শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • অপরাধ
  • কয়রায় ভেজাল দুধ বিক্রির অভিযোগে দিশেহারা খামারীরা

কয়রায় ভেজাল দুধ বিক্রির অভিযোগে দিশেহারা খামারীরা

কয়রায় ভেজাল দুধ বিক্রির অভিযোগে দিশেহারা খামারীরা

কয়রা (খুলনা), ১০ এপ্রিল, এবিনিউজ : খুলনার কয়রায় ভেজাল দুধ বেচাবিক্রির প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এলাকার প্রকৃত দুগ্ধ খামারী সহ ক্রেতারা। ভেজাল সিন্ডিকেট চক্রের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেক খামারী তাদের পেশা পরিবর্তন করার চিন্তাভাবনা করেছেন।

একদিকে গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি অন্যদিকে দেদারসে ভেজাল দুধ বিক্রির কারণে প্রকৃত দুগ্ধ খামারীরা তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে এখানকার প্রায় দু’শ খামারী চরম হতাশার মধ্যে রয়েছেন।

স্থানীয় খামারীদের অভিযোগ পাইকগাছা, ঝিনাইদহ ও দাকোপের একটি অসাধু দুধ ব্যাবসায়ী চক্র কয়রা বাজারে দীর্ঘদিন ধরে কম মূল্যে পানি ও পাউডার মেশানো দুধ বিক্রি করে আর্থিক ফায়দা লুটে নিতে তৎপর রয়েছে। জানা গেছে চক্রটি দুধ দোহনের পর মেশিনের সাহায্যে দুধের ক্রিম তুলে নিয়ে দুধে পাউডার মিশিয়ে ঐ দুধ দীর্ঘ সময় সময় ভালো রাখতে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক ফরমালিন ব্যবহার করে থাকে।

ঐ দুধ সচরাচর ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। ভেজাল দুধ দিয়ে হোটেল রেস্তাঁরায় মিষ্টি ও মিষ্টান্ন জাতীয় খাবার তৈরী হচ্ছে যা খেয়ে মানুষ একদিকে যেমন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে অন্যদিকে খাদ্য উপাদানের অন্যতম সুষম খাদ্য খাঁটি দুধের খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার লোকজন।

উপজেলা প্রানিসম্পদ অফিস সুত্রে জানা যায়, কয়রা এলাকায় দু’শ খামার থেকে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হয়। দুধের ভেজাল প্রতিরোধ সম্পর্কে প্রাণী সম্পদ অফিসের সহকারী রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের অফিসে দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরন যন্ত্র নেই, দুধ পরীক্ষার ল্যাকটোমিটারও নেই, শুধুমাত্র একটি ট্রাভিস (গাভীর কৃত্রীম প্রজনন যন্ত্র বিশেষ) আছে। সেটা জনবল সংকটের কারনে অব্যহৃত অবস্থায় পড়ে আছে।

১নং কয়রা গ্রামের দুগ্ধ খামারী জামাল গাজী বলেন, তার খামারে ২৫টি গাভী প্রতিদিন ১শ’ থেকে ১২০ লিটার দুধ দেয়। প্রতিযোগিতা করে দুধ বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায় তা দিয়ে গো-খাদ্যের দাম উঠছে না। ফলে গাভীর চিকিৎসা, রক্ষনাবেক্ষন, কৃত্রিম প্রজননসহ গাভী পরিচর্যার খরচে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। ৪০ টাকা কেজির নিচে দুধ বিক্রি করা হলে খামারীদের লোকসান গুনতে হয় বলে তিনি জানান।

একই চিত্র তুলে ধরেন উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের আরো বেশ কয়েকজন দুগ্ধ খামারী।

খামারীদের এ সকল অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে জনবল সংকট ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবকে দায়ী করে উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ১১ জনের পরিবর্তে মাত্র ৪ জন স্টাফ দিয়ে অফিস সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দুধ পরীক্ষার জন্য ল্যাকটোমিটার যন্ত্র চাওয়া হয়েছে। এটি পাওয়া গেলে ভেজাল মেশানো দুধ সনাক্ত করা সম্ভব হবে যা ভেজাল প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিমুল কুমার সাহা বলেন, দুধে ভেজাল মেশানোর বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এবিএন/শাহীন/জসিম/এমসি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত