে ফলাফলের চাইতে আনন্দটাই বড়, তেমন স্কুল খুঁজছি। ভারতের চেন্নাই (মাদ্রাজ)- এর এক গ্রামে নতুন ধরনের একটি স্কুল নির্মাণ করা হচ্ছে। এই স্কুলের ক্যাম্পাস হবে অন্য ধরণের। স্কুলটি বানাচ্ছেন বেসরকারি উদ্যোক্তাগণ। উদ্যোক্তারা ধনী ও সৃজনশীল। এর নাম রিভারবেন্ড স্কুল। আবাসিক স্কুল এটি। স্কুলের নক্শা করবেন দানিশ কুরানী। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কভিত্তিক স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান “কুরানী” এই স্কুলের দায়িত্ব নিয়েছে। বিখ্যাত কুরানী। দানিশ কুরানী মনে করেন, নকশা এমন ভাবে বানানো হবে, যেন শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়টি আনন্দের মেলা হয়ে উঠে। চট্টগ্রামের স্কুল কলেজ নিয়ে পত্রিকায় রিপোর্ট দেখি। হতাশা আছে। স্কুলের ছাত্ররা খুন অপহরণ করে। আমরা স্কুলগুলোকে আনন্দ নিকেতন বানাতে পারছি না। ছাত্ররা কথা শুনছে না। আমাদের বড় বড় শিল্পপতি আছেন, উনারা খুব ভাল। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভাল সম্পর্ক রাখেন। সরকার শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করছে। ধনী লোকেরা শিক্ষার সৃজনশীলতা বাড়াতে কিছু টাকা পয়সা ব্যয় করতে পারেন। স্বাধীন এই দেশ– তবুও সমাজ হয়ে উঠছে মুনাফা– ভিত্তিক। সবাই লাভ খোঁজে। সবাই জিততে চায়। আমাদের সমাজের “কল্যাণের” হাত অকেজো হয়ে গেছে। একটা দেশের ভেতরে “গরিব বাংলাদেশ” আর “ধনী বাংলাদেশ”– দুইটা দেশ থাকতে পারে না। প্রবৃদ্ধি বাড়ে বৈষম্য বাড়ে, এটাতো বৈষম্যের দেশ নয়। সব কাজ সরকারকে করতে বলে। কেন তোমরা ধনীরা সরকারের পাশে থাকবে না?
চেন্নাই শহর থেকে দূরে ভারতের ওই গ্রামটিতে যেতে হবে। অজ পাড়াগাঁ সেটি। সেখানে বানানো হচ্ছে ক্যাম্পাস, উদ্যোক্তারা এমন ভাবে স্কুল ক্যাম্পাস বানাতে চান, নকশায় পুরোপুরি গ্রামীণ পরিবেশ ফুটিয়ে তোলা হবে। গ্রামীণ পরিবেশ সমৃদ্ধ স্কুল বানানোর চেষ্টা হচ্ছে। আমি যে প্রাথমিক স্কুলে পড়েছি, সে স্কুলের ঘর মাটির দেয়াল এবং টিনের চালা। সামনে ফুলের বাগান। মাঝখানে প্রবেশ পথ। চারপাশে বাঁশের বেড়া। বাগানে নানা রকম ফুল। আমরা বাগান পরিচর্য্যা করতাম। চারপাশে বিস্তৃত ধানের ক্ষেত। সামনে দিঘি। শান বাঁধানো ঘাট। আমাদের স্কুল প্রকৃতির স্পর্শে টেটম্বুর ছিল। আমরা ক্লাস মিস করতাম না। শিক্ষকরা শাস্তি দিতেন। তবে নিষ্ঠুর ছিলেন না। তর্জন গর্জন ছিল। অমানবিকতা ছিলনা। আমাদের শিক্ষকদের শাসন ছিল মায়াবী শাসন। মায়ার জাল পাতা ছিল স্কুল গুলিতে।
সপ্তাহের বেশীর ভাগ সময় শিক্ষার্থীরা স্কুলে থাকে। আবাসিক স্কুলে পুরো সপ্তাহ থাকতে হয়। চেন্নাইয়ের স্কুলটি আবাসিক করা হবে। তাদের শহরে বাচ্চারা পড়তে গ্রামে যাবে। ছুটি পেলে যাবে নিজের বাড়ি। মার্কিন স্থপতি দানিশ কুরানী বলেছেন, নকশা প্রণয়নের সময় হার্বার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণার বিষয়বস্তু বিবেচনায় নিয়েছেন তারা। গবেষণা বিবেচনায় নিয়েছেন, কারণ গতানুগতিক শিক্ষার ধারা বদলাতে হবে। মানুষের পারষ্পরিক সম্পর্ক বিষয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। পারস্পরিক সম্পর্ক বিচার বিশ্লেষণ করে হার্বার্ডের গবেষণায় দেখানো হয়েছে, মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় হতে হবে।