
ঢাকা, ২১ এপ্রিল, এবিনিউজ : ‘হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম অালমগীর বলেছেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের এই বক্তব্য ভয়ঙ্কর অশনি সংকেত।’
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অায়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, কারাগার খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে তার দায়-দ্বায়িত্ব পুরোটাই সরকারকে বহন করতে হবে। খালেদা জিয়াকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি না করে সোজা পথে তাকে মুক্তি দিয়ে সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করারও অাহ্বান জানান তিনি।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য কারাগারে ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে আমরা খবর পাচ্ছি। আর তাতে দলের পাশাপাশি সারা দেশের মানুষ উৎকণ্ঠিত।
তিনি বলেন, ‘আমরা সংবাদপত্র সূত্রে জানতে পেরেছি, সরকারের গঠিত একটি মেডিকেল টিম খালেদা জিয়াকে পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে প্রফেসর মালিহার রশীদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি মেডিকেল টিম তাকে দেখতে যান। আমরা আরো জানতে পেরেছি, তিনি বেশ কিছু রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে এক্যুইট রিউমেটিক আর্থারাইটিস তাকে বেশ কষ্ট দিচ্ছে। ডাক্তাররা অবিলম্বে খালেদা জিয়ার পছন্দনীয় ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য সুপারিশও করেছেন।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, গতকাল তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ আগে থেকে অনুমতি নিয়েও সাক্ষাৎ করতে পারেনি। এর আগে ১৮ এপ্রিল আমিসহ আমাদের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও নজরুল ইসলাম খানকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ সুস্পষ্টভাবে কোনো কারণ দেখানো হয়নি। জেলার ভেতর থেকে টেলিফোনের মাধ্যমে মির্জা আব্বাসকে জানানো হয়, ‘আজ সম্ভব হচ্ছে না।’ প্রায় ১০ দিন যাবৎ পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং দল দেশনেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পায়নি। এতে করে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, সরকারের মন্ত্রীদের এ বিষয়ে মন্তব্য এবং কটুক্তি সকল শিষ্টাচার বহির্ভূত এবং চক্রান্তের বহিঃপ্রকাশ। সরকার দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য বিষয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি করে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায়, বেগম জিয়াকে রাজনীতি থেকে এবং আসন্ন নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়। এত ভয় কেন?
সরকারকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সাহস আপনাদের নেই, আপনারা এখন জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। তাই বল প্রয়োগ করে দেশনেত্রীকে কারাগারে আটকে রেখে ২০১৪ সালের মতো একতরফা নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চান এবং ক্ষমতা দখল করে রাখতে চান। বাংলাদেশের সচেতন গণতন্ত্রকামী মানুষ আপনাদের সে সুযোগ দেবে না। এখনও সময় আছে অবিলম্বে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে তাকে তার পছন্দনীয় চিকিৎসক দ্বারা এবং হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন এবং দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা অাব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, অামীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ আরও অনেকে।
এবিএন/ফরিদুজ্জামান/জসিম/এফডি