![বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস এবং দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবা](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/07/world-health-day_134042.jpg)
এম. এ. গফুর, ০৭ এপ্রিল, এবিনিউজ : প্রতি বছর ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হয়। দেখা যায় এ দিবসটিকে শুধুমাত্র সভা র্যালি সেমিনারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, প্রতি বছর তাই করা হয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ গরিব। দারিদ্র্যতার হাত ধরে এখানে রোগব্যাধি হানা দেয়। বর্তমানে আমাদের দেশের চিকিৎসা খাতের অবস্থা ভয়াবহ। হাসপাতালগুলোর পরিচালনার ব্যবস্থায় এমনি অবনতি ঘটেছে মানুষ আর আস্থা রাখতে পারছে না। এতদসত্ত্বেও হাসপাতালগুলোতে এত ভিড়। এর একটি কারণ সাধারণ মানুষের অক্ষমতা। নিতান্ত দায়ে না পড়লে মানুষ হাসপাতালে যাবে কেন? হাসপাতালসমূহ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হলেও এক শ্রেণির চিকিৎসক সমাজের অবহেলার কারণে হাসপাতালগুলো ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। এটা বাস্তব সত্য যে, আমাদের দেশের রোগাক্রান্ত মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। চিকিৎসা পরিবেশের যে হাল সভ্য সমাজে তা কল্পনা করা দুঃসাধ্য। বর্তমানে ডাক্তাররা সেবা ধর্মের নামে ব্যবসায়ী মনোবৃত্তিই প্রকাশ করে।
সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভালো চিকিৎসা এবং সেবা কোনটাই মেলে না। সেখানে কোন জবাবদিহিতা নেই। নেই কোন তদারকি, অব্যবস্থাপনা, ডাক্তার/নার্স স্বল্পতা ওষুধ ও পথ্য সংকট, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও লোকবলের অভাব, ডাক্তার কর্মচারীদের স্বেচ্ছাচারিতা, দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য নীতির অভাবে চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা ও জটিল দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার যথেষ্ট সুযোগ নেই এবং স্থানীয়ভাবে চিকিৎসার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বহু রোগী বিদেশে পাড়ি দেয়। বিদেশি চিকিৎসকরা কম সংখ্যক পরীক্ষা স্বল্প সময়ে নির্ভরযোগ্য রিপোর্ট ও ব্যবস্থাপত্র দিয়ে থাকেন বলে রোগীদের মনে আস্থা বেড়েছে।
জানা গেছে বিদেশি চিকিৎসকেরা তাদের ব্যবহারে বেশি আকৃষ্ট করেন বাংলাদেশের রোগীদের। কিন্তু আমাদের চিকিৎসকেরা রোগীদের প্রতি তেমন আন্তরিকতার মনোভাব দেখাতে পারেন না। এছাড়া আমাদের দেশে প্রায় কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব সততার সাথে পালন করেন না। তাদের অবহেলার কারণে অনেক মূল্যবান জীবন নষ্ট হয়ে যায়। সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগী এলে অনেক প্রশাসনিক জটিলতা ভোগ করতে হয়।
রোগীদের তাদের প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠাতে প্রলুব্ধ করে। হাসপাতালসমূহের উন্নতিকল্পে উপযুক্ত চিকিৎসক, নার্সদের দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন ও হাসপাতালগুলোতে যুগোপযোগী সরঞ্জাম সংযোজন করতে হবে। রোগীরা যাতে কথায় কথায় বিদেশগামী না হয় সেই পরিবেশ সৃষ্টির দায়িত্ব বহুলাংশে চিকিৎসকদের। চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবা নিয়ে নানা রকম দুর্নাম রয়েছে। তা ঘুচাতে হলে আর্ত সেবায় অধিকতর মানবিক আচরণ জরুরি।
(সংগৃহীত)