বন্ধন যেন শিথিল না হয়। সুদৃঢ় পারস্পরিক সম্পর্ক আনন্দময় জীবন উপহার দেয়। আমাদের সমাজে মানুষে মানুষে দৃঢ় সম্পর্ক আস্তে আস্তে শিথিল হয়ে যাচ্ছে। মানুষ মানুষকে শত্রু ভাবতেছে। স্বার্থের দন্ধে কামড়া কামড়ি করছে। হার্বার্ডের গবেষকগণ আট দশক ধরে মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক বিচার বিশ্লেষণ করে উনাদের গবেষণার ফল প্রকাশ করেছেন। আনন্দময় জীবনের খোঁজে আমাদের কাজ করা উচিৎ। সমাজের স্বার্থপরতা কমাতে আমরা আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারি।
হালিশহরে একটি ব্যতিক্রমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। সম্ভবত নাম “শিশুপল্লী”। বাহিরে থেকে দেখেছি। বাচ্চাদের সেখানে পারিবারিক পরিবেশে রাখা হয়। আমাকে একবার দাওয়াত করেছিলেন। আমি যেতে পারিনি। শুনেছি, একজন নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক এটি চালান। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর গড় পড়তা অবকাঠামো হচ্ছে, ওতে থাকে একটি প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবন, খেলার মাঠ। চেন্নাইয়ের নির্মাণাধীন স্কুলে গতানুগতিক দৃশ্যের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এর মূল ভবন থাকবে মাঝখানে। চারপাশে থাকবে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের আবাসিক ভবন। থাকবে প্রচুর কৃষি জমি। এর প্রতিষ্ঠাতারা হলেন, বিবেক, কিরন এবং ইন্দিরা বেড্ডি। মাদ্রাজের মানুষ সৃজনশীল চিন্তা করে। আমরা এই দেশ স্বাধীন করেছি। শিশু পাঠ্যবই মুখস্থ করুক, এটা আসল শিক্ষা নয়। তার পরিবর্তে শিশু হাতে কলমে শিখুক। লেখাপড়াকে আরো আনন্দময় করা যায়। দেশ স্বাধীন করেছি, আমাদের বাচ্চারা অতৃপ্ত কেন? আমরা শিক্ষকরা, আপনারা, আমরা সবাই মিলে কি করছি? ঘুষ খান, দুর্নীতি করেন– প্রভাব পড়ছে আপনাদের বাচ্চার উপর। দুর্নীতিবাজের ছেলে মানব সম্পদ হবে না। স্কুলে লেখাপড়া আনন্দময় হলে, খাদ্য উৎপাদন, গৃহায়ণ, বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের মতো বিষয়গুলি আনন্দের সাথে শিখবে বাচ্চারা। পড়াতে জোর জবরদস্তি লাগে না।
চেন্নাইয়ের বিদ্যালয়টির ক্যান্টিন থাকবে রেকর্ডিং ও নাচের স্টুডিওর সামনে। সফ্টওয়্যার তৈরি থেকে শুরু করে, রকেট নির্মাণ– সকল বিষয়ে পড়ানো হবে। যার যেটা পছন্দ হোক। এদের ছাত্রছাত্রী সব শেখার সুযোগ পাবে। (এই বিষয়ে দৈনিক প্রথম আলো ২০/০৩/১৮ তারিখে একটা নিবন্ধ আছে। ইন্টারন্যাশনাল স্কুল সম্পর্কে প্রচুর তথ্য ইন্টারনেটে পাবেন।) ঘুম মাখা ক্লান্ত শরীরের শিশু বই খাতার বোঝা বইছে, জিপিএ ৫ এর জন্য চাপে পড়েছে, নিরানন্দ– দেখতে ইচ্ছে করছে না। অনেকে এখন আমাদের শিক্ষামন্ত্রীকে দুষছেন। উনি দক্ষ মন্ত্রী। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সমস্যা, শিক্ষক ও মা বাবার দৃষ্টিভঙ্গি সেকেলে– এটা আমাদের বুঝতে হবে। আগা কাটলেও পশ্চাৎপদতার শেকড় থেকে যাবে। শিক্ষামন্ত্রী একা কিছু করতে পারবে না।
স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত হবে এমন উপ সম্পাদকীয় দৈনিক পত্রিকায় লেখার সময় আমি আমাদের বীরত্বের কাহিনী লিখতে পারতাম। কিন্তু স্বাধীনতাকে সুসংহত করার জন্য আমাদের সামনে কি করতে হবে– সেটা লেখা জরুরী বলে মনে করেছি। ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনা নিয়ে আমরা খুব কম কথাবার্তা বলি। আমি অনেক লিখেছি, আমার দুর্ভাগ্য– আমার লেখা কারো চোখে পড়ে না। আমরা চাইলে আমাদের এই স্বাধীন দেশটাকে একটা আনন্দ উচ্ছ্বাসের দেশে পরিণত করতে পারি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, এখন এটা ভিক্ষুকের দেশ নয়। এটা উন্নয়নশীল দেশ।
(চার)
(ইন্টারনেট থেকে পাওয়া সংবাদ), ভারতের এক গ্রামে এক গরীব তরুণ ভিন গাঁয়ের মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে এনেছে। ফুল শয্যার রাত শেষ। কাকডাকা ভোরে নববধূকে ডেকে তোলে। শ্বশুর বলে, যাও পাশে মাঠ। জলাশয়ও আছে। প্রাকৃতিক কর্ম সেরে আস। বধূ বাপের বাড়ির দিকে রওয়ানা দেয়। বলে, যতদিন বাথরুম না বানাও– আমি আসব না। ভারতের মতো দেশের এই অবস্থা। তো, আমি আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, উনি দেশের অবস্থা ভাল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
(পাঁচ)
আজ আমার মন খারাপ। শুধু ২৫ মার্চ রাতে আমাদের চোখের সামনে ২৫/৩০ হাজার মানুষকে মেরে ফেলেছে পাকিস্তানি সৈন্য। ৯ মাসে ৩০ লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। আমি দেশের কাছে চাইব কেন? আমার তো কিছু দেয়ার কথা। সবাই নিতে চান, দেশকে দেবে কে? কেউ পদক চান। কেউ সম্মাননা চান। কেউ তকমা চান। কেউ মন্ত্রিত্ব চান। কেউ ভাতা চান। কেউ বোনাস চান। তো দেশকে দেবে কে?
‘মুক্তিযুদ্ধে যুব সমাজের আকাঙক্ষা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবে। সেমিনারে সরকারের মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বর্তমান যুব সমাজ স্বপ্নহীন। মুক্তিযুদ্ধে যুবকদের যে আকাঙক্ষা ছিল, তা হয়নি। চারদিকে হতাশার সুর শোনা যাচ্ছে। আমরা মুক্তবাজার অর্থনীতির কাছে, আত্মসমর্পণ করেছি। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবীর বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আকাঙক্ষা পূরণ হয়নি। যে ভাবে আর্থসামাজিক ধারায় এগোচ্ছি, ঠিক একই ধারায় শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি।
শিক্ষার ব্যাপারে আমার ক্ষুদ্র চিন্তা ভাবনার কথা এই নিবন্ধে বলেছি। আমি আশাবাদী। আমার মনে হয়, আমরা সুন্দর আগামীর দেখা পাবো। দেশ ভাল চলছে।
লেখক : সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
(সংগৃহীত)